নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ সেপ্ঢেম্বর৷৷ প্রত্যাশাপূরণ হল না তৃণমূল কংগ্রেসের৷ রাজ্য বিধানসভায় বিরোধী দলের মর্যাদা পেল না দল৷ সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটেছে সোমবার৷ তৃণমূল কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা দিবাচন্দ্র রাংখলকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস৷ এনিয়ে গড়িমসি শুরু করায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অধ্যক্ষকে সোমবার পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন৷ অবশ্য অধ্যক্ষ এরই মধ্যে সোমবার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন৷ অধ্যক্ষ রমেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ তৃণমূল কংগ্রেসকে বিরোধী দলের মর্যাদা দেওয়ার আবদার খারিজ করে দিয়েছেন৷ এপ্রসঙ্গে তিনি যুক্তিগ্রাহ্য বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন৷ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ রমেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ বলেন, সংবিধানে প্রণীত আইন অনুযায়ী অধ্যক্ষকে কাজ করতে হয়৷ সব রাজ্যের অধ্যক্ষরাই পার্লামেন্টারি প্র্যাকটিস এন্ড প্রসিডিউর অনুসরণ করে বিধানসভা পরিচালনা করতে হয়৷ আর্টিক্যাল ১৮৯এ’র ক্লজ থ্রিতে লেখা আছে বিধানসভায় কোরাম হতে হলে দশজন সদস্য থাকতে হবে৷ অথবা মোট সদস্যের এক দশমাংশ থাকতে হবে৷ এক্ষেত্রে যে সংখ্যা বেশি সেটাই মানতে হবে৷ অধ্যক্ষ জানান ত্রিপুরা বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সেই পরিমাণ বিধায়কের সংখ্যা নেই৷ সেই কারণেই তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কদের বিরোধী দলের মর্যাদা দেওয়া অধ্যক্ষের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না৷ স্বাভাবিক কারণেই তৃণমূল কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা দিবাচন্দ্র রাংখলকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া সম্ভব নয়৷ তবে, বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য পৃথক অফিস ঘর, টেলিফোন সহ অন্যান্য ব্যবস্থা করা হবে৷ কংগ্রেসের যে বিধায়করা রয়েছেন তাদের জন্যও পৃথক অফিস, টেলিফোন সহ অন্যান্য ব্যবস্থা করা হবে৷
বিধানসভার অধ্যক্ষ এবিষয়ে স্পষ্টীকরণ দেওয়ার পর অনেকটাই বিপাকে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ তাদের দাবি ছিল বিধানসভার ভিতরে বিরোধী দল হিসেবে তারা দায়িত্ব পালন করবে৷ কিন্তু সেই আশায় কাঁটা পড়েছে৷ উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস দল দশটি আসনে জয়ী হয়ে বিধানসভায় আসে৷ দশটি আসন জয় করতে পারার সুবাদেই কংগ্রেসকে বিরোধী দলের মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল৷ এরই মধ্যে রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থার মধ্যে বিরোধী দল কংগ্রেসে ভাঙন দেখা দেয়৷ কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন বিধায়ক দলত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন৷ তাদের বিধায়ক পদ খারিজ করার জন্য কংগ্রেসের তরফে বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে দাবি জানানো হয়েছিল৷ কিন্তু অধ্যক্ষ তাদের বিধায়ক পদ খারিজ করেননি৷ কংগ্রেস ছেড়ে যেসব বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন তাদের বিধায়ক হিসেবেই স্বীকৃতি দিয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ৷ তাতে, বিধায়কদের মনোবল অনেক বেড়ে গিয়েছিল৷ তারা দাবি করেছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কদের বিধানসভা অধিবেশনে বিরোধী দলের আসনে বসার সুযোগ দেওয়ার জন্য৷ বিধানসভার অধ্যক্ষ আইনী বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে তাদের সেই আবদার খারিজ করে দিয়েছেন৷ তাতেই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী দলের মর্যাদা না পাওয়ায় বলতে গেলে রীতিমত হোঁচট খেয়েছে৷ এই ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেস ব্যাপক প্রচার আন্দোলনে সামিল হওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে৷
এদিকে, ত্রিপুরা বিধানসভার নতুন মুখ্য সচেতক হয়েছে বিলোনীয়ার বিধায়ক বাসুদেব মজুমদারকে৷ বিধানসভা সূত্রে জানা গিয়েছে খোয়াইয়ের বিধায়ক সমীর দেব সরকার প্রয়াত হওয়ায় বাসুদেব মজুমদারকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ পূর্বে সমীর দেব সরকার মুখ্যসচেতকের দায়িত্বে ছিলেন৷
2016-09-13