‌আদালতের নির্দেশে দুটি মামলাতেই জামিন পেলেন ঋতব্রত

বালুরঘাট, ২৭ নভেম্বর (হি.স.): ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত সিপিএমের বহিষ্কৃত সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের জামিন মঞ্জুর করলেন বিচারক।

সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়৷

সোমবার এই মামলায় আত্মসমর্পনের পরে ৫ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পান তিনি। অপরদিকে নির্যাতিতা যুবতির পক্ষ থেকে অন্য একটি মামলার শুনানি ছিল এদিন। তবে তদন্ত অসম্পূর্ণ থাকায় ওই মামলায় জামিন পান ঋতব্রত ও তাঁর স্ত্রী দুর্বা ব্যানার্জী সেন।
এদিন সকাল ১১ টা নাগাদ বালুরঘাট আদালতে হাজির হন রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত ব্যানার্জী। আগে থেকেই আদালত চত্তরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েম করা হয়েছিল। এদিন কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে হাজির করা হয় ঋতব্রত ব্যানার্জীকে। আগে থেকেই প্রচুর মানুষ ভীড় জমিয়েছিলেন আদালত চত্তরে। প্রসঙ্গত, এ বছরের ১০ অক্টোবর বালুরঘাট থানায় শহরের খাদিমপুর এলাকার বাসিন্দা নম্রতা দত্ত ঋতব্রতর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস ও ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। যদিও তার আগেই সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার নম্রতা দত্ত মেল করে ঋতব্রতর সঙ্গে তার ঘনিষ্ট মুহূর্তের ছবি ও তথ্য মেল করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী সহ পার্লামেন্টের এথিক্স কমিটিতে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এরপরেই নম্রতার শারীরিক পরীক্ষা করা হয় বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে। এমনকি ম্যাজিস্টেটের কাছে গোপন জবানবন্দীও দেন নম্রতা। রাজ্য সরকারের তরফে এই ঘটনার তদন্তভার সিআইডির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার তদন্তে নেমে সিআইডি একাধিকবার নম্রতার বাড়িতে এসে তদন্ত করেন। সে সময়ে নম্রতা তার কাছে থাকা যাবতীয় তথ্য সিআইডি র হাতে তুলে দেন। এরপরেই ঋতব্রত আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। গত ৩ নভেম্বর মামলার শুনানীতে হাজির ছিলেন ঋতব্রতর আইনজীবি অনির্বান গুহ ঠাকুরতা। সে সময় ৫ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে ৩ সপ্তাহের জন্য জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক। ৩ সপ্তাহের মধ্যে ঋতব্রতকে সরাসরি হাজির হয়ে আদালতে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এদিন ঋতব্রতকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল।
অন্যদিকে নম্রতাকে হুমকি দেওয়া, তথ্য না দেওয়ার নম্রতা যে পৃথক মামলা দায়ের করেছিলেন ঋতব্রত সহ দুর্বা সেন, অর্চনা মজুমদার ও মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে, সেই মামলার শুনানীর দিন ছিল এ মাসের ১৭ তারিখে। কিন্তু সেদিন সিআইডির তরফে পর্যাপ্ত তথ্য দিতে না পারায় ও ফের বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই মামলাও শুনানী ছিল। এদিনও সেই মামলার নথি অসম্পূর্ণ থাকায় ঋতব্রত ও দুর্বা ব্যানার্জির জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক। ঋতব্রতর আইনজীবি অনির্বান গুহ ঠাকুরতা জানান, ‘‌ধর্ষণের মামলায় ২১ দিনের মধ্যে ঋতব্রতকে হাজির হবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছিল আদালতের তরফে। সমস্ত শর্ত মেনে এদিন হাজির হলে পূর্ব শত মতোই ফের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক। দ্বিতীয় মামলাটি অসম্পূর্ণ থাকায় এদিন সেই মামলাতেও দুজনের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক। বালুরঘাট মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্টেট আদালতের সরকারী আইনজীবি জয়ন্ত মজুমদার জানান, আদালতের নির্দেশমতো সঠিক সময়ে যাবতীয় নিয়ম মেনে হাজির হওয়ায় এদিন জামিন দেওয়া হয়েছে তাঁকে।