নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ মে৷৷ বামফ্রন্টের মৌন সমর্থন রাজ্যে কংগ্রেসের ডাকা চবিবশ ঘন্টা বনধকে সবাত্মক সফল

করতে সহায়তা করেছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে৷ ক্রমশ দূর্বল হয়ে পড়া কংগ্রেসের পক্ষে চবিবশ ঘন্টার বনধকে সফল করা নিঃসন্দেহে কৃতিত্বের দাবি রাখে৷ কিন্তু, এদিন বনধ চলাকালীন পিকেটারদের উপস্থিতিকে ঘিরে কংগ্রেসের দৈন্যদশাই ফুটে উঠেছে৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা বৃহস্পতিবার বিকালে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, এই বনধের সাফল্য প্রমাণ করছে যে দাবীতে ডাকা হয়েছিল তার যৌক্তিকতা রয়েছে৷ এদিন তিনি দাবি করেন, সারা রাজ্যে চৌদ্দশ-পনেরশ পিকেটার পিকেটিং করতে গিয়ে গ্রেপ্তার বরণ করেছে৷ কিন্তু, রাজধানী আগরতলা এবং বিভিন্ন স্থানে পিকেটারদের যে উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে তাতে গ্রেপ্তার হওয়া পিকেটারদের সংখ্যা চৌদ্দশ-পনেরশ হওয়া সম্ভব নয়৷ তবে, রাজ্যের মানুষ এদিন স্বতস্ফুর্তভাবে বন্ধকে সমর্থন করেছে৷ একাংশ ছুটির আমেজে কাটিয়েছেন৷
তবে, সবচেয়ে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল বনধের বিরোধীতায় এদিন শাসক দল ময়দানে নেমে প্রতিরোধ গড়ে তুলেনি৷ সারা রাজ্যের কোথাও কংগ্রেস কর্মীদের পিকেটিংয়ের বিরোধীতায় পাল্টা পিকেটিং করতে দেখা যায়নি৷ অবশ্য, এদিন সন্ধ্যায় সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মন্ডলী এক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, কংগ্রেসের ডাকা ত্রিপুরা বনধ রাজ্যের প্রায় সর্বত্র ব্যর্থ হয়েছে৷ কয়েকটি শহরে আজ ছিল বাজার বন্ধের দিন৷ কিছু মহকুমা সদরে বড় দোকান বন্ধ থাকলেও রাজ্যের শহরতলী ও গ্রামীণ এলাকাগুলিতে হাট-বাজার-দোকানপাট সর্বত্র খোলা ছিল৷ গ্রীষ্মের ছুটি থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি এমনিতেই বন্ধ৷ রাজ্যের সর্বত্র অফিস আদালতে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে৷ কিছু রুটে বড় যানবাহন না চললেও ছোট গাড়ি চলাচল করেছে৷ চা বাগিচা, শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিতে কাজ হয়েছে৷ কংগ্রেসের ডাকা এই অযৌক্তিক বন্ধ ব্যর্থ করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখার জন্য সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমন্ডলী রাজ্যের গণতান্ত্রিক, উন্নয়নকামী, শান্তিসম্প্রীতিকামী জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছে৷
বীরজিৎবাবু দাবি করেন, যে দাবীর ভিত্তিতে বনধ ডাকা হয়েছিল তার বিরোধীতা করার সাহস কোন রাজনৈতিক দলের নেই৷ চিটফান্ড ইস্যুতে কেন্দ্র ও রাজ্যকে দায়িত্ব নেওয়া উচিত৷ তাহলে রাজ্যের চৌদ্দ লক্ষ আমানতকারী ক্ষতির হাত থেকে বাঁচবেন৷ তিনি জানান, বারো দফা দাবী আদায়ে ইতিপূর্বে একাধিক আন্দোলন সংগঠিত করা হয়েছে৷ ধর্ণা, গণবস্থান, ডেপুটেশান ইত্যাদি দেওয়া হলেও রাজ্য সরকার কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার দাবী পূরণে কোন ইতিবাচক ভূমিকা নেয়নি৷ তাই বনধ পালন করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না৷ তিনি জানান, আগামী দিনে দাবী আদায়ে সত্যাগ্রহ আন্দোলন করা হবে৷ খুব শীঘ্রই উপজাতিদের নিয়ে ঐতিহাসিক র্যালী সংগঠিত করা হবে৷ এদিন তিনি বিজেপি-কে কটাক্ষ করে বলেন, রাজ্যে এখন পর্যন্ত চল্লিশ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এসেছেন৷ সেই তুলনায় উন্নয়ন কতটা হয়েছে তা বিশ্লেষণ করা খুবই জরুরী৷

