নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ জুলাই৷৷ কাঁঠালতলী দিয়ে জাতীয় সড়কটি যে কোন ভাবেই যানবাহন চলাচলের উপযোগী রাখার আশ্বাস দিয়েছে আসাম সরকারের পূর্ত দপ্তর৷ শীঘ্রই এই সড়কটির সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না দেখে যাতে এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল চালু রাখা যায় রাজ্যের পূর্ত দপ্তরের জাতীয় সড়ক শাখার মুখ্যবাস্তুকার দীপক দাসকে সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আসাম সরকারের পূর্ত দপ্তরের পাথারকান্দি মহকুমার এসডিও মহম্মদ জালাল লস্কর৷ এদিকে, ৮নং জাতীয় সড়ক (সাবেক ৪৪নং জাতীয় সড়ক) সংস্কারের দায়িত্ব আসাম সরকারের পূর্ত দপ্তরের হাতেই রয়েছে৷ সদ্য কাঁঠালতলী দিয়ে বিকল্প সড়কটি ২০৮এ জাতীয় সড়কে উন্নীত করা হয়েছে৷ এই জাতীয় সড়কটির সংস্কারের দায়িত্ব আসাম সরকারের পূর্ত দপ্তরের হাত থেকে এনএইচআইডিসিএল’কে দেওয়া হয়েছে৷ রাজ্যের পূর্ত দপ্তরে জাতীয় সড়ক শাখার মুখ্যবাস্তুকার দীপক দাস এই তথ্য তুলে ধরে জানান, এখন থেকে এনএইচআইডিসিএল ২০৮এ জাতীয় সড়কের সংস্কার করবে৷ অবশ্য আসাম সরকারের পূর্ত দপ্তর এখনো তাদেরকে দায়িত্ব তুলে দেয়নি৷ পাশাপাশি তিনি জানান, ৮নং জাতীয় সড়ক এবং ২০৮এ জাতীয় সড়কের বেহাল দশা কাটাতে আসাম সরকারের পূর্ত দপ্তরের পাথারকান্দি মহকুমার এসডিও মহম্মদ জালাল লস্কর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যানবাহন চলাচলের উপযোগী রাখার সব রকম উদ্যোগ নেবেন৷ তিনি ত্রিপুরার পূর্ত দপ্তরের জাতীয় সড়ক শাখার মুখ্যবাস্তুকারকে আশ্বস্ত করেছেন যে কোন ভাবেই হোক যানবাহন চলাচল চালু রাখা হবে৷
সোমবার মহাকরণে পূর্ত দপ্তরের জাতীয় সড়ক শাখার মুখ্যবাস্তুকার দীপক দাস ত্রিপুরার লাইফ লাইনের করুণ চিত্র তুলে ধরেছেন৷ সম্প্রতি জাতীয় সড়কের বেহাল দশার সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে ৮নং জাতীয় সড়ক এবং ২০৮এ জাতীয় সড়কের দুর্দশা দেখে এসেছেন৷ তিনি জানান, বড় বড় গর্তে যানবাহন ফেঁসে গেলে ড্রজারের মাধ্যমে সে যানবাহনগুলি গর্ত থেকে তুলা হয়৷ কাঁঠালতলী দিয়ে বিকল্প সড়কে পাঁচটি গর্ত বিশাল বড়৷ এই সড়ক দিয়ে ছোট গাড়ি আসা যাওয়া করা কোন মতেই সম্ভব নয়৷ বড় বড় ট্রাকগুলি গর্তে পড়ে গেলে ড্রজারের মাধ্যমে ধাক্কা দিয়ে সেগুলি পারাপার করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ আসাম সরকারই সে ব্যবস্থা করেছে৷ তবে, ঐ গর্তগুলি ভর্তি করার কাজ শুরু হয়েছে৷ তিনি জানান, গত পরশু থেকে গর্তগুলি ভর্তি করা শুরু হয়েছে৷ গত পরশু পাঁচ গাড়ি পাথর ফেলে কিছু গর্ত ভর্তি করা হয়েছে৷ গত রবিবারও আরো সাত গাড়ি পাথর আনা হয়েছে গর্ত ভর্তি করার জন্য৷ আজকেও গর্ত ভর্তি করার কাজ চলছে৷ তিনি জানান, গত ১ জুলাই এনএইচআইডিসিএল কাঁঠালতলী দিয়ে ২০৮এ জাতীয় সড়কটি সংস্কারের টেন্ডার দেখেছে৷ ১৫ দিন লাগবে টেন্ডার জমা পড়তে৷ আরো ১৫ দিন সময় লাগবে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে৷ এনএইচআইডিসিএল’র জেনারেল ম্যানেজার জানিয়েছেন, আরো একমাস সময় লাগবে ২০৮এ জাতীয় সড়কের আসামের অংশের সংস্কার কাজ শুরু হতে৷
এদিকে, ৮নং জাতীয় সড়কের (সাবেক ৪৪নং জাতীয় সড়ক) চুড়াইবাড়ি গেইট থেকে দুই কিলোমিটার রাস্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত৷ দীপকবাবু জানান, মতলবি মোকাম জায়গাটিতেই জাতীয় সড়কটি সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হয়ে রয়েছে৷ এই অঞ্চলের মাটি ভীষণ খারাপ৷ সে কারণে লোড নিতে পারছে না৷ তবে, নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে এই অংশের সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে আসাম সরকারের পূর্ত দপ্তর৷ পরীক্ষামূলকভাবে ৩০ মিটার রাস্তায় নতুন প্রযুক্তির সহায়তায় সংস্কার করা হবে৷ তাতে সাফল্য মিলবে দুই কিলোমিটার রাস্তাটি সে পদ্ধতিতে সংস্কার করা হবে৷ প্রথম দিন নতুন প্রযুক্তিতে কিছুটা কাজ হয়েছে৷ কিন্তু দ্বিতীয় দিন বৃষ্টির কারণে কোন কাজ করা সম্ভব হয়নি৷ বৃষ্টি থামলেই রাস্তাটিতে পুনরায় সংস্কার করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন৷
এদিকে, চুড়াইবাড়ি থেকে লোয়ারপোয়া পর্যন্ত এবং কাঁঠালতলী দিয়ে বিকল্প সড়কটির দিকে পূর্বতন আসাম সরকারের গাফিলতির কারণেই বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে৷ নিম্নমানের কাজ এবং দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে এখন এই দুটি সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে ওঠেছে৷ এর জন্য তিনি পূর্বতন আসাম সরকারকেই দায়ী করেছেন৷ শুধু তাই নয়, বর্ষা মরসুম শুরু হতেই ত্রিপুুরার লাইফ লাইন স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কাতে ছয়মাস আগেই কেন্দ্রীয় ভূতল সড়ক পরিবহন ও মহা সড়ক মন্ত্রকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে তিনি চিঠি পাঠিয়েছিলেন৷ অন্তত বর্ষার আগে কাঁঠালতলী দিয়ে বিকল্প সড়কটি যাতে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা যায় সে ব্যবস্থা নেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়েছিল৷ কিন্তু কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় আজ মারাত্মক সমস্যার মুখে পড়েছে ত্রিপুরা৷ পূর্ত দপ্তরের জাতীয় সড়ক শাখার মুখ্যবাস্তুকারের বক্তব্যে অনেকটাই স্পষ্ট বৃষ্টি না থামলে জাতীয় সড়ক স্বাভাবিক হচ্ছে না৷