নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ এপ্রিল৷৷ ধর্মীয় প্রবাদ অনুযায়ী দেব দেবীর মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটলে দেব দেবীরাই কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন৷ কিন্তু, আজকালকার দিনে চোরেরা এইসব ধর্মীয় প্রবাদের তোয়াক্কা করে না৷ তারা দেব দেবীর মন্দিরে হানা দিয়ে প্রণামির টাকা পয়সা সহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী হাতিয়ে নিয়ে যেতে নূ্যনতম ভয় পাচ্ছে না৷ এই ধরনেরই একাধিক ঘটনা গত আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে ঘটেছে দক্ষিণ জেলার বিলোনীয়ায়৷ গত বৃহস্পতিবার রাতে বিলোনীয়া শহরের গিরিধারী টিলায় রক্ষা কালীবাড়িতে চোরেরা হানা দেয়৷ সেখানে প্রণামী বাক্সের টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে যায় চোরেরা৷ শুক্রবার রাতেও মহামায়া কালীবাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে৷ কয়েকটি শনি মন্দিরের প্রণামী বাক্স ভেঙ্গেও টাকা পয়সা নিয়ে গেছে চোরেরা৷ মহামায়া কালীবাড়ির দূরত্ব জেলা পুলিশ সুপারের অফিস থেকে বড়জোর ৭০-৭৫ ফুট৷ পুলিশ লাইন থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব মাত্র একশ মিটার৷ এই নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যেই শনি মন্দিরের প্রণামী বাক্স ভেঙ্গে টাকা পয়সা নিয়ে গিয়েছে চোরেরা৷ পরপর এইসব চুরির ঘটনায় ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷
উল্লেখ্য বিলোনীয়া শহর ও শহরতলী এলাকায় গত বেশ কিছুদিন ধরেই ব্যাপক হারে চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে৷ এসব চুরির ঘটনা প্রতিহত করতে স্থানীয় পুলিশ তেমন কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ৷ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী এবং পুলিশের দ্বিচারিতার কারণেই শহর ও শহরতলী এলাকায় চুরির প্রবণতা ক্রমশই বেড়ে চলেছে৷ আন্তর্জাতিক সীমানা ডিঙিয়ে বাংলাদেশী চোরেরা প্রতিনিয়তই ঢুকছে৷ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী অনুপ্রবেশ রোধে গঠনমূলক ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হচ্ছে না৷ পুলিশও নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে৷ এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মতামত জানতে চাওয়া হলে বিএসএফ এইসব ঘটনার জন্য পুলিশকে দায়ী করে চলেছে৷ এবং পুলিশ পাল্টা অভিযোগ আনছে বিএসএফের বিরুদ্ধে৷ পুলিশ ও বিএসএফের মধ্যে এই টানাপোড়েনের ঘটনায় সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিলোনীয়া শহর ও শহরতলী এলাকার মানুষজন৷ চুরি ছিনতাই ও অসামাজিক কাজকর্ম প্রতিহত করার লক্ষ্যে বিএসএফ পুলিশ ও স্থানীয় জনগণকে যৌথ প্রয়াস নেওয়ার জন্য অনেকেই দাবী তুলেছেন৷ কিন্তু কে শুনে কার কথা৷ বিলোনীয়ার লোকজন যেমন রাতে না কে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন তেমনি পুলিশ ও বিএসএফ পরস্পরকে দোষারোপ করে দায়িত্ব খালাস করার কৌশল নিচ্ছে৷ তাতে আখেরে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ মানুষ৷
2016-04-10