নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ মার্চ৷৷ পেনশনার্সদের জন্য নবনির্মিত আবাসনের উদ্বোধন হয় সোমবার৷ এই অনুষ্ঠানে এলাকার বিধায়ককে আমন্ত্রণ না জানানোতে চটে লাল দলীয় কর্মী সমর্থকরা দক্ষযজ্ঞ বাধায় অনুষ্ঠানস্থলে৷ এলাকার বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা সুদীপরায় বর্মণকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি এই আবাসন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে৷ তাতে অনুষ্ঠান শুরু হলে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে৷ তাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আবাসন চত্বর৷ ফলে, পুলিশ বাহিনীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়৷ উপস্থিত জনগণের অভিযোগ সুদীপবাবুর নির্দেশেই দক্ষযজ্ঞ বাধায় কংগ্রেস কর্মীরা৷ তবে, এধরনের সরকারি অনুষ্ঠানে এলাকার বিধায়ককে ব্রাত্য রেখে নীতিগতভাবে ঠিক করেনি রাজ্য সরকার এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে দোস্তি রাজ্যে কুস্তি, এনিয়েও সমালোচিত হচ্ছে কংগ্রেস-সিপিএম উভয়েই৷
উল্লেখ্য, সোমবার আগরতলা কুঞ্জবনস্থিত নব নির্মিত পেনশনার্স আবাস- আশ্রয় এর পথ চলা শুরু হল৷ আজ বিকেলে এই অনুষ্ঠানে ফিতা কেটে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এর উদ্বোধন করেন৷ ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সুদৃশ্য এই বহুতল বাড়ীটি সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে ত্রিপুরা হাউজিং এন্ড কনষ্ট্রাকশন বোর্ড এটি নির্মাণ করেছে৷ এতে ব্যয় হয়েছে ৯ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা৷ বহুতল বিশিষ্ট এই আবাসে দুই শয্যার ঘর রয়েছে ৪২ টি এবং চার শয্যার ৫টি৷ ১০৮ আসন বিশিষ্ট একি অডিটোরিয়ামও রয়েছে৷ এছাড়া, গ্রাউন্ড ফ্লোরে অন্যান্য ১২ টি রুম, ফাস্ট ফ্লোরে ৫টি, সেকেন্ড ফ্লোরে ২টি এবং থার্ড ফ্লোরে ১টি রুম রয়েছে৷ পেনশানর্স আবাসের উদ্বোধন করে প্রধান আতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, রাজ্যে সরকারী কাজে যারা যুক্ত ছিলেন অবসর গ্রহণের পর যাদের দেকার কেউ থাকেনা, অবহেলার পাত্র হিসেবে চিহ্ণিত হন তাদের জন্য রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ত্রিপুরায় প্রথম এই আবাস নির্মান করা হয়েছে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই বাড়ীটি একটি সোসাইটির মাধ্যমে পরিচালিত হবে৷ আবাসিকরা কম খরচে যাতে থাকতে পারেন তা নির্ধারণ করবে সোসাইটি৷ তিনি বলেন, যারা এখানে কাজ করবেন তাদেরকে আবাসিকদের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে৷ বাড়ীঘরে নিজেেদর মা বাবা বা বয়োজেষ্ঠদের যে ভাবে দেখভাল করেন সেই ভাবে দেখতে হবে৷ পেনশনার্সদের মধ্যে যারা আশ্রয় নেবেন তাদের অর্জিত জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে৷ কোন আচরণ যাতে আবাসিকদের দু,খের কারণ না হয় তা দেখতে হবে৷ যারা এখানে কাজ করবেন তারা শ্রদ্ধার সাথে নিজেদের দ্বায়িত্ব পালন করবেন বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, আবাসিকদের দেখার জন্য একজন ডাক্তার নিয়মিতভাবে আসবেন৷ নার্স থাকবেন৷ এছাড়া, ১টি এম্বুলেন্স রাখার প্রতিও নজর দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান৷ ছেলে মেয়েদেরকে সমাজের প্রতি দায়বোধ জাগ্রত করতে অভিভাকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সাধারণ মুূল্যবোধ সম্পর্কে ছোট বেলা থেকেই ছেলে মেয়েদের শেখবার চেষ্টা করতে হবে৷ ভাল মানুষ করতে হবূে, সুনাগরিক করার জন্য৷ ছেলে মেয়ে থেকেও যাতে অন্যত্র আশ্রয় নিতে না হয় তা দেখতে হবে৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী পেনশনার্স হীরেন্দ্র চক্রবর্তীর হাতে ঘরের চাবি তুলে দেন৷
এই অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা মন্ত্রী বিজিতা নাথ বলেন, পেনশনার্সদের জন্য এই আশ্রয় নির্মিত হয়েছে৷ আবাসিক ছাড়াও আগরতলার বাইরের পেনশনার্সরা চিকিৎসার জন্য আগরতলায় এলে এখানে তাদের থাকার সুযোগ থাকবে৷ তিনি এই আবাস যাতে সুন্দরভাবে পরিচালিত করা যায় তার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন৷
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা গভ, পেনশনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ দাম৷ স্বাগত ভাষম দেন সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব চৈতন্য মুর্তি৷ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন দপ্তরের অধিকর্তা ডি ডালং৷