কোহিমা, ২৪ আগস্ট (হি.স.) : উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম পাহাড়ি রাজ্য নাগাল্যান্ডে ভগবান জিশুর পুনরাগমন ঘটেছে! এবার মহিলার রূপ ধারণ করে ভগবান জিশু ফিরে এসেছেন। এই খবরে ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে নাগাল্যান্ড সহ উত্তরপূর্বের পার্বত্য জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত মিজোরাম, মণিপুর ও মেঘালয়ে। ইদানীং নাগাল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে বিরচণ করে নিজেকে স্বয়ং ভগবান জিশু বলে দাবি করছেন চাইনিজ মূলের ওই মহিলা। এতে গোটা অঞ্চলের খ্রিষ্টান যাজকমহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও উদ্বিগ্নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সৰ্বাধিক খ্ৰিষ্ট ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত নাগাল্যান্ডে চিনের বাসিন্দা ইয়াং জিয়াংবিন নাম্নি এই মহিলা জিশু খ্ৰিষ্টের আবির্ভাবে উদ্বিগ্ন স্থানীয় যাজকরা যেনতেনপ্রকারেন স্বঘোষিত এই ঈশ্বরকে কী করে রাজ্য থেকে বিদায় দেওয়া যায় সে সম্পর্কে কৌশল রচনা করতে উঠে-পড়ে লেগেছেন। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই খ্রিষ্টান যাজকদের মধ্যে চলছে দৌঁড়ঝাপ, সভাসমিতি আলোচনাপর্ব প্রভৃতি। এ যেন নিজেদের স্থপতি ও অস্তিত্বকে ধরে রাখার প্রয়াস।
মহিলার রূপ ধারণ করে চিন থেকে আগত এই স্বঘোষিত ভগবান জিশুর আগমনের সত্যাসত্য মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। আকাশ-পাতাল পার্থক্যের মতো এই মহিলা জিশুর আবির্ভাব বৃত্তান্ত কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য, স্পর্শকাতর এই বিষয়টি দ্বন্দ্বে ফেলেছে সবাইকে।
আসলে ১৯৯৯ সালে চিনের একাংশ খ্ৰিষ্ট ধর্মাবলম্বী এই মতবাদে বিশ্বাস করেছিলেন যে, ক্ৰুশবিদ্ধ হওয়ার তিনদিন পরেই মহিলার রূপ ধারণ করে জিশুখ্ৰিষ্ট পুনরায় আবির্ভাব হয়েছিলেন। এই মতবাদে বিশ্বাসী খ্ৰিষ্টানরা গঠন করেছেন ইস্টার্ন লাইটনিং কাল্ট নামের এক সংগঠনও। এই সংগঠন চার্চ অব অলমাইটি গড নামেই প্রচলিত। সংগঠনের সদস্যরা খ্ৰিষ্টান নিউ টেস্টামেন্ট মেনে নিতে নারাজ। তাঁদের স্বতন্ত্র বাইবেলও আছে। জিশু খ্ৰিষ্টের মহিলার রূপ কল্পনা করেই এই সংগঠনের প্রচলিত বাইবেলের নাম হয়েছে দ্য ওয়াৰ্ল্ড এপিয়ার্স ইন দ্য ফ্লেস।
তবে চিনে নিষিদ্ধ এই সংগঠন এবার ঘাঁটি গেঁড়েছে নাগাল্যান্ডে। ইতিমধ্যে ফেসবুক পেজে মহিলা জিশুকে নিয়ে এই সংগঠনের নামে ব্যাপক প্ৰচার চালানো হচ্ছে। প্রকাশিত হয়েছে কিছুসংখ্যক বইও। যার ফলস্বরূপ কার্যত নিজেদের অস্তিত্ব খোয়ানোর চিন্তায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছে নাগাল্যান্ডের ব্যপটিস্ট কাউন্সিল। কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক রেভারেন্ড জেলহউ কিহোই এক চিঠির মাধ্যমে খ্ৰিষ্টানদের নামে ব্যভিচারকারী এই সংগঠন থেকে সতর্ক থাকতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে গোটা বিষয়টি একদিকে উৎসাহ, অন্যদিকে তীব্র উদ্বেগের বাতাবরণ তৈরি করেছে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী মানুষদের মধ্যে।

