গুয়াহাটি, ২৪ মে (হি.স.) : অসমে দ্রুত বাড়ছে কোভিড-১৯ পজিটিভের সংখ্যা। রাজ্যে আরও দুজনকে কোভিড-১৯ সংক্রমিত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এঁদের নিয়ে মারণ এই সংক্রমিতের সংখ্যা ৩৫২ জনে বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ (রবিবার) বিকেল ৫.৩০ মিনিটে দ্বিতীয় টুইট আপডেটে এই খবর জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
মন্ত্রী জানান, নতুন দুই আক্ৰান্ত গুয়াহাটিরে সরুসজাই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের আবাসিক। তাঁদের একজন নগাঁও এবং অন্যজন হোজাই জেলার বাসিন্দা। বৰ্তমানে রাজ্যের ২৮৮ জন করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত সক্রিয় রোগী চিকিৎসাধীন। তবে মোট আক্রান্তের মধ্যে ৫৭ জন আরোগ্য লাভ করলে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে এবং তিন বহিঃরাজ্যের বাসিন্দার শরীরেও কভিড-১৯ পজিটিভ ধরা পড়েছিল।
প্রসঙ্গত আজই সকালে আরও চারজনের রিপোর্ট পডিটিভ এসেছিল। আক্ৰান্তদের মধ্যে দুজন তেজপুর কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের আবাসিক। অন্য দুজন যোরহাটের। তারা চেন্নাই থেকে এসেছেন বলে ট্র্যাভেল হিস্টরি রয়েছে।
এদিকে মেডিক্যাল বুলিটিনে প্রাপ্ত জেলা ভিত্তিক করোনা-আক্রান্তের তালিকায় দেখা গেছে, কামরূপ মহানগর (গুয়াহাটি) জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৫২ জন। তাঁদের মধ্যে ৭ জন সুস্থ, তিনজনের মৃত্যু হয়েছে, সক্রিয় রোগী ১৪০ এবং দুজন অভিবাসী। কাছাড়ে মোট আক্রান্ত ২৯, সক্রিয় ১৯, সুস্থ ১০ জন। করিমগঞ্জে মোট আক্রান্ত ৫, দুজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও সক্রিয় ৩। হাইলাকান্দিতে আক্রান্ত ৫ জন, ১ জন মৃত্যু বরণ করেছেন এবং সক্রিয় রোগী ৪ জন। হোজাই জেলায় ১৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। এঁদের সকলেই চিকিৎসাধীন। নগাঁওয়ে ৭ জন আক্রান্ত। তাঁরাও চিকিৎসাধীন। গোলাঘাটে মোট আক্রান্ত ১৬, সক্রিয় ৭, সুস্থ ৯ জন। কামরূপ গ্রামীণ জেলায় মোট আক্রান্ত ১০, সক্রিয় ৯, সুস্থ ১ জন।
এভাবে গোয়ালপাড়ায় মোট আক্রান্ত ৭, সক্রিয় ৩, সুস্থ ৪ জন। মরিগাঁওয়ে মোট আক্রান্ত ১০, সুস্থ ৬ জন এবং সক্রিয় রোগী ৪ জন। যোরহাটে মোট আক্রান্ত ১০। তাঁদের মধ্যে সক্রিয় ৭, সুস্থ হয়েছেন ২ সুস্থ এবং একজন অভিবাসী। তিনি তাঁর রাজ্যে চলে গেছেন। ধুবড়িতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৮ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫ এবং সক্রিয় ৩ জন। নলবাড়িতে মোট আক্রান্ত ৮, সক্রিয় ৪, সুস্থ ৪ জন। বঙাইগাঁওয়ে মোট আক্রান্ত ৫ জনের সকলেই সুস্থ।
অন্যদিকে শোণিতপুর জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ ১৪-য় গিয়ে পৌঁছেছ। তাঁদের মধ্যে সবাই সক্রিয় রোগী। শিবসাগরে ৬ জনের সকলেই সক্রিয়। কোকরাঝাড়ে মোট আক্রান্ত ৭, সক্রিয় এই সাতজনই। দক্ষিণ শালমারা মানকাচর জেলায় একজন আক্রান্ত হয়েছিলেন। ইতিমধ্যে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। লখিমপুর জেলায়ও ৪ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। একজন সুস্থ হয়েছেন, বাকি ৩ জন সক্রিয়। বিশ্বনাথ জেলায়ও আক্রান্ত দুজন এখনও সক্রিয়।
নতুন সংযোজন হয়েছে চিরাং। চিরাঙে সক্রিয় রোগী ৬ জন। এছাড়া ডিমা হাসাওয়ে নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৭ জন। তাঁরাও সক্রিয়। তিনসুকিয়া জেলায় আক্রান্ত ৫-এর মধ্যে সকলেই সক্রিয় রোগী। বরপেটা জেলায় ৪ জনের চারজনই সক্রিয়। ওদালগুড়ির ২-এর মধ্যে সক্রিয় দুজনই। পশ্চিম কারবি আংলং জেলার দুজন আক্রান্ত হয়েছেন। ১ জন আক্রান্ত হয়েছেন দরং জেলায়। ডিব্রুগড় জেলায় ১ জন আক্রান্তের তথ্য পাওয়া গেছে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, রাজ্যে প্রথম গত ৩১ মার্চ করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। তিনি ছিলেন করিমগঞ্জ জেলার বদরপুর থানার হাসানপুর গ্রামের বাসিন্দা মুফতি জামাল উদ্দিন। জামাল ইতিমধ্যে করোনা-মুক্ত হয়ে বাড়ি চলে গেছেন। তার পর যথাক্রমে ৭ মে পর্যন্ত ৫০, ১৭ মে পর্যন্ত ১০০, ১৯ মে থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে, এদিন রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয় ১৫০, ২১ মে এক লাফে বেড়ে ২০০, ২২ মে ২৫০, ২৩ মে ৩০০ এবং আজ ২৪ মে এই খবর লেখা পর্যন্ত কোভিড-১৯ পজিটিভের মামলা ধরা পড়েছে ৩৫২টি। এই সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা।