কলকাতা, ৯ অক্টোবর, ( হি.স.): কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে দেখা করলেন বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ মুকুল রায়। রবিবার জেটলির বাসভবনে দু’জনের মধ্যে আধ ঘণ্টারও বেশি সময় কথাবার্তা হয়। তবে, বৈঠক শেষে দু’পক্ষই আলোচনার
বিষয়বস্তু সম্বন্ধে জানাতে অস্বীকার করেন। স্বয়ং মুকুল বলেছেন, ‘দেখা করেছি । এর বেশি
কিছু বলার নেই’। তবে ,মুকুল বা জেটলি মুখ খুলতে না চাইলেও রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের মতে, এই সাক্ষাৎকারের পর প্রাক্তন তৃণমূল নেতার বি জে পি-তে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল হল । গতকাল অবশ্য মুকুল রায় কোথায় যাবেন , বি জে পি না পৃথক দল, সেই বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু জানান নি ।
এই পরিস্থিতিতে জেটলির সঙ্গে মুকুলের বৈঠক যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে । কারণ, কিছুদিন আগে জেটলির সঙ্গে প্রাতরাশ বৈঠকে মিলিত হওয়ার পরই তৃণমূল নেতৃত্বের চক্ষুশূল হয়েছিলেন মুকুল রায় । যদিও সেই সময় মুকুল সাফাই দিয়েছিলেন যে, এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারীকরণ রুখতেই তিনি জেটলির সঙ্গে দেখা করেছিলেন । কিন্তু সেই সাফাই তৃণমূলের সঙ্গে মুকুলের সম্পর্কের অবনতি আটকাতে পারেনি । যার পরিণতিতে দল থেকে বহিষ্কৃত হতে হয়েছে তাঁকে । তাই, রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আগামী দিনে জাতীয় এবং রাজ্য রাজনীতিতে মুকুলের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়েই আলোচনা হয়েছে দু’জনের মধ্যে।
কিন্তু জেটলির সঙ্গে সাক্ষাতের ফলেই যে মুকুলের বি জে পি-তে যোগদানের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে গেল, এমনটা কিন্তু বলা যাচ্ছে না । কারণ, মুকুলের সঙ্গে জেটলির সম্পর্ক বরাবরই ভাল । মুকুল রায় বি জে পি-র অপর এক শীর্ষনেতা রাজনাথ সিংয়েরও ঘনিষ্ঠ। তাই এই দু’জনের সঙ্গে দেখা করতে মুকুলকে খুব একটা কাঠখড় পোড়াতে হয় না। কিন্তু এখন লক্ষণীয় বিষয় হল এই যে, জেটলির সঙ্গে দেখা করতে সক্ষম হলেও মুকুল কিন্তু এখনও বি জে পি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নি। আর এই মুহূর্তে বি জে পি-তে যে কোনও বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দু’জনের । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ। মুকুল বি জে পি সভাপতির সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছেন কি না জানতে চাইলে অমিত শাহের দফতর থেকে সরাসরি কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি । জানানো হয়েছে, আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত বি জে পি সভাপতির ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে । এই সময়ের মধ্যে কিন্তু কাউকেই দেখা করার জন্য সময় দিচ্ছেন না ।
রাজনৈতিক মহলের মতে, জেটলির সঙ্গে দেখা করে হয়ত বি জে পি-তে যোগদানের রাস্তা প্রশস্ত করলেন মুকুল। কিন্তু সিদ্ধান্তটা নেবেন অমিত শাহই ।
কিন্তু কী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন অমিত শাহ । বি জে পি-র এক অংশের মতে, পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত পৃথক দল গড়ে নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্ব বজায় রাখুন মুকুল । অন্য এক অংশের বক্তব্য, মুকুলকে দলে নিলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে যথেষ্টই লাভবান হবে বি জে পি । কারণ তৃণমূলের হয়ে প্রায় পর্দার পেছন থেকে নির্বাচন পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর । কিন্তু, বি জে পি-র শীর্ষ নেতৃত্ব এই মুহূর্তে বেশি ব্যস্ত গুজরাটের ভোট নিয়ে। তাই, পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে দল এখনও ততটা মাথা ঘামাচ্ছে না। সেই কারণে হয়তো দেরি হতে পারে মুকুলকে নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে।
2017-10-09

