BRAKING NEWS

মমতাকে সাঁড়াশি আক্রমণ বিজনের

বিশেষ প্রতিনিধি, উদয়পুর, ৭ আগস্ট৷৷ কমিউনিস্টরা সংসদীয় গণতন্ত্র হত্যা করে না৷ সংসদীয় গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ শাসক শ্রেণী থেকে আসে, শ্রমিক শ্রেণী থেকে নয়৷ বামপন্থীরা যদি উদারবাদী নীতির বিরুদ্ধে শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে কথা না বলত তাহলে সরকার থেকে চলে গেলে এধরনের স্বৈরতান্ত্রি, আধাফ্যাসিস্ট আক্রমণের মুখোমুখি হতে হত না৷ শ্রেণী সংগ্রামের তীব্রতা বৃদ্ধিকে অবনমিত করতেই এই আক্রমণ চলছে পশ্চিম বাংলায়৷ পশ্চিমবাংলায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, গণতান্ত্রিক স্বাধীনতাকে পুনরুজ্জীবিত করতে লড়াই চালাচ্ছে গণতান্ত্রিক মানুষ৷ তাকে সংহতি জানানো, পাশে থেকে সাহস শক্তি জোগানো ত্রিপুরার জনগণের কর্তব্য৷ রবিবার উদয়পুর টাউন হলে পশ্চিমবাংলার গণতান্ত্রিক মানুষদের লড়াইয়ের প্রতি সংহতি জানিয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এই আহ্বান জানান সিপিআইএম ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর৷
রবিবার পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থী নেতা কর্মী সহ সাধারণ মানুষের উপর তৃণমূল কংগ্রেস দল ও সরকারের আধা ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বানে সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ হলের বাইরেও শত শত মানুষকে স্থান করে নিতে হয়৷ পশ্চিমবাংলার গণতন্ত্র প্রিয় মানুষের পাশে থাকার দৃপ্ত প্রতিশ্রুতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে মিছিল করে সংগ্রামী মানুষ সভায় সামিল হয়৷ কখনো তপ্ত রৌদ্র, তো কখনো রিমঝিম বৃষ্টিকে মাথায় নিয়ে এদিনের সমাবেশে মানুষের উপস্থিতি ছিল বেশ নজরকাড়া৷
সভায় সিপিআইএমএর প্রবীণ নেতা জ্যোতিষ সাহার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পার্টির রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর, গোমতী জেলা সম্পাদক মাধব সাহা, উদয়পুর মহকুমা সম্পাদক মানিক বিশ্বাস৷ বিজনবাবু আলোচনায় বলেন, পশ্চিমবাংলায় হিটলারি কায়দায় সরকার চলছে মমতার নেতৃত্বে৷ মানুষ দেখছেন৷ তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে গত নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাসের তথ্য তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন পশ্চিমবাংলা লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছে৷ পার্টিকে পুনঃঘটিত করার চেষ্টা করছে৷ পশ্চিমবাংলা থেকে শিক্ষা নিতে হবে ত্রিপুরাকে৷ কোন শক্তিই বামপন্থীদের হারাতে পারে না, যদি আমরা সঠিক থাকি৷ গোটা দেশকে গণ আন্দোলনে দিশা দেখাতে, পশ্চিমবঙ্গকে সংহতি জানানো হবে— ত্রিপুরায় পার্টি ও জনগণের ঐক্যকে সুদৃঢ় করা, বামফ্রন্ট সরকারের নীতিকে যথাযথভাবে প্রতিপালনে উদ্যোগ নিতে পারলে বলে জানান তিনি৷
বিজন ধর স্পষ্টতই বলেন, পার্টি অফিসে বৃদ্ধ মহিলা আসেন দরখাস্ত লিখে দিতে, কিন্তু তা আমরা এখন করতে চাই না৷ অথচ জিআর এর দরখাস্ত লেখার মধ্য দিয়েই আমাদের রাজনৈতিক জীবন শুরু৷ পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় থাকার ফলে যার যেটা পাওয়ার কথা না তাকে সেটা দিতে হবে – কেন হবে? দুর্নীতিতে যুক্ত হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে বলে জানিয়ে দেন তিনি৷ কেননা পার্টির ভিত জনগণের কাছে নরবড়ে হয়ে পড়লে ভূমিকম্পের মতো গোটা ব্যবস্থা ঝড়ে পড়বে৷
তিনি আরো বলেন, দেশের নরেন্দ্র মোদি সরকার ত্রিমূর্তি নীতি নিয়ে চলছে৷ নয়া উদারবাদী, সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারী শাসন৷ বামফ্রন্টকে গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টা করছে৷ সে জায়গায় রাজ্যেও তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি পরিস্থিতিতে জটিলতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে৷ সতর্ক থেকে মতাদর্শগতভাবে লড়াই, নতুন মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আসা এবং কর্তব্য প্রতিপালনে প্রত্যেককে সক্ষম হয়ে উঠার প্রতি আহ্বান জানান বিজন ধর৷ এদিনের সভা ঘিরে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া ছিল লক্ষণীয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *