রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত ১২৪ জন, সক্রিয় ৯০৪

আগরতলা, ২৭ এপ্রিল (হি. স.)৷৷ ত্রিপুরায় বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা৷ গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১২৪ জন৷ দ্বিতীয় ঢেউ-এ এখন পর্যন্ত সবর্োচ্চ৷ পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে গত বছরের থেকেও ভয়ানক পরিণতির দিকে এগিয়ে চলেছে৷ কারণ, এ-বছর অতিমারির প্রভাব অনেক আগেই ত্রিপুরায় আছড়ে পড়েছে৷ গত বছর এমন সময়ে করোনা-র প্রভাব তেমনভাবে ত্রিপুরায় দেখা দেয়নি৷ তবে, গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়েছেন৷ তাতে, সামান্য স্বস্তি মিলেছে৷ বর্তমানে ত্রিপুরায় করোনা আক্রান্ত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৯০৪৷


স্বাস্থ্য দফতরের মিডিয়া বুলেটিন অনুসারে, গত ২৪ ঘন্টায় আরটি-পিসিআর ৫১৪ এবং রেপিড এন্টিজেন-র মাধ্যমে ৪০৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে৷ তাতে, আরটি-পিসিআর ৯ জন এবং রেপিড এন্টিজেন-এ ১১৫ জনের দেহে করোনা-র সংক্রমণ মিলেছে৷ সব মিলিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় মোট ১২৪ জন নতুন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে৷
তবে, সামান্য স্বস্তির খবর-ও রয়েছে৷ গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ জন করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেয়েছে৷ তাতে, বর্তমানে করোনা আক্রান্ত সক্রিয় রোগী রয়েছেন ৯০৪ জন৷ প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত ৩৪৮৬২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন৷ তাদের মধ্যে ৩৩৫০৫ জন করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেয়ে সুস্থ হয়েছেন৷ বর্তমানে ত্রিপুরায় করোনা আক্রান্তের হার ৫.০১ শতাংশ৷ তেমনি, সুস্থতার হার ৯৬.২৬ শতাংশ৷ এদিকে মৃতের হার ১.১৩ শতাংশ৷


স্বাস্থ্য দফতর সুত্রে খবর, আবারও পশ্চিম জেলায় সংক্রমণ-এ শীর্ষে রয়েছে৷ নতুন করে পশ্চিম জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ৯৫ জন, দক্ষিন জেলায় ১০ জন, গোমতি জেলায় ২ জন, ধলাই জেলায় ২ জন, সিপাহীজলা জেলায় ২ জন, উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ৪ জন, উনোকোটি জেলায় ৭ জন এবং খোয়াই জেলায় ২ জন আক্রান্ত হয়েছেন৷

এদিকে, দ্বিতীয় ঢেউ-এ ত্রিপুরায় ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী-রা সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন৷ তবে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল, দ্বিতীয় ঢেউ-এ ১০ বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে৷ এমনকি ১০ থেকে ২০ বছর বয়সী-রাও করোনা আক্রান্তের তালিকায় ঠাই পেয়েছে৷ স্বাভাবিকভাবেই করোনা-র দ্বিতীয় ঢেউ কতটা ভয়ংকর সহজেই তা অনুমান করা যাচ্ছে৷


জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন-র ত্রিপুরায় মিশন অধিকর্তা ড় সিদ্ধার্থ শিব জেইসয়াল-র দেওয়া তথ্য অনুসারে ষাটোর্দ নাগরিক-রা তুলনামূলক করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত আছেন৷ তাঁর কথায়, টিকাকরণ-র প্রভাবে প্রবীণ নাগরিক-রা করোনা আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে তুলনামূলক রেহাই পেয়েছেন৷ কিন্ত, অল্প বয়সী-দের টিকাকরণ হয়নি, তাই তারা বেশি মাত্রায় করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন৷ এমনকি, বিভিন্ন কারণে ওই বয়সের নাগরিক-রা বাড়ির বাইরে যাচ্ছেন, অনেকের সাথে মেলামেশা করছেন৷ তাই, তারা দ্বিতীয় বেশি মাত্রায় আক্রান্ত হচ্ছেন, বলেন তিনি৷


তাঁর দাবি, সাম্প্রতিক ৬৬৫ জন করোনা আক্রান্তের ১০ বছরের কম বয়সের ১.৯৫ শতাংশ, ১০ থেকে ২০ বছর বয়সের ৫.৫৬ শতাংশ, ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের ২৭.৩৩ শতাংশ, ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সের ২৩.৪৬ শতাংশ, ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সের ১৪.৭৪ শতাংশ, ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সের ১৪.৫৯ শতাংশ, ৬০ থেকে ৭০ বছর বয়সের ৮.১২ শতাংশ এবং ৭০-৮০ বছর বয়সের নাগরিকদের ৩.৪৬ শতাংশ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন৷


তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সের নাগরিকদের ৫০.৭৯ শতাংশ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন৷ তেমনি, করোনা-র প্রথম ঢেউ-এ যারা সুরক্ষিত ছিলে, তারাও এবার আক্রান্ত হচ্ছে৷ ১০ বছর পর্যন্ত শিশুদের ১.৯৫ শতাংশ করোনা আক্রান্তের ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করা হচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *