নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ মার্চ৷৷ কাজের নিরিখে পরিচিতি, জাতপাতের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করলে চলবে না৷ কোন কাজই ছোট নয়৷ শুক্রবার প্রজ্ঞাভবনে দক্ষতা বিকাশ শীর্ষক কর্মশালায় এই চিন্তাধারা নিয়ে আলোচনায় বিশেষভাবে প্রাধান্য পেয়েছে৷ দেশের প্রখ্যাত হেয়ার ড্রেসার জাভেদ হাবিব থেকে শুরু করে রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী তপন চক্রবর্তীও একই সুরে সওয়াল করেন৷
ক্ষৌরকার মূলত নির্দিষ্ট জাতির হবেন সেই চিন্তাধারাই বদলাতে হবে৷ এবিষয়ে প্রখ্যাত হেয়ার ড্রেসার জাভেদ হাবিব নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কেশবিন্যাস মানুষের সাথে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জুড়ে রয়েছে৷ অথচ ক্ষোরকারদের অনেকেই নির্দিষ্ট জাতির বলে তাঁদের হেয় করা হয়৷ এই চিন্তাধারার বদল ঘটাতে হবে৷ আজ সারা বিশ্বে ক্ষোরকারদের বিরাট চাহিদা৷ কেশবিন্যাস নিয়ে ব্যবসারও রমরমা৷ চোখ ঝলসানো কেশবিন্যাস আজ আধুনিক সমাজের মূল আকর্ষণের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ সেক্ষেত্রে মানুষ এখন আর অর্থের চিন্তা করেন না৷ ফলে অনেক সম্ভ্রান্ত ঘরের ছেলে মেয়েরা এখন এই শিল্পের সাথে নিজেদের যুক্ত করছেন৷ তাতে অর্থ উপার্জনও হচ্ছে৷ তিনি বলেন, এরাজ্যে দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচীর অঙ্গ হিসেবে এই শিল্পের সাথে যারা যুক্ত হতে চাইবেন তাঁদের সমস্ত সহযোগিতা করবেন৷ তবে, তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ক্ষোরকারদের আমাদের সমাজ ছোট করে রেখেছে৷ কিন্তু বর্তমান সময়ে বৃহত্তর পৃথিবী তাদের জন্য অপেক্ষা করছে বলে এদিনের কর্মশালায় উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে তিনি বার্তা দেন৷
এদিন রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী তপন চক্রবর্তীও জাভেদ হাবিবের সুরে সুর মিলিয়ে বলেন, কোন কাজই ছোট নয়৷ পুথিগত বিদ্যার বাইরে প্রয়োজন দক্ষতা বিকাশের৷ ফলে, দক্ষতা বিকাশ ঘটলে যে কাজই হোক সাফলতা মিলবেই৷ এদিন তিনি কেবল সরকারী চাকুরী অপেক্ষায় বসে না থেকে স্বরোজগারী হবার জন্য পরামর্শ দেন৷ তবে এর জন্য প্রয়োজন দক্ষতা বিকাশের৷ সেই উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বাস্তবায়ণে রাজ্যেও দক্ষতা বিকাশের কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়েছে৷ এবিষয়ে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী জানান, সারা রাজ্য থেকে ১৯২৪ জনকে বাছাই করে দক্ষতা বিকাশের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে৷ তাতে প্রত্যেক জেলা থেকে প্রায় ২০০ জনকে বাছাই করা হয়েছে৷ এদিন তিনি জানান, দক্ষতা বিকাশ ডিরেক্টরেটের নতুন অফিসের আজ উদ্বোধন হয়ে গেছে৷ গতবছর কাগজে পত্রে শুরু হয়েছিল৷ গত দু’মাস আগে পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হয়ে গেছে৷ আজ এরই অঙ্গ হিসেবে দক্ষতা বিকাশের প্রশিক্ষণের জন্য বাছাইকৃতদের নিয়ে কর্মশালারও আয়োজন করা হয়েছে৷ মূলতঃ যুবক যুবতীদের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের দিক থেকে কোন ঘাটতি নেই বলে এদিন শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রীর দাবি৷ ফলে, এই কর্মশালার সুযোগ নেওয়ার জন্য তিনি সকলের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানান৷ এদিকে, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের প্রধান সচিব এম নাগারাজুও যে কোন কাজকে সম্মান করার পক্ষে সওয়াল করেন৷ তাঁর মতে, কাজ করার ক্ষেত্রে দক্ষতাই মূল৷ তাতে যে কাজই হউক, তাকে সম্মান করা উচিত৷
এদিনের কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এনএসডিসি এডভাইজার মৃদুল কুমার ধানিওয়াল, এসএসসি’র এ রমেশ, ইন্ডাসের অধিকর্তা কুশল মিত্র এবং এসএইটি(এনইআর)’র এডভাইজার অসিম কৃষ্ণ দাস৷ এছাড়াও ছিলেন, টাটা মোটর্সের ডিরেক্টর বিনোদ কুলকার্নি এবং ঊষা ইন্ড্রাস্ট্রিজ এর ডিরেক্টর প্রিয়া সুমিয়া৷ এদিন, দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচীর অন্তর্গত আইআইআইএম লিমিটেডের সহযোগিতায় জাবেদ হাবিব একাডেমি, টাটা মোটর্স এবং ঊষা ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডে সাথে স্মারকপত্র চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় রাজ্য সরকারের৷
2016-03-12

