নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ জানুয়ারি৷৷ অদ্বৈত মল্ল বর্মণ দরিদ্র ও সমাজের পিছিয়েপড়া অংশের মানুষের অধিকারের জন্য তার লেখার মধ্য দিয়ে লড়াই করে গেছেন৷ রাজ্য সরকারও দরিদ্র ও সমাজের পিছিয়েপড়া অংশের মানুষের বিকাশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, কৃষি, মৎস্য চাষ, পশুপালন ও বনায়নের মাধ্যমে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে৷
আজ সোনামুড়া মহকুমার কেমতলিস্থিত অদ্বৈত মল্ল বর্মণ স্মৃতি দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তিনদিনব্যাপী রাজ্যভিত্তিক অদ্বৈত মল্ল বর্মণ জন্মজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন৷ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ রেবতী মোহন দাস৷ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. প্রহ্লাদ রায়৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিধায়ক সুুভাষ চন্দ্র দাস৷
তিনদিনব্যাপী অদ্বৈত মল্ল বর্মণ জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সবাইকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান৷ তিনি বলেন, আজ আগরতলার আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে লাইট হাউজ প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছে৷ এখানে গরিব ও মধ্যবিত্তদের জন্য ১,০০০টি গৃহ তৈরি হবে৷ প্রধানমন্ত্রী উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিকাশে যে দিশা নিয়ে কাজ করছেন তার সুুফল পাচ্ছে রাজ্য৷ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, আগামী ৩ বছরের মধ্যে ত্রিপুরা মৎস্য চাষে স্বয়ম্ভর হবে৷ বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মৎস্য চাষে সরকার উৎসাহিত করছে৷
সরকার মৎস্য চাষে অগ্রাধিকার দেওয়ায় অনেকেই মৎস্য চাষে এগিয়ে আসছেন৷ রাজ্যের শিক্ষিত বেকাররাও এখন স্বনির্ভর হয়ে উঠার জন্য এগিয়ে এসেছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বেকারদের স্বনির্ভর করতে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করার জন্য ব্যাঙ্কগুলির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে৷ তপশিলি জাতির ছাত্রছাত্রীদের স্টাইপেণ্ডের অর্থ বৃদ্ধি করা হয়েছে৷ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে জাতীয় সড়কের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করেছে৷ সাব্রুমে মৈত্রী সেতু চালু হলে ত্রিপুরা হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার৷ এতে ত্রিপুরা হয়ে উঠবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সীমিত ক্ষমতার মধ্যে রাজ্য সরকার রাজ্যের সামগ্রিক বিকাশে কাজ করছে৷
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিধানসভার অধ্যক্ষ রেবতী মোহন দাস অদ্বৈত মল্ল বর্মণের জীবনাদর্শ নিয়ে আলোচনা করেন৷ প্রধান বক্তা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. প্রহ্লাদ রায় অদ্বৈত মল্ল বর্মণের জীবন ও তার সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করেন৷ স্বাগত বক্তব্য রাখেন তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব সহদেব দাস৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিপাহীজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুুপ্রিয়া দাস দত্ত, বিধায়ক ডা. দিলীপ কুমার দাস, ত্রিপুরা ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান বাহারুল ইসলাম মজমদার, নলছড় পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান জওহরলাল ঘোষ, সিপাহীজলা জেলার জেলাশাসক বিশ্বশ্রী বি, পুলিশ সুুপার কৃষ্ণেন্দ চক্রবর্তী, তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা দ্মন্তোষ দাস, তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস প্রমুখ৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৯ জনকে অদ্বৈত মল্ল বর্মণ ম’তি পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়৷ মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণ তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন৷ অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসেবে আলোচনাচক্র, স্বাস্থ্য শিবির, বসে আঁকো প্রতিযোগিতা এবং সাংস্ক’তিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷