কলকাতা, ২৪ আগস্ট (হি.স.): পশ্চিমবঙ্গে ফিরে এসেছেন মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়। রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপির হয়ে ফের সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি। রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন নিয়ে আনন্দে উচ্ছ্বসিত দলের একাংশ। বর্তমানে রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তথাগত বাবু পুরনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তাঁর উপস্থিতিতে রাজ্য বিজেপি যে আরো শক্তিশালী হবে, তাতে কোন সন্দেহ নেই। দলকে তাত্ত্বিক এবং মনের দিক থেকে আরো শক্তিশালী করে তুলবেন তিনি। সামনের বিধানসভা নির্বাচনে দলের সাফল্যে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান নিশ্চই থাকবে।
রাজ্য বিজেপির অপর সহ-সভাপতি রীতেশ তিওয়ারি জানিয়েছেন, তথাগতবাবু দলের বর্ষীয়ান নেতা, রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি, সভাপতি মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বভার পালন করবার পর ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের রাজ্যপালের দায়িত্ব সাফল্যের সঙ্গে পালন করেছেন। ফলে প্রশাসনিক কাজকর্ম সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতা রয়েছে। দলের সকলকে তিনি জানেন এবং চেনেন। তার উপস্থিতিতে দল সমৃদ্ধ হবে।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রপৌত্র তথা রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সহ-সভাপতি চন্দ্রকুমার বসু জানিয়েছেন, ‘তথাগত রায় একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। ২০১৪ সালের নির্বাচনে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা আসন থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে যখন আমি প্রার্থী হই তখন তিনি যা আদেশ দিয়েছিলেন তা পালন করেছিলাম। তিনি অভিজ্ঞ, শিক্ষিত। দলকে উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাবেন। তাঁর সঙ্গে আমার নীতিগত মতপার্থক্য থাকলেও ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুবই ভালো। দলের মধ্যে তিনি পিতৃস্থানীয়। তাঁর উপস্থিতিতে দল সমৃদ্ধ হবে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের আদর্শ সম্পর্কে তিনি জানেন। কিন্তু তিনি যেই সময় রাজ্য বিজেপির সভাপতি ছিলেন সেখান থেকে বর্তমান বিজেপি অনেক পাল্টে গিয়েছে। সংগঠনের সিপিএম, তৃণমূল এবং কংগ্রেস থেকে আসা নতুন মুখ যুক্ত হয়েছে। ‘
প্রসঙ্গত রাজ্যপালের পদে থাকাকালীন বিজেপির আদর্শের স্বপক্ষে একাধিক বিষয়ে নিয়মিত টুইট করে গিয়েছিলেন তথাগত রায়। এমনকি বঙ্গীয় রাজনীতির হাল হকিকত সম্পর্কে রাজ্যপালের পদে বসেও যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ছিলেন তিনি। তাঁর পুনরায় রাজনীতিতে প্রবেশ সম্পর্কে বলতে গিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, রাজ্য বিজেপির সভাপতি থাকাকালীন কোনদিনই মাটিতে নেমে রাজনীতি করেননি তথাগত রায়।তিনি যেই সময়টা রাজ্যে দলের দায়িত্বে ছিলেন সেই সময় মাত্র পাঁচ শতাংশ ভোট পেত বিজেপি। তৎকালীন শাসকদল সিপিআইএম বিজেপিকে কোন রাজনৈতিক আক্রমণ করত না। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য বিজেপির সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন। শৌখিন মতাদর্শ ভিত্তিক রাজনীতি করতেন তথাগত বাবু। ফের সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদান করলে দলের অন্দরে জলঘোলা হতে পারে। তাঁর আলটপকা মন্তব্য অস্বস্তি বাড়বে বিজেপির।ফায়দা তুলতে পারে তৃণমূল। এমনকি দলের অন্দরে বিভ্রান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি তিনি যখন রাজ্য বিজেপির সভাপতি ছিলেন তখন আজকের মতন বিজেপির এত মন্ডল, জেলা কার্যালয় হয়নি। দলের ব্যাপ্তি আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গিয়েছে।