নিজস্ব প্রতিনিধি, অমরপুর, ৪ জুলাই৷৷ পানীয় জল, বিদ্যুৎ, পর্যাপ্ত শিক্ষক সহ নানাবিধ সংস্যায় জর্জরিত হয়ে রয়েছে রাজ্যের গ্রাম পাহাড়ের সরকারী বিদ্যালয়গুলি৷ অথচ শিক্ষা বিপ্লবের দাবীদাররা শিক্ষায় বেসরকারীকরণের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেও সরকারী বিদ্যালয়গুলির দূরাবস্থা দূরীকরনের ব্যাপারে কোন কথা বলছে না৷ যার ফলে রাজ্যের গ্রামীন এলাকার বিদ্যালয়গুলি শিক্ষা ব্যবস্থা তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে৷
অমরপুর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অধীন চেলাগাং মুখ কলোনী মডেল হাইসুকল৷ নাম শুনে মনে হতে পারে বিদ্যালয়ের উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য হয়ত বিদ্যালয়ে নামের মধ্যে মডেল কথাটি ব্যবহার করা হয়েছে৷ কিন্তু না, বাস্তবটা এই রকম নয়৷ বরঞ্চ বলা চলে বিদ্যালয়ে নানান সমস্যার জন্য এক প্রকার ব্যঙ্গ করেই মডেল কথাটি ব্যবহার করেছে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর৷ কারন মডেল রাজ্যের ওই মডেল বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন সমস্যার জালে আবদ্ধ হয়ে রয়েছে৷ বিদ্যালয়ে গুনগত শিক্ষা দানের জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে শিক্ষক -শিক্ষিকা থাকা অবশ্যই৷ কিন্তু রাজ্য সরকারের ওই মডেল বিদ্যালয়টিতে পর্যাপ্ত পরিমানে শিক্ষক -শিক্ষিকার যথেষ্ট অভাব রয়েছে৷ প্রথম থেকে দশম শ্রেনী পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদানের জন্য বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছে মাত্র আঠার জন৷ বিভিন্ন বিষয়ের বিষয় শিক্ষকের অভাব রয়েছে৷ যার ফলস্বরূপ অল্প সংখ্যক শিক্ষকদের পক্ষে প্রতিদিন প্রথম থেকে দশম শ্রেনীর প্রতিটি বিষয়ে ক্লাস করানো কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়৷ কোন কারনে এক দুই জন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকলেও তো ছাত্র-ছাত্রীদের ঠিকমত পঠন পাঠন করানোই সম্ভব হয় না৷ প্রত্যন্ত এলাকার জনজাতি অংশের ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে পড়াশুনার উপর নির্ভরশীল৷ কিন্তু বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহনের জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাব থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে এলাকার অভিভাবকরা৷ পানীয় জলের অভাব বিদ্যালয়ে সমস্যাগুলি মধ্যে একটি অন্যতম৷ বিদ্যালয়ে একটি জলের ট্যাঙ্ক নির্মাণ করা হলেও তা এক প্রকার অকেজু হয়ে পরে রয়েছে৷ জলের পরিষেবা নিয়মিত না থাকায় মিড-জে মিল পরিচালনা করতে ব্যাঘাত ঘটছে বলে অভিযোগ৷ বিদ্যালয়টিতে জন্মলগ্ণ থেকে আজ পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা নেই৷ ফলে প্রচন্ড গরমের মধ্যেই ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন পাঠনকরতে হচ্ছে৷ যা ব্যাপক কষ্টসাধ্য ব্যাপার হলেও ছাত্র-ছাত্রীদের তা মানিয়ে নিতে হচ্ছে৷ এর ফলে অনেক ছাত্র-ছাত্রী গ্রীষ্ম কালিন তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যালয় আসতে চায় না৷ বিদ্যালয় শ্রেনী কক্ষগুলির শোচনীয় অবস্থা৷ শ্রেনীকক্ষের ভাঙ্গা টিনের ছাউনি দিয়ে বৃষ্টি আসলে অনবরত জল পড়ে৷ মডেল বিদ্যালয়টিতে বাউন্ডারি ওয়াল পর্যন্ত নেই৷ ফলে গবাদি পশুর অভাদ বিচরন ভূমিতে পরিনত হয়েছে বিদ্যালয়টি৷ আশ্চার্য্যের হলেও সত্যি যে মডেল তকমা ধারী বিদ্যালয়টির ছাত্র-ছাত্রীরা এক প্রকার বাধ্য হয়েই খোলা আকাশের নীচে বসে মিড-ডে মিলের খাবার খেঁতে হচ্ছে৷ পরিত্যক্ত স্থানে বসেই ছাত্র-ছাত্রীরা খাবার গ্রহন করছে৷ অভিযোগ মডেল রাজ্যের দাবীদাররা শিক্ষা বিপ্লবের নাম করে কেন্দ্রের সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যাপক হারে অর্থ এনে থাকলেও আজ পর্যন্ত চেলাগাং মুখ কলোনী মডেল উচ্চে বিদ্যালয়ের জন্য একটি ডাইনিং হল তৈরী করতে পারে নি৷ যার ফলে এই রাজ্যর গ্রাম পাহাড়ে শিক্ষা বিপ্লব অলিক স্বপ্ণই বলা যেতে পারে৷