নিজস্ব প্রতিনিধি, উদয়পুর, আগরতলা, ১১ অক্টোবর৷৷ ভোটার তালিকা সংশোধন ঘিরে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সিপিএম ও বিজেপির মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধে৷ তাতে উভয় দলের এক ডজনেরও বেশী কর্মী সমর্থক গুরুতর ভাবে জখম হয়েছেন৷ প্রত্যেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ ঘটনা ঘটেছে রাজধানী আগরতলায় সদর মহকুমা শাসকের অফিসে এবং গোমতী জেলার কাকড়াবন থানার অধীন মির্জা তহশীল অফিসে৷ মির্জাতে সংঘর্ষের ঘটনাতো মারাত্মক আকার ধারণ করে৷ উভয় দলের পক্ষ থেকে কাকড়াবন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে৷ প্রচুর সংখ্যায় নিরাপত্তা কর্মী মির্জা সহ আশেপাশের বাজারগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছে৷ পার্টি অফিসগুলিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে৷
সংবাদে প্রকাশ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পূর্ব ঘোষিত সূচী অনুযায়ী বুধবার রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য শুনানীর প্রক্রিয় চলে৷ এই শুনানীতে অংশ গ্রহণ করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী সমর্থকরা৷ রাজ্যের অন্যান্য স্থানে মতো গোমতী জেলার মির্জা তহশীল অফিসে স্থানীয় তুলামুড়া এলাকার ভোটারদের জন্য শুনানীর প্রক্রিয়া শুরু হয় সকাল এগারটা নাগাদ৷
উভয় দলের তুলামুড়া এলাকার কর্মী সমর্থকরা তহশীল অফিসে উপস্থিত হন৷ সেখানে কয়েকজন ভোটারের নাম নিয়ে দুই দলের কর্মীদের মধ্যে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়৷ এনিয়ে সেখানে সিপিএম ও বিজেপির কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়৷ পরে মারধর করা হয়৷ মুহুর্তের মধ্যেই উত্তেজনা ছড়ায়৷ সেখানে সিপিএমের তিন জন আহত হয়েছেন৷ তাদেরকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ এই ঘটনা কোনও রকমে পুলিশ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে৷ বিজেপি কর্মীরা সেখান থেকে পাশের দলীয় কর্মী জিতেন মজুমদারের বাড়িতে আশ্রয় নেয় সিপিএম ক্যাডারদের ধাওয়ায়৷ এদিকে, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল৷ তারপর সিপিএমের চারজন ক্যাডার বাইক নিয়ে জিতেন মজুমদারের বাড়ির সামনে গিয়ে হম্বিতম্বি শুরু করে৷ তখন বাড়ি থেকে বেড় হয়ে বিজেপি কর্মীরা ঐ চার ক্যাডারকে রামধোলাই দিয়েছে৷ তারা হল অসিত দে, অজয় ত্রিপুরা, দেবজ্যোতি সেন সেন এবং চিত্ত মলসম৷ তাতে চারজনই গুরুতরভাবে ঘায়েল হয়েছেন৷ তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷ এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর সংখ্যায় বিজেপি ও সিপিএম কর্মীরা মির্জায় পৌঁছে৷ জিতেন মজুমদারের বাড়িতে হামলা চালাায় সিপিএম ক্যাডাররা৷ বিজেপির কর্মী সমর্থকদের উপর সশস্ত্র হামলা চালায়৷ তাতে আটজন বিজেপি কর্মী ঘায়েল হয়েছেন৷ তারা হলেন জিতেন মজুমদার, উত্তম ভৌমিক, দীপক দত্ত, স্বপন কর, বিপ্লব দত্ত, উত্তম কর, জগদীশ ভৌমিক, রাজকুমার জমাতিয়া এবং নারায়ণ দেবনাথ৷ তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷ স্থানীয় হাসপাতালে থেকে বারো জনকে টেপানিয়া জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷ সেখান থেকে কয়েকজনকে নাকি জি বি হাসপাতালেও রেফার করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে৷ এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে বিশাল সংখ্যায় পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী মির্জা ও আশেপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে৷ বিধায়ক প্রণজিৎ সিংহা রায় সহ বিজেপির নেতরা মির্জা সফর করেছেন৷ পাশাপাশি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলীয় কর্মীদের দেখে আসেন৷ পরে দুই দলের তরফ থেকেই কাকড়াবন থানায় দুটি মামলা করা হয়েছে৷
2017-10-12