নিজস্ব প্রতিনিধি, তেলিয়ামুড়া, ৯ ডিসেম্বর৷৷ কালিমালিপ্ত রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবা লাটে উঠেছে৷ রাজ্যের চুনোপুটি শাসক দলের একাংশ নেতা থেকে শুরু করে বিদ্যুৎমন্ত্রী সাফ কথায় স্বীকার করেন রাজ্যের গ্রাম পাহাড়ের বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে, কিংবা ভাষণে প্রায়শই বলে বেড়ান, প্রতিটি সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পরিষেবার সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকলে একাংশ বিদ্যুৎ কর্মীদের চরম গাফিলতি থাকার ফলে গ্রাম পাহাড়ের বিদ্যুৎ পরিবাহী তার মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে৷ বার বার সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদের জানিয়ে আসলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি৷ ঘটনাটি ঘটেছে তেলিয়ামুড়া মহকুমা বিদ্যুৎ দপ্তরের অধীন উত্তর কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নং এবং তিন নং ওয়ার্ডের কৃষ্ণপুর এলাকায়৷
তেলিয়ামুড়া শহর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরত্বে হত দরিদ্র কৃষক পরিবারের বসবাস কৃষ্ণপুর এলাকায়৷ হাতে গোনা কয়েকজন বাদ দিলে প্রত্যেক পরিবারের অন্নবস্ত্র বাসস্থানের একমাত্র উৎস কৃষির উপর৷ কৃষিকাজ ছাড়া আয়ের আর কোন পথ তাদের কাছে খোলা নেই৷ এমনিতেই সংসারের ভরণপোষণ জোগাতে প্রত্যেকটি পরিবারের হিমশিম খেতে হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে৷ তার মধ্যে বড় বিপত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তর কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নং এবং তিন নং ওয়ার্ডে বসবাসকারী গ্রামবাসীদের৷ আমতলী রোডের বাম পাশে বানিকান্ত বিশ্বাস এবং মৃত শান্তিরাম বিশ্বাসের বাড়ির পাশে টানা বিদ্যুৎ পরিবাহী তার হাতের নাগালে ঝুলে চলে এসেছে কয়েক বছর পূর্বে৷ বর্তমানে এই বিদ্যুৎ পরিবাহী ঝুলন্ত তার যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বিপত্তি৷ কেন না কয়েক বছর ধরে তার ঝুলতে ঝুলতে হাতের নাগালে চলে এসেছে৷ প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে সুকল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী থেকে অবুঝ গবাদি পশু সমেত গ্রামবাসীরা যাতায়াত করে থাকে৷ এই ব্যাপারে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ পঞ্চায়েতের ওয়ার্ড মেম্বারদের জানিয়ে ছিল গ্রামবাসীরা প্রথমে৷ তারপরে পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্য ও প্রধান প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি৷ প্রত্যেকের মুখে কেবল একই উক্তি বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত বডি ভাবছে৷ কিন্তু তাদের ভাবনা বিগত কয়েকবছর কেটে গেলেও কাজের কাজ অশ্বডিম্ব৷ এদের উপর তিক্ততা এনে পরিষেবা কয়েকজন গ্রামবাসীরা একত্রে মিলে, তেলিয়ামুড়া বিদ্যুৎ নিগমের কোন প্রভাবশালী কর্মীর সাথে দেখা করেন৷ কিন্তু দপ্তরের ওই কর্মী জানিয়ে দেয়, যে চারটি খঁুটিতে তার ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে সে চারটি খঁুটি সরাতে হবে৷ তার জন্য ব্যয়ভার এলাকাবাসীদের বহন করতে হবে৷ ব্যয় ভার ১০০০০ টাকা উপরে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ নিগমের কর্মী গ্রামবাসীদের৷ যদিও এলাকাবাসীরা দপ্তরের সিনিয়র ম্যানেজারের সাথে কথা বলার চেষ্টা করতে চাইলে, কর্মী বাধা দেয় বলে অভিযোগ, কারণ ওনি যা বলেছেন, তা ম্যানেজারবাবু দেবাশিষ দাসও বলবেন৷ পরে বাধ্য হয়ে ফিরে আসেন গ্রামবাসীরা বাড়িতে৷ এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসীদের দাবি দপ্তর যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন৷ নইলে ঝুলন্ত বিদ্যুৎ পরিবাহী তারে যদি কোন প্রাণ নাশের ঘটনা সহ বিপত্তি ঘটে তার ব্যয়ভার সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে মাথা পেতে নিতে হবে৷
এদিকে, একাংশ গ্রামবাসীদের অভিমত রাজ্যে বিদ্যুৎ দপ্তর বিদ্যুৎ বিল সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে যে পরিমাণে আদায় করছে, একাধিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকেও তার জন্য বিদ্যুৎ পরিবাহী তার সংস্কার সহ খঁুটি সরানো কাজের জন্যে কেন টাকা এলাকাবাসীদের কাছ থেকে চাইল৷ এলাকাবাসীদের দাবি, এলাকার বেশিভাগ জনমনে কৃষির উপর নির্ভরশীল৷ তাদের কাছে এতো বড়ধরনের টাকা আসবে কোথা থেকে৷ দাবি উঠেছে৷ বিনা অর্থে এবং গ্রামবাসীদের বিপদমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন রাজ্যে বিদ্যুৎ দপ্তর৷
2016-12-10