BRAKING NEWS

যৌতুকের জন্য আগুনে পোড়ানো হল দুই গৃহবধূকে, অপরজন থানার দ্বারস্থ

FIRE VICTIMনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ মার্চ৷৷ রাজ্যে নারী সংক্রান্ত অপরাধ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে৷ বিশেষ করে পনের জন্য এই ধরনের নির্যাতন সংঘটিত হচ্ছে৷ রাজ্যের পৃথক স্থানে দুই গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য আগুনে পোড়ানো হয়েছে৷ একজন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন৷
রাজধানীর পূর্ব আগরতলা থানার অধীন সুভাষনগর এলাকায় বিশাখা বিশ্বাস (ভৌমিক) নামের আরও এক গৃহবধূ আজ সকালে অগ্ণিদগ্দ অবস্থায় জি বি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে৷ তার বাপের বাড়ির লোকজনদের অভিযোগ স্বামী চন্দন ভৌমিক তার উপর অমানুষিক অত্যাচার করতো৷ তাই সে আগুন দিয়েছে শরীরে৷ বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় জি বি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷বিশালগড়ে এক গৃহবধূ অগ্ণিদগ্দ হয়ে জিবি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে৷ গৃহবধূটির নাম পিঙ্কি দাস৷ গৃহবধূ তার শাশুড়িকে এজন্য দায়ী করেছে৷
বিশালগড়ে পিঙ্কি দাস নামে এক গৃহবধূ অগ্ণিদগ্দ হয়েছে৷ তাকে প্রথমে বিশালগড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জিবিতে স্থানান্তর করা হয়েছে৷ মহিলার শরীরের সিংহভাগ আগুনে ঝলসে গেছে৷ উনুনে গাছের পাতা ফুড়িয়ে এনে রান্না করার সময় গৃহবধূটি অগ্ণিদগ্দ হয়েছে৷ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহবধূটি জবানবন্দীতে বলেছেন লাউ গাছের ঝাড়ঝোঁপ থেকে পাতা ডালা ইত্যাদি না আনার জন্য বলেছিল তার শাশুড়ি৷ তবুও সে পাতা এনে উনুনের কাছে জমাকৃত করে রেখে সেখানে বসেই রান্না করছিল গৃহবধূটি৷ হঠাৎ তার পরিধেয় কাপড় ও শরীরে আগুন ধরে যায়৷ গৃহবধূটির আশঙ্কা তার শাশুড়ি ছায়ারানি দাস তার অলক্ষ্যে পাতার স্তূপে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে এবং সেখান থেকেই তার গায়ে আগুন লেগেছে৷ গৃহবধূটি জানায়, বিয়ের পর থেকেই তার শাশুড়ি তার সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ করে আসছিল৷ কোন কিছুতেই ধরলেই মারতে আসে৷ স্বামীর নাম জীবন দাস পেশায় জেলে৷
বিশালগড় থানার পুলিশ এব্যাপারে একটি মামলা গ্রহণ করেছে৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত করেছে৷ তবে, কাউকে গ্রেপ্তারের সংবাদ নেই৷ গৃহবধূ অগ্ণিদগ্দ হওয়ার ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷
এই রাজ্যে ক্রমাগত নারী নির্যাতন বেড়ে চলছে৷ স্বামীর দৈহিক নির্যাতনের কারনে প্রাণ রক্ষার তাগিদে নিকট আত্মীয়ের বাড়িতে অস্থায়ী ভাবে বসবাসের পর অবশেষে ত্রিপুরা হিউমেন রাইটস অর্গানাইজেশনের এক প্রতিনিধি দলকে নিয়ে নির্যাতিতা গৃহবধু তেলিয়ামুড়া থানার মামলা দায়ের করে স্বামীর বিরুদ্ধে৷
বিগত সাত বছর পূর্বে তেলিয়ামুড়া থানার কালিটিলার সরকারী কর্মী শ্যামল দেবের সাথে সাত পাকের বন্ধনে অবদ্ধ হয় নিভা মারাক৷ শ্রীমতি মারাক তেলিয়ামুড়া গ্রামীণ হাসপাতালে স্টাফ নার্সের চাকুরী করেন৷ সেই সুবাদে তেলিয়ামুড়া গ্রামীণ হাসপাতালের কোয়ার্টার কমপ্লেক্সে সরকারী আবাসনে বসবাস করছে দীর্ঘ বছর ধরে৷ এদিকে বছর দুই এক পূর্বে নিভা মারাক একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়৷ নিভা মারাক অভিযোগ করে জানান, বিয়ের করেক মাস পরে স্বামী শ্যামল দেব (তেলিয়ামুড়া আর ডি ব্লকের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী) অকন্ঠ মদ্য পান করে নিভা মারাকের উপর বেধরক মারধোর করত৷ এমনকি প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও থাকতো তার কথায়৷ গত মাসের ২৭ তারিখে স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় শ্রীমতি মারাক৷ যদিও দুই বছরের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে, স্বামী শ্যামল দেব মেয়েকে নিয়ে যেতে দেয়নি৷ ফলে একাই বাড়ী থেকে বের হয়ে খোয়াই এর জাম্বুরা এলাকার একজন আত্মীয়ের বাড়ীতে চলে যায়৷ সেখান থেকে ত্রিপুরা হিউমেন রাইটস অর্গানাইজেশন খোয়াই কমিটির সহযোগিতায় তেলিয়ামুড়া থানার এসে পৌঁছায়৷ এদিনই স্বামী শ্যামল দেবের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন৷
ত্রিপুরা হিউমেন রাইটস অর্গানাইজেশন খোয়াই জেলা কমিটি পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সম্পাদক আশিষ মুর্খাজীসহ ছয় জনের একটি প্রতিনিধি দল৷ তবে নির্যাতিতা নিভা মারাক স্বামী শাস্তির পাশাপাশি দুই বছরের কন্যা সন্ত্যানকে ফিরে পাওয়ার দাবী রাখেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *