নিজস্ব প্রতিনিধি, খোয়াই, ১৯ জুলাই ৷৷ খোয়াই জেলায় বিদ্যুৎ দপ্তরের উপর থেকে নীচ এবং ঠিকেদার, পঞ্চায়েতের দ্বারা লক্ষ টাকার লুট বাণিজ্য তথ্যনিষ্ঠভাবে বারবার দুর্নীতি প্রকাশ করা হলেও কোন প্রকার প্রতিকার না হওয়াতে শুধু বিদ্যুৎ দপ্তরই নয় বিভিন্ন দপ্তরে চলছে একাশ কর্মচারী দ্বারা ঘোটালা৷ অথচ এদেশে প্রতিটি নাগরিকট ঋণের বোঝা নিয়ে জন্মায়৷ তবে জনগনের মতে যদি ১ টাকায় ৬০ পয়সা খরচ হতো তবে এই ঋণের বোঝা বইতে হতনা৷ আর আমাদের ছোট্টা ত্রিপুরা রাজ্যে নিগম দ্বারা পরিচালিত বিদ্যুৎ দপ্তরে ১ টাকার মধ্যে ৮০ পয়সারই ঘোটালা হচ্ছে৷ বাকি ২০ পয়সা দিয়ে বিদ্যুৎ নিগমকে চলতে হচ্ছে৷ শুধুমাত্র খোয়াই থেকেই যে তথ্য দেওয়া যেতে পারে তাতেই স্পষ্ট ধারনা হয়ে যাবে গোটা রাজ্যে কতটুকু ঘোটালা হচ্ছে এই বিদ্যুৎ দপ্তরে৷ কিভাবে ১ টাকার মধ্যে ৮০ পয়সা ঘোটালা হচ্ছে? তথ্য বলছে খোয়াই বিদ্যুৎ দপ্তরের অধীনে ২৮-০৭-২০১৫ তারিখে হয়৷
অবাক করার বিষয় হল কানেকশন বাবদ প্রত্যেক বেনিফিসিয়ারিদের থেকে দশ, এগারো, বারো, পনের কিংবা আঠারো হাজার টাকা নিয়েও বিদ্যুৎ কর্মী এবং ঠিকেদার বাবুরা দপ্তরে জমা দেন কেবল মাত্র হাজার-বারোশ টাকা কিংবা তারও কম৷ এতবড় ঘোটালার পর যখন কিছু বিদ্যুৎ কর্মী এবং ঠিকেদার প্রতিবাদ জানায় যে প্রতি পরিবার থেকে দশ-বারো হাজার টাকা করে আদায় করেন এক ঠিকেদার এবং অফিসকর্মী মিলিতভাবে এবং প্রত্যেক ভোক্তার বাড়ীতে নিগমের ইলেট্রিক খুঁটি ব্যবহার করা হয় এখটি করে৷ দেখা যায় নিগমের কাছে জমা পড়ে মাত্র প্রতি ভোক্তা বাবদ বারোশত টাকা করে, বাকি টাকা জমা পাড়েনি৷ দপ্তর তখন ঠিকেদার এবং অফিস কর্মীদের বাঁচাতে ময়দানে অবর্তীণ হয় এবং পঞ্চায়েত থেকে রেজুলেশন পাশ করিয়ে আইনি জটিলতা কাটিয়ে ফেলেন৷ অফিস কর্মীরা বাঁচতে অতি কৌশলে পঞ্চায়েতেকে সামিল করে নেয় চতুরবাজরা৷ জনগনের অভিমত এই ঘটনা থেকে বোঝা যায় বিভিন্ন পঞ্চায়েতের একাংশ জড়িত ঐসব দুর্নীতি পরায়ন লোকদের বাঁচাবার জন্য৷
এছাড়াও বিদ্যুৎ দপ্তরে রয়েছে অনেক ঘোটালা৷ অ্যালুমিনিয়ামের তার নিয়ে ঘোটালা৷ ঠিকেদার দ্বারা অ্যালুমিনিয়াম তার লোহা-ভাঙার দোকানে বিক্রি করা ইত্যাদি৷ লোহা-ভাঙার দোকান থেকে এলুমিনিয়ামের তারগুলিকে ছোট ছোট করে বস্তা বন্দী করে পাচারকালে খোয়াই থানার পুলিশের হাতে ধরা খায়৷ তাছাড়া জেলায় ছিল প্রায় সব লোহার খুঁটি৷ বর্তমানে সিমেন্টের খুঁটি সেই স্থান নিয়ে নিয়েছে৷ কিন্তু হাজার হাজার লোহার খুঁটি গেল কোথায়? রয়েছে টানা, প্লেইট, ট্রান্সফরমার এবং তেল৷ খোয়াই জেলায় কোন ওয়েল্ডিং দোকানের জন্য কোন ট্রান্সফরমার-অয়েল বাজার থেকে ক্রয় করা হয়না৷ কারন বিদ্যুৎ থেকে সেই তেল পেয়ে যান তারা৷ এছাড়া রয়েছে বেনামী বিদ্যুৎ কানেকশন এবং কম্পিউটারাইজড হওয়ার আগে বিদ্যুৎ বিল আদায় থেকে লক্ষ লক্ষ টানা নয়-ছয় হয়৷ এসময় যে ব্যক্তিরা মিটার রিডিং বা বিল এবং ক্যাশমোমো দায়িত্বে ছিলেন উনাদের সম্পত্তির পরিমান তদন্ত করলে দেখা যাবে উনারা আজ কত টাকার মালিক৷ সব মিলিয়ে দেখা যায় জনগনকেই তার খেশারত দিতে হচ্ছে৷
এটি সমুদ্র থেকে ছোট্টা একটি উদাহরন৷ সমগ্র খোয়াই জেলায় সঠিকভাবে তদন্ত করলে প্রকাশ পাবে কত কোটি কোটি টাকার ঘোটালা হচ্ছে শুধু খোয়াইতেই৷ সারা ত্রিপুরার কত কোটি টাকার ঘোলাট হচ্ছে আর পাপ বহন করতে জনগনকে৷ রাজ্যের জনগন যেখানে এক-দুই টাকায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ পেতেন সেখানে চার-পাঁচ টাকা ইউনিট প্রতি দিতে হচ্ছে৷