নয়াদিল্লি, ৬ নভেম্বর (হি.স.) : মাত্রাতিরিক্ত দূষণে দিল্লিকে গ্যাস চেম্বারের সঙ্গে তুলনা করলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিন দিন দূষণের মাত্রা বেড়ে চলেছে দিল্লিতে। কিছুদিন ধরে সকাল থেকেই ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে থাকে রাজধানীর আকাশ। রবিবারও সকাল থেকেই ধোঁয়াশায় ঢেকে রয়েছে রাজধানী দিল্লির আকাশ। দূষিত বাতাসের জেরে বহু মানুষেরই চোখ জ্বালা করছে। শ্বাসকষ্টও হচ্ছে অনেকের। লেফটেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জঙ্গ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। চিকিৎসকরা দিল্লিবাসীকে সতর্ক করে দিয়েছেন। তাঁদের মতে, যাঁদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে তাঁদের বিপদ বেশি। তবে অন্যরাও নিরাপদ নন। ধোঁয়াশা সবার জন্যই বিপজ্জনক। পরিবেশবিদরা বলছেন, দু দিনের মধ্যে ধোঁয়াশা কাটার সম্ভাবনা নেই। ফলে দিল্লির মানুষের সমস্যা মিটছে না।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল পরিস্থিতিকে ‘গ্যাস চেম্বার’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন। বর্তমানে শহরের যা পরিস্থিতি তাতে দূষণের মাত্রা কমানোর জন্য নিজস্ব গাড়ি ব্যবহার না করে, সরকারি পরিবহন ব্যবহার করার জন্য দিল্লিবাসীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন কেজরিওয়াল। তবে দূষণের কারণ হিসেবে অদ্ভুত যুক্তি দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতে ফসল জ্বালিয়ে দিচ্ছে কৃষকরা। যার কারণে তৈরি ধোঁয়া দূষণ ছড়াচ্ছে দিল্লির আকাশে। এই সমস্যার সমাধান করার জন্য কেন্দ্রের সাহায্য দরকার।
শনিবার থেকে দিল্লিতে ধোঁয়াশা বেড়েছে। নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফার অক্সাইড, ওজোন, কার্বন মনোক্সাইড, ক্লোরোফ্লুরোকার্বন, বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় পদার্থ মিশে রয়েছে ধোঁয়াশায়। ফলে দিল্লিবাসীর স্বাস্থ্য নিয়ে চিকিৎসকদের উদ্বেগ স্বাভাবিক।
এইএমসের চিকিৎসক রণদীপ গুলেরিয়া বলেছেন, ‘বুকে টান ধরা এবং রক্ত জমার সমস্যা নিয়ে অনেকেই আসছেন। শ্বাসকষ্ট সংক্রান্ত রোগও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষেরও এই ধরনের সমস্যা হচ্ছে। সব বয়সের মানুষই ধোঁয়াশার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। জরুরি ভিত্তিতে রাস্তায় যানবাহন, আগুনে বিভিন্ন জিনিস পোড়ানো, ধুলো কমানোর ব্যবস্থা করা উচিত।’
স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালের ফুসফুস সংক্রান্ত রোগ বিশেষজ্ঞ অরূপ বসু বলেছেন, ‘সবারই যত বেশিক্ষণ সম্ভব বাড়িতে থাকা উচিত। শরীরে আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য প্রচুর পরিমাণে জল ও অন্যান্য তরল পদার্থ খাওয়া উচিত। বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ অনেক কম থাকায় খুব বেশি পরিশ্রম করা উচিত নয়।’
2016-11-06