নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ মে৷৷ সর্বভারতীয় পরিস্থিতির সাথে রাজ্যের বিস্তর কোন ফারাক নেই৷ অন্তত মুখ্যমন্ত্রী

মানিক সরকারের বক্তব্যে এমনটাই মনে হয়েছে৷ একতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তিনি যে যুক্তি দেখিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট যে গোটা দেশ ও রাজ্যের পরিস্থিতি এক৷ মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, কৃষক আত্মহত্যা বেড়ে চলেছে৷ ক্ষুধার জ্বালায় হতাশ হয়ে তাঁরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন৷ তিনি আরো বলেন, দেশে বেকার সমস্যাও বেড়ে চলেছে৷ কাকতালিয়ভাবে রাজ্যেও এই দুটি জ্বলন্ত সমস্যা রাজ্য সরকারকে ভিষণ চিন্তায় ফেলেছে৷ এরাজ্যে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা না ঘটলেও, সাধারণ মানুষের আত্মহত্যার ঘটনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে৷ সম্প্রতি পুলিশ ট্রেনিং মাঠে এনিয়ে চিন্তা ব্যক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পাশাপাশি, রাজ্যেও বেকারের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে৷ বেকারত্ব রাজ্য সরকারের কাছে এক বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, মূল সমস্যার সমাধানে না গিয়ে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার মানুষকে বিপথগামী করার যে চক্রান্ত শুরু করেছে তাতে একতা ছাড়খাড় হয়ে যাবে৷ কিন্তু, সমস্যাদীর্ণ এরাজ্যে একতা কিভাবে ধরে রাখবে রাজ্য সরকার সেই প্রশ্ণই এখন উঠছে৷
রবিবার আসাম এসোসিয়েশন অব ত্রিপুরার উদ্যোগে রঙালী বিহু উদযাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, একটা মহল থেকে শ্লোগান তোলা হচ্ছে এক জাতি, এক ভাষা এবং এক সংসৃকতি৷ এর বাইরে কিছু থাকবে এদেশে৷ তাঁর মতে, এটা একটা দর্শন এবং অবশ্যই নেতিবাচক৷ বাস্তবের সাথে কোন মিল নেই৷ তাই তিনি মনে করেন, এর জন্য সংঘাত হবেই৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অধিকাংশ রাজ্য ভাষার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে৷ ঐক্য মজবুত করতে ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে৷ এই পরিস্থিতিতে এধরনের শ্লোগান মারাত্মক, মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, অতীতে হিটলার, মুসুলিনি, তজোকে এই ধরনের মারাত্মক শ্লোগান দিতে শুনা গেছে৷ এদিন তিনি বলেন, এধরনের প্রবণতা প্রশ্রয় দেওয়া যায় না৷ নাহলে উদাহরণ দিয়ে বলেন, রঙালী বিহু উৎসবের তাৎপর্য হারাতে বাধ্য হবে৷
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এই শ্লোগানের বন্ধনে আবদ্ধ করার চেষ্টার লক্ষ্য একটাই, তা হল নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে, এর বিরুদ্ধে কেউ যেন ঐক্যবদ্ধ না হতে পারেন৷ তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, রেশনিং ব্যবস্থা ধবংস হয়ে যাচ্ছে৷ চিনি রেশনে সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে৷ চাল, কেরোসিন, গ্যাস ইত্যাদির থেকেও খুব শীঘ্রই ভর্তূকি তুলে নেওয়া হবে৷ পেট্রোল-ডিজেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও দেশীয় বাজারে প্রতিনিয়ত বাড়ছে৷ ফলে মানুষের উপর চাপ বেড়ে চলেছে৷
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, সারা দেশে কৃষক আত্মহত্যা বাড়ছে৷ ক্ষুধার জ্বালায় তাঁরা হতাশ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন৷ বেকার সমস্যাও বেড়ে চলেছে গোটা দেশে৷ কেন্দ্রীয় সরকার নিয়মিত নিয়োগ প্রায় বন্ধ করে দিচ্ছে৷ তাঁর দাবি, মূল সমস্যার সমাধানে না গিয়ে মানুষকে বিপথগামী করার যে চক্রান্ত শুরু হয়েছে তাতে একতা ছাড়খাড় হয়ে যাবে৷ তাই তিনি একতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন৷

