BRAKING NEWS

নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও জ্বালানীর পর্যাপ্ত মজুত, বর্ষা নিয়ে চিন্তিত রাজ্য সরকার, এফসিআই আইওসি ও রেলওয়েকে নিয়ে বৈঠকে গুচ্ছ প্রস্তাব

meetingনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ মার্চ৷৷ সামনেই বর্ষা মরশুম৷ ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী এবং জ্বালানি মজুত নিয়ে চিন্তিত রাজ্য সরকার৷ সেই লক্ষ্যে আইওসি, এফসিআই এবং উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে আজ মহাকরণে জরুরি বৈঠক করেন খাদ্য ও পরিবহনমন্ত্রী মানিক দে৷ তাতে, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী এবং জ্বালানি মজুত করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব রেখেছে রাজ্য সরকার৷ জ্বালানি সমস্যা সমাধানে এবং মজুত বাড়াতে আইওসিকে পেট্রোল-ডিজেলের ট্যাঙ্কারের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী৷ পাশাপাশি ধর্মনগরে যে তেল ডিপো রয়েছে সেখানে বর্তমানে মিটারগেজ রেল লাইনটি ব্রডগেজে রূপান্তর করার জন্য পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলের পদস্থ আধিকারিকদের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি৷ বর্তমানে ধর্মনগর তেল ডিপোতে যে মিটার গেজ লাইনটি রয়েছে সেটি ব্রডগেজে রূপান্তর করা হলে রেলের মাধ্যমে তেল মজুত করা সম্ভব হবে৷ এই বৈঠকে তেল ডিপো পর্যন্ত রেল লাইন নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা উঠে আসে৷ তাতে পরিবহনমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছেন রেল, এফসিআই এবং আইওসির প্রতিনিধিগণ যেন গুয়াহাটিতে বৈঠক ডেকে সব সমস্যা সমাধান করে নেয়৷ ঠিক হয়েছে রেলের পক্ষ থেকেই এই বৈঠক ডাকা হবে৷
এদিকে, খাদ্যমন্ত্রী রাজ্যে রান্নার গ্যাসের সংকট সমাধানে হলদিয়া থেকে বাংলাদেশ হয়ে বুলেট আনার প্রস্তাব আইওসির কাছে রেখেছেন৷ তাঁর যুক্তি, বর্ষা মরশুমে আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়কের বেহাল দশা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল৷ সেক্ষেত্রে রাজ্যে রান্নার গ্যাসের সংকট সমাধানে হলদিয়া থেকে বাংলাদেশ হয়ে বুলেট আনা যেতে পারে৷ এবিষয়ে ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক এবং বিদেশমন্ত্রককে চিঠি দিয়েছে৷ খাদ্যমন্ত্রী এদিন, এফসিআইকে অনুরোধ করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে যেন তাদের পক্ষ থেকেও উদ্যোগ নেওয়া হয়৷
এদিন বৈঠক শেষে খাদ্য ও পরিবহনমন্ত্রী মানিক দে জানান, এফসিআই, আইওসি এবং পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলের পদস্থ আধিকারিকদের সাথে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে৷ সমস্যা সমাধানে তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷ রাজ্যের সমস্যা সমাধানে প্রস্তাবগুলির প্রতি আন্তরিক হবেন বলে রেল, এফসিআই এবং আইওসির আধিকারিকরা আশ্বাস দিয়েছেন৷ এদিন পরিবহনমন্ত্রী আরো জানান, রাজ্যে ব্রডগেজে যাত্রী রেল পরিষেবার শুরুর দিন থেকেই সরাসরি শিলচর, কলকাতা এবং দিল্লি পর্যন্ত সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেন যাতে দেওয়া হয় তার জন্য পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ের কাছে দাবি পুনরায় রেখেছেন৷ এরই পাশাপাশি মিটারগেজে যে সমস্ত ট্রেনগুলি চলাচল করত তা পূর্বের সূচী অনুযায়ী ব্রডগেজেও চালু রাখার জন্য রেলওয়ে আধিকারিকদের বলেন তিনি৷
এদিকে, বৈঠক শেষে পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলওয়ের নির্মাণ এবং পরিচালন শাখার জেনারেল ম্যানেজার এইচ কে জাগ্গি জানান, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে সেফটি কমিশনার বদরপুর থেকে আগরতলা পর্যন্ত রেল লাইনের নিরাপত্তার বিষয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখবেন৷ ২৬ কিংবা ২৭ মার্চ থেকে সেফটি কমিশনার পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করবেন৷ তাতে ছয়-সাতদিন সময় লাগবে৷ সেফটি কমিশনারের কাছ থেকে সবুজ সংকেত মিললেই আগরতলা থেকে যাত্রী রেল পরিষেবা শুরু হয়ে যাবে৷ তবে, অনেক সময় সেফটি কমিশনার রেল লাইনের নিরাপত্তার বিষয়টি আরো শক্তিশালী করার নিরিখে নির্দিষ্ট কিছু মতামত দিয়ে থাকেন৷ বদরপুর-আগরতলা রুটেও যদি সেফটি কমিশনার রেল লাইনের পর্যবেক্ষণে এমন কোন মতামত দেন তাহলে সেগুলি পূরণ করতে কিছু সময় লাগবে৷ তবে, বদরপুর-আগরতলা পর্যন্ত ব্রডগেজে রেল লাইনের কাজ যথেষ্ট সন্তোষজনক বলে শ্রী জাগ্গি মন্তব্য করেছেন৷ এদিকে, আগরতলা-আখাউড়া রেলসংযোগের বিষয়ে জমি অধিগ্রহণের জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা নিয়ে জটিলতার অবসান হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন৷ ডোনারমন্ত্রক জমি অধিগ্রহণের টাকা দেবে৷ খুব শীঘ্রই ডোনারমন্ত্রক থেকে অর্থ বরাদ্দ করা হবে এবং জমি অধিগ্রহণের কাজও খুব শীঘ্রই শুরু হবে বলে তিনি জানিয়েছেন৷
এদিন, বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব ওয়াইপি সিং, প্রধান সচিব এস কে রাকেশ, খাদ্য দপ্তরের প্রধান সচিব সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিবহন সচিব সমরজিৎ ভৌমিক সহ পদস্থ আধিকারিকরা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *