নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর, ১৮ জুলাই ৷৷ এক আনন্দঘন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আজ কালাছড়া ব্লকের নবনির্মিত কার্যালয়ের দ্বারোদঘাটন করেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ উদ্বোধকের ভাষনে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি হল প্রশাসনকে মানুষের দরজায় পৌঁছে দেওয়া৷ সেই লক্ষে রাজ্যে ১০টি মহকুমা থেকে ২৩টি মহকুমা, ১৫টি ব্লক থেএক ৫৮ টি ব্লক করা হয়েছে৷ এক সময় আগরতলায় একটি পুর পরিষদ ছিল৷ বর্তমানে রাজ্যে নগর ও পুর পরিষদ সহ ২০ টি শহরে জন নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান হয়েছে৷ মহকুমা ও ব্লকের মধ্যবর্তী ডিসি অফিসে প্রশাসনিক সুযোগ সম্প্রসারণ করা হয়েছে৷ রাজ্যে ২৬ থেকে ৩২ টি এধরনের ডিসি অফিসে হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনের সাথে সঙ্গতি রেখে রাজ্যে আগামী দিনে আরও প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের পদক্ষেপ নেয়া হবে৷ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে মানুষের সমস্যা নিরসনে প্রশাসন কাজ করার চেষ্টা করছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ৬৫ থেকে ৭৫ শতাংশের বেশী মানুষ গ্রামে বাস করেন৷ সব অংশের মানুষের স্বার্থে কাজ করতে হবে৷ তিনি বলেন, ব্লকে সব সমস্যার সমাধান নাও হতে পারে৷ মানুষের গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক সমস্যা আছে৷ তবে কিছু সমস্যার সমাধান বিডিও করতে পারেন৷ যেটা পারেবন না সেটা মহকুমা ও জেলাস্তরে পাঠাতে হবে৷ সীমান্ত ক্ষমতার মধ্যেও রাজ্য সরকার মানুষের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোন কোন বিষয়ের সমাধানে সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের উফর নির্ভর করতে হয়৷ ত্রিপুরার মানুষ সম্মিলিতভাবে ত্রিপুরাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন৷
মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রয়ী সরকারের নীতির সমালোচনা করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার গরীব অংশের জনগণের কল্যাণে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে না৷ বড়লোক ও স্বার্থাম্বেষীদের পক্ষে কাজ করছেন৷ ফলে অস্বাভাবিক হারে দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ কৃষক আত্মহত্যা করছে৷ কেন্দ্রীয় সরকার বাজেটে টাকা কমিয়ে দিচ্ছে৷ কেন্দ্রীয় দপ্তরে লক্ষ লক্ষ খালি পদ পড়ে আছে৷ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, শিশুকল্যাণ ইত্যাদি খাতেও টাকা কমিয়ে দিয়েছে৷ রেগার বরাদ্দও হ্রাস করা হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ধর্মীয় বিভাজনের মাধ্যমে দেশে আসহিষ্ণুতার পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে৷ অপশক্তির বিরুদ্ধে চোখ, কান খোলা রাখতে মুখ্যমন্ত্রী আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, আমাদের একতা বজায় রাখতে হবে৷ শান্তি ছাড়া উন্নয়নের কাজ করা সম্ভব নয়৷ তিনি বলেন যাদের ঘর নেই, শৌচালয় নেই, বিদ্যুতের সংযোগ নেই, যে সমস্ত এলাকায় রাস্তা নেই, অঙ্গনওয়াদী কেন্দ্র, বিদ্যালয়ে শিক্ষক কম এগুলির সমাধানে উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন৷
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির ভাষণে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা মন্ত্রী বিজিতা নাথ বলেন, প্রশাসনকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কদমতলা ব্লক ভেঙ্গে কালাছড়া ব্লক হয়েছে৷ সরকারের প্রতিটি উন্নয়ন কর্মসূচী রূপায়ণে মানুষের সহযোগিতা নিয়ে ব্লক প্রশাসন কাজ করছে৷ উত্তর ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি প্রতিমা দাস, বিধায়ক ফয়জুর রহমান, বিধায়ক বিশ্ববন্ধু সেন, জেলা শাসক সন্দীপ এন মহাত্নে ও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন৷ স্বাগত ভাষন দেন কালাছড়া ব্লকের বিডি ও উত্তম ভৌমিক৷ সভাপতিত্ব করেন কালাছড়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান দীপ্তি রাণী দেবনাথ৷ দ্বিতল এই পাকা বাড়ি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৩১ লক্ষ ৮ হাজার টাকা৷ গ্রাম উন্নয়ন দপ্তর এই দালান বাড়ীটি নির্মাণ করেছে৷