নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ সেপ্ঢেম্বর ৷৷ রাজ্যে গত দু-দিনের প্রবল বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2017/09/Flood-300x200.jpg)
মূলত, আগরতলা এবং জিরানিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷ তাছাড়া দু-দিনের ভারি বর্ষণে পশ্চিম জেলার পাশাপাশি খোয়াই জেলায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ পশ্চিম জেলার সদর ও জিরানিয়াতে বন্যার প্রভাব পড়েছে৷ খোয়াই জেলার তেলিয়ামুড়া মহকুমায় কল্যাণপুর, মুঙ্গিয়াকামী এবং তেলিয়ামুড়ায় প্রবল বর্ষণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ জানা গেছে কল্যাণপুরে দুটি মাটির ঘর এবং মুঙ্গিয়াকামিতে একটি ও তেলিয়ামুড়ায় দুটি বাড়ী মারত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ এদিকে সদর ও জিরানীয়া মহকুমায় মোট ২৩টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে৷ এর মধ্যে আগরতলায় ২২টি এবং জিরানীয়া মহকুমায় পুরাতন আগরতলায় ১টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে৷ ২৩টি ত্রাণ শিবিরে মোট ১১১৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে৷ টানা বৃষ্টির ফলে গতকাল অর্থাৎ ৩ সেপ্ঢেম্বর সন্ধ্যা সাতটায় হাওড়া নদীর জলস্তর বেড়ে দাঁড়ায় ১০৩৪ মিটিার৷ হাওড়া নদীর বিপদসীমা হল ১০৫০ মিটার৷ জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় হাওড়া নদী ও কাটাখালের তীরবর্তী দক্ষিণ চন্দ্রপুর, বলদাখাল প্রভৃতি এলাকা জলমগ্ণ হয়ে পড়ে৷ একইভাবে পুর নিগম, সিভিল ডিফেন্স, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম, অগ্ণি নির্র্বপণ দফতর, এন ডি আর এফ এবং আরক্ষা বাহিনী জলমগ্ণ এলাকা থেকে দুর্গত মানুষদের উদ্ধারে তৎপর হয়ে ওঠে৷ বন্যাদুর্গত মানুষদের ত্রাণে এখন পর্যন্ত ২৩ টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে৷ ২২টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে আগরতলায় এবং একটি হয়েছে জিরানিয়া মহকুমায়৷ আজ সকালে মহাকরণে বন্যা পরিস্থিতি এবং ত্রাণ ব্যবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ এই সভায় নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী মানিক দে, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র ডপ্রফুল্লজিৎ সিনহা, মুখ্যসচিব সঞ্জীবরঞ্জন, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক এ কে শুক্লা, প্রধান সচিব সুশীল কুমার ডআর সারোয়াল ও মনোজ কুমার সচিব শান্তনু ও এস ভৌমিক, পশ্চিম জেলার জেলা শাসক ও পুলিশ সুপার উপস্থিত ছিলেন৷ এছাড়াও ছিলেন নগরোন্নয়ন, পূর্ত, রাজস্ব ও জলসম্পদ দফতরের পদস্থ আধিকারিকবৃন্দ৷ সভায় রাজস্ব দফতরের প্রদান সচিব সুশীল কুমার জানান, জলমগ্ণ এলাকা থেকে দুর্গত মানুষদের উদ্ধার করে ত্রানশিবিরে নিয়ে আসার জন্য সঙ্গে সঙ্গেই জেলা ও মহকুমা প্রশাসন, আগরতলা পুর নিগম, সিভিল ডিফেন্স, টিএসআর এর ২ ও ১০ নং ব্যাটেলিয়নের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম, অগ্ণি নির্র্বপণ দফতর, এন ডি আর এফ এবং আরক্ষা বাহিনী উদ্যোগ গ্রহণ করে৷ বন্যাকবলিত এলাকার মানুষদের উদ্ধারে ১৪টি নৌকা ব্যবহার করা হয়েছে৷ তিনি জানান, ২৩টি ত্রাণশিবিরগুলোতে পানীয়জলের জন্য দেওয়া হচ্ছে মিনারেল ওয়াটার৷ এছাড়াও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ এজন্য প্রয়োজনীয় ব্লিচিং পাউডার ও ফিনাইলের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ স্বাস্থ্য সচিব এস ভৌমিক জানান, ত্রাণশিবিরগুলোতে দিনরাত মিলিয়ে সর্বক্ষণের জন্য চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে ১০ টি মেডিক্যাল টিম তৈরি করা হয়েছে৷ মেডিক্যাল টিমগুলোতে চিকিৎসা কর্মীরা রয়েছেন৷ রয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধও৷ এছড়াও জিবি ও আই জি এম হাসপাতলে জরুরিভিত্তিতে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ আগরতলা পুর নিগমের চিপ এক্সিকিউটিভ অফিসার জানান, ত্রাণশিবিরগুলোর পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ আজ সকাল ১১ টা থেকে একটি জরুরি ভিত্তিতে কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে৷ রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক জানান, ত্রানশিবিরগুলোতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক জানান, ত্রাণশিবিরগুলোতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ বন্যাদুর্গত মানুষ যারা ত্রাণশিবিরে রয়েছেন বন্যার জন নেমে গেলে বাড়ি ফিরে যাবার পর তাদের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রয়োজনীয় অর্থসাহায্য করতে পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন৷ কারণ উপর্যুপরি বন্যার ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ এছাড়াও নদীর বাঁধ সুরক্ষায় দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও তিনি নিতেও তিনি নির্দেশ দিয়েছেন৷ এদিকে হাওড়া নদীর জনস্তর ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে৷ বিকেল ৫টায় জলস্তর রয়েছে ১০৩১ মিটার৷