পৃথক রাজ্যের ইস্যুতে দার্জিলিং আর ত্রিপুরার অবস্থা এক নয় ঃ আলুয়ালিয়া

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩১ আগস্ট ৷৷ পৃথক রাজ্য ইস্যুতে দার্জিলিং ও ত্রিপুরাকে এক আসনে রাখতে চাইছেন না কেন্দ্রীয় সংসদীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী এস

বৃহস্পতিবার আগরতলায় সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী সুরেন্দ্রজিৎ সিং আলুওয়ালিয়া (মাঝে)৷ ছবি নিজস্ব৷

এস আলুয়ালিয়া৷ তাঁর মতে, পূর্বোত্তরের প্রেক্ষাপটের সাথে দার্জিলিং ভিন্ন অবস্থানে রয়েছে৷ ষষ্ঠ তপশিল মোতাবেক আসামে কাউন্সিল গঠিত হয়েছে৷ ষষ্ঠ তপশিল দেশের অন্য কোন রাজ্যে নেই৷ এক্ষেত্রে ত্রিপুরায় পৃথক রাজ্যের দাবী উঠার পিছনে কারণ কি তার মূল্যায়ন প্রয়োজন৷
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই বক্তব্যে দার্জিলিং ও ত্রিপুরায় পৃথক রাজ্যের ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিগত অবস্থান অনেকটাই স্পষ্ট৷ বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে পৃথক রাজ্য ইস্যুতে তিনি বলেন, ত্রিপুরা কিংবা উত্তপূর্বঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে দেশের অন্যান্য এলাকার অনেক ফারাক রয়েছে৷ সংবিধানের ষষ্ঠ তফশিল শুধুমাত্র উত্তরপূর্বঞ্চলেই কার্যকর আছে৷ অন্যত্র নেই৷ ফলে দার্জিলিং এবং ত্রিপুরার অবস্থায় অনেক ফারাক রয়েছে৷ তিনি বলেন, আসামেও এডিসি গঠন করা হয়েছে৷ শান্তিপূর্ণ সহবস্থানের জন্য এই ব্যবস্থা যথেষ্ট উপযোগী৷ নিজেদের মধ্যে বিরোধের অবসান ঘটিয়ে নিজেদের সর্র্বঙ্গীন উন্নতিই মূল লক্ষ্য৷ আলুয়ালিয়া বলেন, পৃথক রাজ্যের দাবী নিয়ে আলোচনার আগে খতিয়ে দেখা উচিত এই দাবী উঠল কেন৷ দীর্ঘ বঞ্চনা, উপেক্ষা এবং অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই এই দাবী উঠেছে৷ এর জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার গুলো কোন ভাবেই তাদের দায় এড়াতে পারেনা৷ তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় সরকার পৃথক রাজ্যের দাবী নিয়ে যথেষ্ট সচেতন৷ কিন্তু তার চেয়েও বেশি সচেতন এই দাবী উত্থাপনের পেছনে কারণ সমূহকে নিয়ে৷
এদিকে, এক দিনের রাজ্য সফরে এসে আজ কেন্দ্রীয় সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী সুরেন্দ্রজিত সিং আলুয়ালিয়া রাজ্যের ক্ষমতাসীন সিপিআইএমের বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলোর কর্মীদের উপর দমন পীড়নের অভিযোগ এনে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গুড়িয়ে দেবার অভিযোগ করেন৷ তবে রাজ্যে বামেদের অন্তিম পর্যায় শুরু হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন৷ প্রদেশ বিজেপি কার্যালয়ের সংসদীয় বিষয়ক রাষ্ট্র মন্ত্রী সুরেন্দ্রজিত সিং আলুয়ালিয়া বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, নতুন ভারত গড়ার প্রচেষ্টায় আমরা সবাই মোদীর অধীনে তার মতাদর্শ অনুসরণ করে কাজ করছি এবং এটাকেই আমি সরাসরি রাজ্যবাসীর কাছে পৌঁছানোর জন্য নিয়ে এসেছি৷ ২০২২ সালের মদ্যে সশক্ত ভারত গঠনই এখন মূল লক্ষ্য৷ তিনি বলেন, এই রাজ্যে সিপিআইএম দেশে গঠনের কাজে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী হিসাবে কাজ করছে৷ কিন্তু তারা বুঝে গেছে আগামী নির্র্বচনে তাদের পতন আসন্ন৷ ফলে রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল বিজেপির উপর তারা আক্রমণ করছে৷ আক্রমণ দুই ধরনের হয়৷ সরাসরি হচ্ছে৷ আবার পুলিশ দিয়ে প্রতারণা করে৷ মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করেও হচ্ছে৷ আলুয়ালিয়া এও বলেন, সুনীল দেওধরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক মামলার লক্ষ্যবস্তুও একই৷
তিনি আরও বলেন৷ ত্রিপুরা সম্পর্কে এখন দেশবাসী আসল সত্য জানতে পারছে৷ এটাও সত্য মার্কসবাদী পার্টির শাসনে অন্য কারোর স্বাধীনতা থাকে না৷ অন্য কোনও দলকে সংগঠন বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়না৷ সিপিআইএম এর ঐতিহ্য সর্বত্রই একি ভাবে আছে৷ অন্যের কন্ঠস্বরকে রোধ করা এদের প্রধান কাজ৷ কেবল ত্রিপুরায়ই নয়, কমিউনিস্টরা পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরালায়ও এই কাজে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে৷ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে দমনকারি ব্যবস্থা ভেঙে পরেছে৷ এখানেও পতন অবশ্যম্ভাবী বুঝে নির্বাচনের আগে সিপিআইএমরা মানুষকে সর্বত্রই নির্বিাচরে আক্রমণ করতে শুরু করেছে৷ তিনি আরও বলেন, ত্রিপুরার মানুষ উন্নয়নের ছোঁয়াই পায় নি৷ কেন্দ্রীয় প্রকল্প গুলোর কি কাজ হচ্ছে তা সবাই জানে৷ আর দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে কোন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি রাজ্যে আসুক তাও চায়না৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের রাজ সফরে আসারও বিরোধী রাজ্য সরকার৷