নিজস্ব প্রতিনিধি, উদয়পুর, ২৪ সেপ্ঢেম্বর৷৷ রাজ্যে পাহাড়ী-বাঙালী ঐক্যে চিড় ধরাতে চক্রান্ত শুরু হয়েছে৷ আইপিএফটি এই চক্রান্তের হোতা৷ পাশাপাশি বাকি বিরোধী দলগুলিও ঐক্য বিনষ্টের জন্য চক্রান্তে মদত দিচ্ছে৷ শনিবার উদয়পুরে গণতান্ত্রিক
নারী সমিতির ১৮তম রাজ্য সম্মেলন উপলক্ষ্যে প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য তথা মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার আইপিএফটি সহ বিরোধীদের প্রতি এভাবেই সাড়াশি আক্রমণ করেছেন৷ রাজ্যবাসী সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ২৩ আগষ্টের ঘটনা আইপিএফটির চক্রান্তেই হয়েছে৷ যাতে রাজ্যে ফের ভাতৃঘাতি দাঙ্গা করা যায় বলে তিনি মন্তব্য করেন৷
গণতান্ত্রিক নারী সমিতির সম্মেলন উপলক্ষ্যে রাজ্য সহ বহিরাজ্যের নারী নেত্রীরা এদিন প্রকাশ্য সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছেন৷ কিন্তু, সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্যা বৃন্দা কারাত এই সমাবেশে অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও, তিনি আসেননি৷ তাতে স্বাভাবিকভাবে এই প্রকাশ্য সমাবেশে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা সহ সংগঠনের মহিলা কর্মীরা হতাশ হয়েছেন৷
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আগাগোড়া বিরোধীদের নানা ইস্যুতে খোঁচা দিয়েছেন৷ উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে বাধা দেওয়া থেকে শুরু করে রাজ্যে শান্তি-সম্প্রীতির পরিবেশ বিনষ্ট করা, এমনকি নারী সমিতির এই সম্মেলন যাতে সফল না হয় সেজন্য আরএসএস, বিজেপি আপ্রাণ চেষ্টা করেছে বলে তিনি অভিযোগ আনেন৷ তিনি বলেন, রাজ্যে উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করছে বিরোধীরা৷ তারা রাজ্যের শান্তি-সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য ঘৃণ্য চক্রান্ত শুরু করেছে৷ আরএসএস, বিজেপি একজোটে নারী সমিতির এই সম্মেলন যাতে সফল না হয়, তার জন্য ময়দানে নেমেছিল৷ তা সত্বেও এই সম্মেলন সফল হবে বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী এর জন্য নারী সমিতির সকলকে কুর্ণীশ জানিয়েছেন৷
এদিন তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গত ২৩ আগষ্ট আইপিএফটি’র চক্রান্তে আগরতলায় হিংসাত্মক ঘটনা সংগঠিত হয়েছে৷ এর পেছনে রাজ্যে ফের ভাতৃঘাতি দাঙ্গা লাগানোর ঘৃণ্য চক্রান্ত ছিল আইপিএফটি’র বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ রাজ্যে বর্তমানে যে পরিস্থিতি, তাতে সকলকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে বার্তা দিয়েছেন৷
এদিন তিনি আদর্শ রাজ্য গড়ে তুলতে নারী সমিতিকে দায়িত্ব দিয়েছেন৷ এর জন্য সংগঠন আরো মজবুত করতে সেকথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন৷ ফলে, যারা এখনো আসছেন না, তাদের কাছে গিয়ে দলে আনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী জোর দিয়েছেন৷
মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে দাবি করেন, রাজ্যে সিপিএম’র সাফল্য অনেক৷ বিধানসভা থেকে শুরু করে ত্রিপুরা স্বশাসিত জেলা পরিষদ, গ্রাম পঞ্চায়েত, নগর পঞ্চায়েত, ভিলেজ কমিটি সবকিছুই বামেদের দখলে রয়েছে৷ সেখানে বামেরা সাফল্যের সাথে কাজও করছে৷ কিন্তু আত্মবিশ্বাস যাতে অহংকারে পরিণত না হয় নারী সমিতির প্রত্যেককে তা মনে রাখার জন্য বলেন তিনি৷ এরই পাশাপাশি সংগঠন মজবুত করার দাওয়াইও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, সংগঠন মজবুত করতে গেলে আগে ত্রুটি খুঁজে বের করুন৷ তাহলেই সাফল্য আসবে৷
এসবের সাথে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রকে দোষারোপ করতে ভুলেননি৷ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার নানা দিক তিনি এদিন প্রকাশ্য সমাবেশে তুলে ধরেছেন৷ আর এই বঞ্চনার হাত থেকে মুক্তি পেতে আন্দোলন আরো জোরদার করতে হবে বলেও তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন৷