দিল্লী ও ঢাকায় বসে দুই প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সে আজ বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও ইন্টারনেট গেইটওয়ের উদ্বোধন

PM MODI HASINAনিখিল চন্দ্র ভদ্র ০ ঢাকা
সন্দীপ বিশ্বাস ০ আগরতলা
২২ মার্চ৷৷ বিদ্যুৎ রপ্তানি এবং ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ আমদানির মাধ্যমে বুধবার এক ঐতিহাসিক মুহুর্তের সাক্ষী হতে চলেছেন ভারত ও বাংলাদেশ৷ তার সাথে অংশীদারিত্বে ত্রিপুরাবাসী৷ ত্রিপুরা থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য বাংলাদেশে আন্তঃদেশীয় গ্রিড সংযোগের উদ্বোধন হচ্ছে বুধবার৷ একই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে দশ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ ভারতে রপ্তানিও শুরু হবে৷ সকাল দশটায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন৷ এই সময় রাজ্য সচিবালয়ে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷
মঙ্গলবার ঢাকায় বিদ্যুৎ ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এই কার্যক্রমের উদ্বোধনের সংবাদ তুলে ধরেন৷ তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে ভারতের ত্রিপুরা থেকে বাংলদেশের কুমিল্লায় ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে৷ এই বিদ্যুৎ কুমিল্লা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ব্যবহৃত হবে৷ আমদানিকৃত এই বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের দাম পড়বে বাংলাদেশী টাকায় ৬৫০ টাকা৷ বন্ধুসুলভ মনোভাব রেখে ভারত আমাদের এই বিদ্যুৎ দিচ্ছে৷ ত্রিপুরা থেকে ভবিষ্যত আরো বিদ্যুৎ আমদানির জন্য অনুরোধ করেছি৷ আশা করছি ভবিষ্যতে ত্রিপুরা থেকে আরো ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে৷ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবিএল) সূত্রে জানা যায়, ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশের কুমিল্লা পর্যন্ত ৪০০ কেভি ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে দ্বিতীয় আন্তঃদেশীয় গ্রিড সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে৷ এর আগে ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেরামারায় পিজিসিবিএল নির্মিত প্রথম আন্তঃদেশীয় গ্রিড সংযোগের মাধ্যমে কম বেশি ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়েছে৷
কারিগরি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পিজিসিবিএল ত্রিপুরা সীমান্ত হতে কুমিল্লা (উঃ) উপকেন্দ্র পর্যন্ত ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন, কুমিল্লা (উঃ) উপকেন্দ্র হতে কুমিল্লা (দঃ) উপকেন্দ্র পর্যন্ত ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাইন এবং কুমিল্লা (দঃ) উপকেন্দ্রে ২টি ১৩২ কেভি নির্মাণ করেছে৷ ত্রিপুরা থেকে কুমিল্লা (দঃ উপকেন্দ্র) গ্রিড আন্তঃসংযোগ প্রকল্পের আওতায় কাজটি শেষ করার পর গত ২৮ ডিসেম্বর ১৩২ কেভি ভোল্টেজ দিয়ে লাইনটি চালু করা হয়৷ এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হয়েছে ১৭১৪২ কোটি টাকা৷ বাংলাদেশ সরকার এবং পিজিসিবিএল যৌথভাবে একাজে অর্থায়ন করেছে৷ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ অংশে ৪৭কিমি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ ও সংশ্লিষ্ট সাবস্টেশনে সম্প্রসারণ কাজ করা হয়েছে৷
এদিকে, বাংলাদেশ থেকে ১০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ রাজ্যে আমদানিও শুরু হচ্ছে বুধবার থেকে৷ বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থার চাহিদা অনুযায়ী দেশে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ সরবরাহের পর উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইথ ভারতে রপ্তানি করতেই গত ১৬ ডিসেম্বর আখাউড়া স্থলবন্দরের পাশে জিরো পয়েন্টের কাছে বিএসএনএল স্থাপিত অপটিক্যাল ফাইবারের সঙ্গে বিটিসিএলের (বাংলাদেশ টেলিকম কোম্পানি লিমিটেড) রিডান্ডেন্সি স্থাপিত হয়৷ বিএসএনএল সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে দশ গিগাবাইট পরিমাণ ব্যান্ডউইথ আমদানির কথা থাকলেও পরবর্তীতে ধাপে ধাপে ৪০ গিগাবাইট পরিমাণ ব্যান্ডউইথ আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে৷ এদিকে, এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে দুই রাষ্ট্রের মধ্যে প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়ে গেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *