কলকাতা, ১৪ জুন ঃ পণ্য পরিষেবা কর বা জিএসটি নিয়ে এমপাওয়ার্ড কমিটির ডাকে কলকাতায় বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন

সমস্ত রাজ্যের প্রতিনিধিরা৷ ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সহ ২২টি রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ও সাত রাজ্যের আধিকারিক৷ মূল লক্ষ্য পণ্য পরিষেবা কর বা জিএসটি নিয়ে মতভেদ দূর করা৷ সে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির৷ তিনি বললেন, জিএসটির পক্ষে তামিলনাড়ু ছাড়া মত দিয়েছে সমস্ত রাজ্য৷
কলকাতায় শুরু হল দুই দিনের জিএসটি কমিটির বৈঠক, মঙ্গলবার শুরু হয় দেশের সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত জিএসটি কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি৷ ছিলেন ২২ রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা৷ এদিন জেটলি বলেন, জিএসটি নিয়ে সংশোধনী আনবে কেন্দ্র৷ আসন্ন বাদল অধিবেশনেই এই সংশোধনী পেশ করা হবে৷ এর ফলে পণ্য পরিষেবা করের উধর্বসীমা আর সাংবিধানিকভাবে বেঁধে দেওয়া হবে না৷ করের উধর্বসীমা ঠিক করবে পণ্য ও পরিষেবা কর সংক্রান্ত কমিটি৷ ২২ রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের সভাপতিত্বে ১৪ ও ১৫ জুন দুই দিনের পণ্য ও পরিষেবা কর সংক্রান্ত (জিএসটি) কমিটি বা এমপাওয়ার্ড কমিটি অফ স্টেট ফিনান্স মিনিস্টারদের এই বৈঠক শুরু হয়েছে মঙ্গলবার৷
দু’দিনের এই বৈঠকের প্রথমদিনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি৷ কমিটি বৈঠকে, পণ্য ও পরিষেবা কর সংক্রান্ত বিলের মূল খসড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজ্যগুলির নিজস্ব জিএসটি আইন তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে৷ এর পাশাপাশি আন্তঃরাজ্য পণ্য ও পরিষেবা আদান প্রদানের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে৷ কেন্দ্রের তরফে ইতিমধ্যেই আন্তঃরাজ্য পণ্য বিনিময়ে অতিরিক্ত ১ শতাংশ কর ধার্য্য করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ যার বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস৷ শিল্প মহলের তরফেও এই অতিরিক্ত কর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে৷ কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এর ফলে পণ্যমূল্যের উপর প্রভাব পার আশঙ্কা থাকবে৷ এর আগে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি একাধিকবার জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার জিএসটি বিল পাশে বদ্ধপরিকর৷ লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে পাশ হলেও রাজ্যসভায় বিরোধীদের আপত্তিতে আটকে রয়েছে জিএসটি বিল৷ তবে জিএসটি নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো সবুজ সঙ্গেত দিয়েছেন৷ সেই সঙ্গে সম্প্রতি রাজ্যসভার নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির ব্যবধান অনেকটাই কমে গেছে৷ এই অবস্থায় আজ জি এস টি নিয়ে সাংবিধানিক সংশোধনীটি সর্বসম্মতিক্রমে হওয়ায় আগামী বাদল অধিবেশন রাজ্যসভায় এই বিল পাশ করাতে মোদী সরকারের কোনও বাধা থাকার কথা নয়৷
মঙ্গলবারের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, পণ্য পরিষেবা করের উর্দ্ধসীমা নির্ধারণে সাংবিধানিক ব্যবস্থা রাখা হবে না৷ এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জিএসটি পরিষদ৷ জিএসটি চালু হওয়ার পর কোনো রাজ্য আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে, টানা পাঁচ বছর কেন্দ্র সে ক্ষতি পুষিয়ে দেবেও বলে আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, ক্ষতি পুষিয়ে দিলে, জিএসটি প্রশ্ণে আপত্তি নেই রাজ্যের৷
জিএসটি প্রশ্ণে তৃণমূল প্রথমে আপত্তি তুললেও, এখন সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রের দিকে৷ কিন্তু, গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠবে কংগ্রেসের অবস্থান৷
বাদল অধিবেশনেই জিএসটি নিয়ে সংবিধান সংশোধনী বিল আনা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী৷ কিন্তু, কংগ্রেস জিএসটি বিলের সংশোধনী চেয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে৷ তাদের মূল দাবি করের উর্দ্ধসীমা ১৮ শতাংশ রাখতে হবে৷ জিএসটি পরিষদে ৭৫ শতাংশ ভোট রাখতে হবে রাজ্যগুলির হাতে৷ পুরসভা ও পঞ্চায়েত রাজস্ব নিরাপদ রাখতে রক্ষাকবচ তৈরি করতে হবে৷ কংগ্রেস সম্মত না হলে এই বিল পাস কি সম্ভব? কারণ সংবিধান সংশোধনী আনতে হলে সংসদের দুই কক্ষেই প্রয়োজন দুই-তৃতীয়াংশ ভোট৷

