অবৈধ সম্পর্কের জেরে পালাটানায় কুপিয়ে হত্যা এক ব্যক্তিকে, স্বীকারোক্তি ধৃত খুনীর

নিজস্ব প্রতিনিধি, উদয়পুর, ২২ মে৷৷ অবৈধ সম্পর্কের জেরে খুন হলেন এক ব্যক্তি৷ ঘটনাটি ঘটেছে গোমতী জেলার কাকড়াবন

ধৃত তপন পাল৷ ছবি নিজস্ব৷

থানার অধীন পূর্ব পালাটানার নয়াঘাট এলাকায়৷ মৃত ব্যক্তির নাম রঞ্জিত দাস৷ বয়স তেতাল্লিশ৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে৷ অন্যদিকে, খুনি তপন দাস (৩৮) উদয়পুর সিজেএম কোর্টে আত্মসমর্পণ করতে গেলে পুলিশ গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়৷ তপন দাস খুনের ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছে৷ মঙ্গলবার তাকে আদালতে সোপার্দ করা হবে বলে জানিয়েছে কাকড়াবন থানার পুলিশ৷
সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে, তপন দাস দীর্ঘদিন ধরেই সুযোগের সন্ধান করছিল রঞ্জিত দাসকে হত্যা করার৷ আর সেই সুযোগ মিলে যায় রবিবার রাতে৷ রঞ্জিত দাস স্থানীয় একটি বাজার থেকে বাইসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন৷ নয়াঘাট এলাকায় পৌঁছতেই তাকে রাস্তায় আটক করে তপন দাস৷ ধারালো কিরিচ দিয়ে প্রথমেই রঞ্জিত দাসের পেটে আঘাত করা হয়৷ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে যায় রঞ্জিত৷ তারপর তপন একটি ছুরি দিয়ে রঞ্জিতের গলায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য৷ পেশায় পাম্প অপারেটর রঞ্জিত দাস রবিবার রাতে বাড়িতে যায়নি৷ পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর করেও তাঁর কোন হদিশ পায়নি৷ সোমবার সকালে স্থানীয় জনগণ একটি রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন৷ সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় কাকড়াবন থানায়৷ পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ মৃত ব্যক্তির পরিবার মৃতদেহ সনাক্ত করেছেন৷ পরে এই হত্যাকান্ডের মূল রহস্য প্রকাশ্যে আসে৷
জানা গিয়েছে, রঞ্জিত দাস ও তপন পাল দুজনে ভায়রা ভাই৷ রঞ্জিত দাসের শ্যালিকার জামাতা তপন পাল৷ তপল পালের বিয়ের আগে থেকেই রঞ্জিতের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল তপনের স্ত্রী তথা শ্যালিকার৷ জামতা ও শ্যালিকার অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি দুই পরিবারের লোকজন জানতেন৷ পরে তপন পালের সাথে বিয়ে হয়৷ বিয়ের পরও তার স্ত্রী রঞ্জিত দাসের সাথে সম্পর্ক জিইয়ে রাখে৷ এই বিষয়টি কোনভাবেই মানতে পারছিল না তপন৷ সবক্ষেত্রেই রঞ্জিত দাসের সাফাই গাইত তপনের স্ত্রী৷ বহু দরবার হওয়ার পরও এই অবৈধ সম্পর্কের ইতি টানা সম্ভব হয়নি৷ এনিয়ে তপন ক্ষুব্ধ হয়ে একবার রঞ্জিতকে হত্যার চেষ্টাও করেছিল৷ ঐসময় প্রাণে বেঁচে যায় রঞ্জিত৷ এরপর পেশায় দর্জি তপন পাল পানীসাগরে চলে যায়৷ দেড় বছর ধরে সেখানেই দোকান চালান৷ মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসেন৷ কিন্তু, তার বন্ধু বান্ধবদের মারফত প্রতিনিয়তই খবর পেতেন যে তার স্ত্রীর সাথে রঞ্জিতের অবাধ মেলামেশার৷ বিবাহিত রঞ্জিতও এই অবৈধ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেনি৷ কিছুদিন আগে তপন বাড়িতে আসেন৷ সেই থেকে সে পরিকল্পনা নিচ্ছিল যে কবে কখন রঞ্জিতকে সুযোগ মতো হত্যা করা যায়৷ সেই মোতাবেক রবিবার রাতে তপন তার পরিকল্পনাকে বাস্তব রূপ দিতে সফল হয়েছে৷ পুলিশ যখন তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায় তখন সে এই পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের পুরো ঘটনা সবিস্তারে জানিয়ে দায় স্বীকার করে নিয়েছে৷