২ মাসে ৪০০ সাপ ধরেছেন দুর্গাপুরের দেবাশিস মজুমদার

দুর্গাপুর, ২০ আগস্ট (হি.স.): ঘরে বসে যদি আচমকা ফোঁসফোঁস শোনেন, তাহলে তো রক্ত ঠাণ্ডা হয়ে যাবেই। কেননা সর্পভীতি নেই এমন মানুষ পাওয়াও বিরল। দুর্গাপুরের বাসিন্দা দেবাশিস মজুমদার একজন সর্পপ্রেমী মানুষ। সাপ নিয়েই তাঁর কাজকারবার। ঘরে সাপ ঢুকলে দুর্গাপুর ও সংলগ্ন এলাকার মানুষজন তলব করেন দেবাশিসবাবুকে। যতই বিষাক্ত হোক না কেন, দেবাশিসবাবু সেই সাপ ধরেন। তা ধরার পরে বনে ছেড়ে দেন।
এভাবে দেবাশিসবাবু দু্র্গাপুরের মানুষের কাছে এখন একজন ভরসা হয়ে উঠেছেন। নিরন্তর সাপ ধরার অভ্যাস তাঁর। দেবাশিসবাবু জানালেন, গত দুমাসে ৪০০টি বিষাক্ত সাপকে পাকড়েছেন লোকালয় থেকে। সে কেউটেই হোক কিংবা চন্দ্রবোড়া- সাপ ধরতে তাঁর ভয়ডর নেই। এভাবে বহু গৃহস্থকে আতঙ্কের হাত থেকে উদ্ধার করেছেন তিনি।
দুর্গাপুরের বনাধিকারিক মিলন মণ্ডল বললেন, একসময়ে একাএকাই সাপ ধরতেন তিনি। সেই সাপ ধরে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসতেন। তুলে রাখতেন সাপ ছাড়ার ছবি।
এখন একাজে কয়েকজন সহযোগী পেয়েছেন তিনি। তাঁরা স্থানীয় যুবক। সকলেই জীববিদ্যা নিয়ে লেখাপড়া করছেন। ফলে দেবাশিসবাবুর কাজটা গতি পেয়েছে।
দুর্গাপুরবাসীর ঘরে ঘরে দেবাশিসবাবু একজন পরিচিত মানুষ। ফোন করে ডাকলেই হাজির হবেন তিনি। তাঁর ভিজিটিং কার্ডে লেখা একটি লাইন – মরিতে চাহি না আমি সু্ন্দর ভুবনে।
গত ২৫ বছর ধরে একাজ করছেন তিনি। নিজে ১৭ বার সাপের কামড় খেয়েছেন। বেঁচেও গিয়েছেন। দেবাশিসবাবু সাপে কামড়ানো মানুষকে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে পরামর্শ দেন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার। এভাবে দিনের পর দিন কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়ে চলেছেন তিনি।