নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে কেন্দ্রীয় শিক্ষা নীতির সমালোচনা শিক্ষামন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ মে৷৷ নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য কেন্দ্রীয় শিক্ষা নীতির সমলোচনায় মুখর হয়েছেন

রবিবার আগরতলায় কলেজ টিচার্স এসোসিয়েশনের রাজ্য সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী৷ নিজস্ব ছবি৷

শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী৷ রবিবার কলেজ টিচার্স এসোসিয়েশনের সম্মেলনে তিনি জাতীয় শিক্ষা নীতি বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেন৷ তাঁর কটাক্ষ, শিক্ষায় কেন্দ্রীয় আইন অগণতান্ত্রিক৷ এদিন তিনি কেন্দ্রীয় আইনের তুলোধুনো করলেও ১০৩২৩ জন চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের নিয়ে কোন শব্দ খরচ করেননি৷ বরং তিনি বুঝাতে চেয়েছেন, কেন্দ্রীয় আইনের কারণেই শিক্ষকের অভাবে রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থায় বিরাট সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ তিনি এও বুঝাতে চেয়েছেন, রাজ্য সরকারের গাফিলতিতে নয়, জাতীয় শিক্ষা নীতির কারণেই ১০৩২৩ জন শিক্ষকের চাকুরী বাতিল হয়েছে৷
এদিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রাজ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটেছে৷ ১৯৭২ সালে বিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ১৬০০, এখন হয়েছে ৪৮০০টি৷ তখন ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল ২লক্ষ, এখন সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লক্ষ৷ ঐ সময় শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ছিল ৮০০০, এখন সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৮০০০ জন৷ স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটলেও বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার বাজেটে সারা দেশের জন্য শিক্ষায় বরাদ্দ কমিয়েছে৷ ফলে, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নানাহ দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না৷ রাজ্যের আর্থিক অবস্থার মধ্যে দাঁড়িয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি অগ্রাধিকার দেওয়া সম্ভব নয় বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী৷ তাতে শিক্ষককূল ভিষণ হতাশ হয়েছেন বলেই মনে হচ্ছে৷
এদিন তিনি বলেন, জাতীয় শিক্ষা নীতি সারা দেশের জন্য বিপজ্জনক৷ মূলত, এই ভয়ের পেছনে ধারণা করা হচ্ছে, আগে যেভাবে সুকলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ করা হতো, নতুন শিক্ষা আইন চালু হওয়ায় তা করতে পারছে না রাজ্য সরকার৷ শুধু তাই নয়, নতুন শিক্ষা আইনের খেসারত দিতে হচ্ছে ১০৩২৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের৷ রাজ্য সরকারের ভুলের কারণে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তাঁদের চাকুরী বাতিল হয়ে গেছে৷ ফলে, নানা দিক থেকে চাপ এবং সমালোচনার ফলে, এদিন কলেজ টিচার্স এসোসিয়েশনের সম্মেলনের মঞ্চে শিক্ষামন্ত্রী কেন্দ্রীয় শিক্ষা আইনের ঝাঝালো ভাষায় সমালোচনা করেন৷ তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষা আইন অগণতান্ত্রিক৷ জোর করে রাজ্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ তাতে ধারণা করা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় আইনের যুক্তি দেখিয়ে ১০৩২৩ জন শিক্ষকের চাকুরী বাতিলের ইস্যুতে পিঠ বাঁচাতে চাইছে রাজ্য সরকার৷