নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ জুলাই৷৷ ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত সাসপেন্ডেড টিসিএস অফিসার পান্না আহমেদকে গ্রেপ্তারের দাবীতে শনিবার পশ্চিম মহিলা থানার সামনে প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিলে শামিল হয় বিজেপির মহিলা সংগঠন মহিলা মোর্চা৷ বিজেপির অন্যান্য সংগঠনগুলিও আন্দোলনে শামিল হয়৷ এর ফলে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক আকার ধারণ করে৷ পান্নাকে গ্রেপ্তারের সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি না পাওয়ায় আন্দোলনকারীরা পোস্টফিস চৌমুহনীতে পথ অবরোধেও শামিল হন৷ তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে৷ তীব্র যানজট দেখা দেয়৷ এ্যাম্বুলেন্স, নিরাপত্তা বাহিনীর পদস্থ আধিকারীক এবং মন্ত্রীর গাড়িও আটকে পড়ে৷ খবর পেয়ে আরক্ষা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারীকরা অবরোধ স্থলে ছুটে যান৷ পুলিশের সঙ্গে দস্তাদস্তিতে চারজন মহিলা কর্মী অল্পবিস্তর আহত হয়েছেন৷ তাদেরকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ তাতে আন্দোলন আরও তেজি হয়ে উঠে৷ শেষ পর্যন্ত আরক্ষা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারীকরা পান্না আহমেদকে গ্রেপ্তারের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আন্দোলনকারীদের আশ্বস্থ করেন৷ এরপরই তারা অবরোধ ও বিক্ষোভ আন্দোলন আপাতত প্রত্যাহার করে নেন৷ এদিকে, বিজেপির তরফে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই ইস্যুতে তারা রাজ্যব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে৷ উল্লেখ্য গত ২৯শে জুন দক্ষিণ রামনগরে পান্না আহমেদের বাড়িতে এক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলাকে ঘরে আটকে রেখে ধর্ষণ করে সাসপেন্ডেড টিসিএস অফিসার পান্না আহমেদ৷ চারদিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি৷ পান্না আহমেদ রাজ্যান্তরী হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ উদ্ভোত পরিস্থিতিতে রাজ্য আরক্ষা প্রশাসন তাকে গ্রেপ্তারের জন্য রেড কর্ণার নোটিশ জারীর প্রস্তুতিও নিচ্ছে৷ প্রসঙ্গত, সাসপেন্ডেড টিসিএস অফিসার পান্না আহমেদের এই নারকীয় ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকার পক্ষ রীতিমতো বেকায়দায় পড়েছে৷ রাজ্যে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ সহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির অভিযোগ এনে বিজেপি সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি আন্দোলনে ঝড় তোলার উদ্যোগ নিয়েছে৷ শাসক দল সিপিআইএম ঘটনার পর বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার কিছুটা প্রয়াস নিলেও বর্তমানে সেই পথ থেকে পিছু হঠেছে৷ এই ইস্যুতে শাসক দলের নেতাদের মুখ থেকে আর কোনও বক্তব্য শোনা যাচ্ছে না৷ এদিকে, শাসক দলের নারী সংগঠন গণতান্ত্রিক নারী সমিতি দেশ বিদেশের নারী নির্যাতনের ঘটনায় হাঁটঘাট কাঁপালেও রাজ্যে একজন টিসিএস অফিসার কর্তৃক মহিলা ধর্ষণের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে৷ বিষয়টি রাজ্যবাসীর কাছেও বেমানান হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ নারী সংগঠনের প্রকৃত ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ণ উঠেছে৷ খোদ শাসক দলের অভ্যন্তরেও এই নিয়ে বিতর্ক ক্রমশই চাঙ্গা হচ্ছে৷