নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ মে৷৷ অসন্তুষ্টি নিঃসন্দেহে সিপিএমকে ভীষণ চিন্তায় ফেলেছে৷ তাই, বিধানসভা নির্বাচনের

আরো অনেক দিন বাকি থাকতেই এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিতে আহ্বান জানিয়েছে দল৷ ক্রমশ দলীয় সদস্যরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, তা সিপিএমের চিন্তা বাড়াচ্ছে৷ তার তথ্য উঠে এসেছে সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে৷
সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জানান, এবছর সভ্যপদ নবীকরণ হয়েছে ৯৪২৫৯ জনের৷ গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ২৯৩ শতাংশ৷ অর্থাৎ ২৭৬২ জন এবছর বেড়েছে৷ পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এবছর নানা কারণে ৪৫৫১ জন সভ্যপদ নবীকরণ করেননি৷ তাঁর বক্তব্য, কেউ কেউ পার্টির কর্মী হিসেবে থাকতে চাইছেন, কিন্তু সদস্য হিসেবে দায়িত্ব নিতে চাইছেন না৷ আবার অনেকে সময় মতো চাঁদা দেননি, তাই তাঁদের সভ্যপদ নবীকরণ হয়নি৷ কিন্তু, প্রশ্ণ হল সিপিএমের মতো শৃঙ্খলাপরায়ণ দলে সভ্যরা চাঁদা দিচ্ছেন না, এর পেছনে অন্য কোন কারণ রয়েছে কি? পাশাপাশি যাঁরা কর্মী হিসেবে থাকতে চাইছেন, কিন্তু দলের খাতায় নাম রাখতে চাইছেন না, এর পেছনে সিপিএমের উপর অসন্তুষ্টি কিনা, সেই প্রশ্ণও উঠেছে৷ যদি, অসন্তোষ মূল কারণ হয়ে থাকে, তাহলে নিঃসন্দেহে এই পরিস্থিতি সিপিএমকে চিন্তায় ফেলবে, সেটাই স্বাভাবিক বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ এর পেছনে যুক্তি, এবছর সভ্যপদ নবীকরণে বেড়েছে ২৭৬২ জন৷ কিন্তু, দলের খাতা থেকে নাম মুছে গেছে ৪৫৫১ জনের৷ এদিকে, ১৫৪ জনকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজনবাবু৷ বহিসৃকতরাও যে ইতিমধ্যে বামবিরোধী শিবিরে যোগ দিয়েছেন, তাও অস্বাভাবিক নয়৷ ফলে, এই পরিস্থিতি সিপিএম সহ বামেদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বলে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল৷
এদিন বিজনবাবু জানান, দু’দিনের সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে আসন্ন রাজনৈতিক সংগ্রাম মুখ্য আলোচ্য বিষয় ছিল৷ রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বিজেপি’র সাথে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছিলেন৷ আজ এক কদম এগিয়ে বিজনবাবু আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে রাজনৈতিক সংগ্রাম হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন৷ এর থেকে অনেকটাই স্পষ্ট যে, বিগত দিনে নির্বাচনগুলিতে বামেরা যেভাবে অনায়াসে জয়ী হয়েছেন, কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটবে৷ তাই তাঁদের ধারণা, সংগ্রাম করে জয় হাসিল করতে হবে, এমনটাই মনে করা হচ্ছে৷ এদিন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বলেন, বিভিন্ন মহকুমার রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বাম বিরোধী শক্তিকে পরাস্ত করে বামেদের জয়ের ব্যাপারে দল আত্মবিশ্বাসী৷ কারণ, বামফ্রন্ট এবং বিজেপি, এই দুটি শিবিরের মধ্যে লড়াই হবে৷ মাঝামাঝি যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা কি করবেন বলা মুশকিল৷ বিজনবাবু বলেন, বিজেপি কর্পোরেটদের স্বার্থরক্ষাকারী এবং সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টির প্রতিনিধি৷ তাই তিনি মনে করেন, বামেরা শান্তি, সম্প্রীতি এবং উন্নয়নের জন্য দীর্ঘকাল সামনে সারিতে থেকে লড়াই করছে, রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ এই শিবিরের প্রতি আস্থা প্রদর্শন করবেন৷

