BRAKING NEWS

বাণিজ্য সম্ভাবনার স্বপ্ণ ফেরি করলেন রেলমন্ত্রী, আগরতলা-কলকাতা ট্রেন এমাসেই, শীঘ্রই রেলপথে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩১ জুলাই৷৷ বাণিজ্যে বসত লক্ষ্মী৷ আগরতলা-দিল্লী ত্রিপুরাসুন্দরী এক্সপ্রেসের সূচনা করে

বক্তব্য রাখছেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভাকর প্রভু৷ নিজস্ব ছবি৷
বক্তব্য রাখছেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভাকর প্রভু৷ নিজস্ব ছবি৷

রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভাকর প্রভু ত্রিপুরা সহ পূর্বোত্তরের বাণিজ্য সম্ভাবনার স্বপ্ণ ফেরী করলেন৷ তাঁর দাবি, যোগাযোগ ক্ষেত্রে উন্নতির মাধ্যমে এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব৷ তাতে, পূর্বোত্তরের জনগণের আর্থিক বিকাশ মারাত্মকভাবে ঘটবে৷ পাশাপাশি আগস্ট মাসেই আগরতলা-কলকাতা রেল চালু করা হবে বলেও রাজ্যবাসীকে আশ্বাস দিয়েছেন রেলমন্ত্রী৷
রেলকে ব্যবহার করে পর্যটনের মাধ্যমে পূর্বোত্তরের আর্থিক বিকাশ সম্ভব বলে মনে করেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু৷ তাঁর বক্তব্য, গোটা দেশের পর্যটককে এই অঞ্চলের প্রতি আকর্ষিত করতে হবে৷ সেক্ষেত্রে তিনি রেলের পর্যটন সংস্থা আইআরসিটিসিকে দায়িত্ব দিয়েছেন এই অঞ্চলের পর্যটনের বিকাশে বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করার জন্য৷ শুধু তাই নয়, আগরতলা-আখাউড়া রেল প্রকল্পের শিলান্যাসের মাধ্যমে খুব শীঘ্রই রেলপথে বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হতে চলেছে ত্রিপুরা৷ ফলে, ভারত এবং অন্যান্য রাষ্ট্রের পর্যটকদের রেলের মাধ্যমে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করার জন্যও তিনি বলেছেন৷
ত্রিপুরার বিকাশে বাঁশকে কাজে লাগানোর জন্য তিনি পরামর্শ দিয়েছেন৷ বাঁশকে ব্যবহার করে শিল্প গঠন করা হলে পরিবেশের ভারসাম্যে তারতম্য ঘটবে না৷ তবে, যে কোন শিল্পকে সফল রূপ দিতে বাজারের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷ এবিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, আইআরসিটিসির ওয়েবসাইটে ই-কমার্স প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব বাঁশ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী৷ ফলে, পূর্বোত্তরের আঞ্চলিক সম্পদকে ব্যবহার করে এই অঞ্চলে আর্থিক বিকাশ সম্ভব বলেই তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন৷
তাঁর মতে, বাংলাদেশের সাথে ত্রিপুরা কেবল আত্মিক সম্পর্ক নয়, ভাষা, কৃষ্টি সংস্কৃতি সমস্ত ক্ষেত্রেই ভীষণ মিল রয়েছে৷ ফলে, আগরতলা-আখাউড়া রেল যোগাযোগ স্থাপন করে দু’দেশের সম্পর্ক আরো মধুর হবে, পাশাপাশি বাণিজ্যের প্রসারও বাড়বে৷ এদিন তিনি জানান, আগে রেল বাজেটে এই অঞ্চলের জন্য দুই হাজার কোটি টাকার সামান্য বেশি বরাদ্দ করা হত৷ কিন্তু এখন বরাদ্দ অনেক বাড়ানো হয়েছে৷ এক তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, ১৩-১৪ অর্থবছরে ৫৪৮৯ কোটি টাকা, ১৫-১৬ অর্থবছরে ৬১০০ কোটি টাকা এবং ১৬-১৭ অর্থবছরে এই অঞ্চলে ৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করার ইচ্ছা রয়েছে রেলের৷ অবশ্য ভারতীয় রেলে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতি তিনি জোর দিয়েছেন৷ রেলমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় রেলে বিনিয়োগ অসফল রয়েছে৷ নতুন সরকার কেন্দ্রে স্থাপিত হওয়ার পর রেলে বিনিয়োগের উপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে৷ ইতিমধ্যে জাপানের সাথে সে বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়েছে৷ ৭ হাজার কোটি টাকা জাপান ভারতীয় রেলে বিনিয়োগ করতে চলেছে৷ ফলে, কেবল বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে নয়, বিনিয়োগের মাধ্যমে রেলকে আরো শক্তিশালী করে তোলার চেষ্টা চলছে৷
এদিন, তিনি উত্তরপূর্বাঞ্চলকে দেশের ট্যুরিস্ট হাব হিসেবে গড়ে তোলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন৷ সে অনুযায়ী আইআরসিটিসিকে রেলমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন পূর্বোত্তরের রাজ্যগুলির সাথে এই মর্মে শীঘ্রই চুক্তি করার জন্য৷
এদিকে, রাজ্যবাসীর ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে রেলমন্ত্রী জানান, কেবল ত্রিপুরাসুন্দরী এক্সপ্রেস দিয়েই থেমে থাকা হবে না৷ আরো অনেক ট্রেন রাজ্যের জন্য চালু করা হবে৷ বিশেষ করে আগামী আগস্ট মাসেই আগরতলা থেকে কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি রেল চালু হবে বলে তিনি ঘোষণা দেন৷
এদিকে, রেল রাষ্ট্রমন্ত্রী রাজেন গোঁহাই তার আলোচনায় উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রতিটি রাজ্যকে রেল সংযোগের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের যে লক্ষ্য রয়েছে সেই কাজ এগিয়ে চলছে বলে জানান৷ দূরন্ত রেলের জন্য ত্রিপুরাবাসীর যে দাবি রয়েছে সে দাবি পূরণের জন্য বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন, আগরতলা-দিল্লীর রেল সংযোগের ফলে সমগ্র দেশের সঙ্গে ত্রিপুরার যোগাযোগ খুলে গেল৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *