নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ জুলাই৷৷ ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত সাসপেন্ডেড টিসিএস অফিসারকে পান্না আহমেদকে
তিনদিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত৷ পুলিশ পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছিল৷ কিন্তু আদালত তিনদিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছে৷
বুধবার দুপুর দুটো নাগাদ ফার্স্ট ক্লাস জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জে দেববর্মার এজলাসে পান্না আহমেদকে তোলা হয়৷ বিবাদি পক্ষের আইনজীবী রঘুনাথ মুখার্জি তার মক্কেল পান্না আহমেদকে জেলে রেখে এই ধর্ষণ মামলায় তদন্ত প্রক্রিয়া চালানো হোক সে আবেদন জানান৷ কিন্তু সরকার পক্ষের আইনজীবী বাবুল দাস এবং এপিপি ইনচার্জ উত্তম ব্যানার্জি পান্না আহমেদকে পাঁচদিনের পুলিশ রিমান্ডের পক্ষে সওয়াল করেন৷ অবশেষে পান্না আহমেদের তিনদিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত৷
তাতে, বিবাদি পক্ষের আইনজীবী রঘুনাথ ব্যানার্জি বলেন, তার মক্কেল পান্না আহমেদকে পুলিশ রিমান্ডে পাঠানোর কোন প্রয়োজনীয়তা ছিল না৷ পান্না আহমেদের মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়ে গেছে৷ ঘটনার পর পরই পান্না আহমেদের বাড়ি থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র সিজ করেছে পুলিশ৷ ফলে, এখন পুলিশ রিমান্ডে রেখে তদন্ত প্রক্রিয়া চালানোর বিশেষ কোন প্রয়োজনীয়তা নেই৷ তার মক্কেলকে জেলে রেখেই তদন্ত কাজ চালানো যাবে৷ এরই পাশাপাশি তিনি আরো বলেন, এই ধর্ষণ মামলায় আরো ঘটনা রয়েছে যার সত্যতা খঁুজে বের করা দরকার৷ তার দাবি, আগামীদিনে এই মামলার সাথে জড়িত অনেক সত্য ঘটনা সামনে আসবে৷
এদিন, আদালতে নিয়ে যাওয়ার পর পান্না আহমেদকে দেখে সেখানে উপস্থিত যুব কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন৷ এক সময় উত্তেজিত হয়ে পান্না আহমেদকে লক্ষ্য করে যুব কংগ্রেস কর্মীরা ডিম ও কালী ছঁুড়তে থাকেন৷ পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায় যে পরবর্তী সময় পান্না আহমেদকে হেলমেট পরিয়ে আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ৷ অবশ্য এদিনের ঘটনায় পুলিশ যুব কংগ্রেসের এক কর্মীকে আটক করে৷ তবে, পরবর্তী সময়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়৷ অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের এক গাড়ির চালক পরিস্থিতি থমথমে হয়ে পড়ায় যুব কংগ্রেসের এক কর্মীকে চড় মেরেছেন৷ এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার যুব কংগ্রেসের তরফে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশকের কাছে নালিশ জানানো হবে৷ পাশাপাশি এর ব্যবস্থা নেওয়ারও আবেদন জানাবে যুব কংগ্রেস৷
মঙ্গলবার করিমগঞ্জে গ্রেপ্তার হওয়ার পর পান্না আহমেদকে রাতেই চুড়াইবাড়িতে নিয়ে আসে ত্রিপুরা পুলিশ৷ সেখান থেকে গতকাল রাতেই পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা ডেপুটি পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে এক দল পুলিশ বাহিনী কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে দিয়ে পান্না আহমেদকে আগরতলায় নিয়ে আসা হয়৷ বুধবার ভোরে পান্না আহমেদকে নিয়ে পুলিশ আগরতলায় পৌঁছায়৷ তাকে পশ্চিম আগরতলা থানায় রাখা হয়৷ এরপর সমস্ত আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে জিবিতে মেডিক্যাল চেকআপের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়৷ এরপর বেলা দুটো নাগাদ তাকে আদালতে তোলা হয়৷
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে টিসিএস অফিসার তথা সোনামুড়ার প্রাক্তন মহকুমা শাসক পান্না আহমেদের বিরুদ্ধে৷ ঐ মহিলা পশ্চিম আগরতলা মহিলা থানায় পান্না আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন৷ এরপর থেকেই পান্না আহমেদ পলাতক ছিলেন৷ মঙ্গলবার তাকে আসাম পুলিশ এবং ত্রিপুরা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে করিমগঞ্জ বাজার সংলগ্ণ এক বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে৷