করিমগঞ্জ (অসম), ১৪ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : এক রোমাঞ্চকর লো-স্কোরিং খেলায় ২ উইকেটের জয় নিয়ে দ্বিতীয় দল হিসাবে ফাইনাল খেলার ছাড়পত্র আদায় করে নিয়েছে ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাব। করিমগঞ্জে চলতি অসম প্রিমিয়ার ক্লাব কাপ চ্যাম্পিয়ানশিপের তৃতীয় সংস্করণে রবিবারের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে তাঁরা নেতাজি সুভাষ স্পোর্টস অ্যাকাডেমিকে হারিয়েছে।
ইউনাইটেডের জয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন দলীয় অধিনায়ক অরিন্দম চক্রবর্তী। তিনি ৬ ওভার বল করে ৩-টি মেডেন দিয়ে ১৪ রানে বিপক্ষের ৪-টি উইকেট তুলে নেন। সেই সুবাদে তিনি ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন।
করিমগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের খেলার মাঠে আজ সকালে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নেতাজি সুভাষ স্পোর্টস অ্যাকাডেমির অধিনায়ক ধ্রুবেন্দু কৃষ্ণ দাস। তাঁর এই সিদ্ধান্তই আজ দলের জন্য বুমেরাং হয়ে দাঁড়ায়। ওপেনিংয়ে খেলতে নেমে খোদ অধিনায়ক ৮ বলে ৫ রান করে প্রথম উইকেট হিসেবে প্যাভিলিয়ন যাত্রা শুরু করেন। দলীয় অধিনায়কের দেখানো পথ অনুসরণ করে ধারাবাহিক ভাবে একের পর এক ব্যাটসম্যান দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরার মিছিলে শামিল হন। নির্ধারিত ৪০ ওভারের মধ্যে মাত্র ১৯ ওভারই খেলতে সক্ষম হয় নেতাজি। ৮৮ রানের মধ্যেই সবকটি উইকেট হারিয়ে বসে নেতাজি। দলের মিডল অর্ডার ও লোয়ার অর্ডারের চারজন ব্যাটসম্যান কোনও রান না করেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন। দলের হয়ে একমাত্র রাজা রায় ৩০ বলে ২৮ রানের একটি ধৈর্যশীল মূল্যবান ইনিংস খেলেন। এছাড়া আহমদ শাকির ১৪, নয়ন ১২ এবং সুশান্ত দাস ও রাহুল দাস উভয়ে ১১ রান করেন। অতিরিক্ত থেকে নেতাজির খাতায় যোগ হয় ৬ রান।
ইউনাইটেডের অরিন্দম চক্রবর্তী ৬ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৩-টি মেডেন দিয়ে ১৪ রানে বিপক্ষের মূল্যবান চারটি উইকেট দখল করেন। মূলত অরিন্দমের বিধ্বংসী বোলিংই নেতাজির ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়। এর পর আর তাঁরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি। এছাড়া জন্মজয় দাস ৩ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ২-টি, চৌধুরী মুর্তজা আলম ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ২-টি এবং সৌনক চৌধুরী ৩ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ১-টি উইকেট দখল করেন।
জবাবি ব্যাটিঙে নেমে ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাবও ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনিং ব্যাটসম্যান সৌনক চৌধুরী ২ বল খেলে ০-রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। বোলার শিবপদ দাস একটি দুর্দান্ত ডেলিভারিতে তাঁর উইকেট ভেঙে দেন। এর পর নিয়মিত ব্যবধানে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে ইউনাইটেড। একসময় মনে হচ্ছিল নেতাজি জয় ছিনিয়ে নিতে পারে। তবে দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান অরিজিত দত্তের ৪৬ বলে ৩১ রান ও আমিনুর রশিদ চৌধুরীর ৩১ বলে ৩৪ রানের উপর ভর করে দিনের শেষে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়ে ইউনাইটেড।
মাত্র ৮৮ রানের ছোট টার্গেট চেস করতে গিয়ে রীতিমতো লড়াই করতে হয়েছে ইউনাইটেডকে। নেতাজির শিবপদ দাস ৩ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ৩-টি এবং মিথিশ পুরকায়স্থ ৭ ওভার ৩ বলে ৩৩ রান দিয়ে ৩-টি উইকেট দখল করেন। খেলা শেষে তাঁদের স্কোর দাঁড়ায় ৯১/৮। বোলিংয়ে নজরকাড়া প্রদর্শন করে দলের জয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করার জন্য ইউনাইটেডের অধিনায়ক অরিন্দম চক্রবর্তী ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাঠ ও স্টেডিয়াম বিভাগের সহকারী সচিব সঞ্জীব দাস। চলতি মাসের ১৭ তারিখ অর্থাৎ বুধবার ফাইনাল খেলায় মুখোমুখি হবে মাইজডিহি স্পোর্টস ক্লাব ও ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাব।