নয়াদিল্লি, ২৪ মে (হি. স.) : ভারতীয় সেনার সাথে সংঘাত সহসা মেটানোর মেজাজে নেই চীন। ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে দু’দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত পাঁচ দফার বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে।ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নারওয়ানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) পরিদর্শন করেছেন।উত্তর লাদাখের গালভান নালা অঞ্চলে অস্থিরতা স্বাভাবিক করে তোলার জন্য ভারত ও চীনের ফিল্ড কমান্ডারদের মধ্যে এখনও আলোচনা চলছে। তবে বিরোধ মিটে গেছে বলে মনে হচ্ছে না। সীমান্তে চীনা সৈনিকদের মোতায়েনে বৃদ্ধি এবং শতাধিক তাঁবু স্থাপনের ফলে ইঙ্গিত মিলছে, এবার চীন ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে সংঘাত সহসা সমাপ্ত করার মেজাজে নেই।
পূর্ব লাদাখের নিয়ন্ত্রণ রেখায় চীন পাঁচ হাজারেরও বেশি সেনা মোতায়েন করেছে। অন্যদিকে, ভারতও সীমান্তে সেনা বাড়িয়েছে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘাতের অবসান ঘটাতে ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল নারওয়ান প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) পরিদর্শন করেছেন।দুই দেশের মধ্যে প্রতিদিন বৈঠক হচ্ছে। কিন্তু, বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলি চীন তৃণমূলস্তরে বাস্তবায়ন করছে না। ভারতের আধাসামরিক বাহিনীর মতোই চীনের সীমান্ত প্রতিরক্ষা রেজিমেন্টটি নিয়ন্ত্রন রেখা থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছিল। কিন্তু, গত কয়েক দিন ধরে রেজিমেন্টের প্রচুর সংখ্যক জওয়ান সীমান্তের আশেপাশে দেখা গেছে। দফাওয়ারি আলোচনার পরেও চীনা সেনাবাহিনী যেভাবে লাদাখের প্যাংগং তসো হ্রদ এবং গালভান উপত্যকার আশেপাশে তাদের সৈনিক বাড়িয়ে চলেছে, তাতে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে, এবার চীন ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে সংঘাত দ্রুত সমাপ্ত করতে প্রস্তুত নয়।
চীন বিশেষত গালভান উপত্যকায় সামরিক শক্তি বাড়িয়েছে। গত দুই সপ্তাহে প্রায় ১০০ টি তাঁবু তৈরি করেছে। এছাড়াও, বাঙ্কার নির্মাণের জন্য ভারী সরঞ্জাম এবং উপকরণগুলি সীমান্তের কাছাকাছি আনা হয়েছে। তা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা কঠিন মোকাবিলার মুখোমুখি হয়নি। অবশ্য গত মাসে এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ব লাদাখের অনেক এলাকায় চীনা সেনাবাহিনী-র অনুপ্রবেশ এবং উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে।লাদাখের প্যাংগং তসো হ্রদ এবং গালভান উপত্যকায় উত্তেজনা কমাতে ভারত ও চীন-র সেনাবাহিনীর মধ্যে চলতি সপ্তাহে কমপক্ষে পাঁচ দফা আলোচনা হয়েছে এবং তা সফল হতে পারেনি।
সূত্রের খবর, চীন যদিও এই অঞ্চলে ভারতের নির্মাণ কার্যক্রমের বিষয়ে আপত্তি জানাচ্ছে। তবুও উপগ্রহ পর্যবেক্ষণ এবং গোয়েন্দা রিপোর্টে দেখা গেছে যে শ্যোক নদীর উপনদী গালভান নদীর কাছে চীন ভারতীয় পয়েন্টে-র কাছে সেনা জওয়ান আনা-নেওয়া জন্য ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল আমান আনন্দ বলেন, চীন সীমান্তে কোনও ভারতীয় সেনাকে গৃহবন্দী করা হয়নি। আমরা স্পষ্টভাবে এই জাতীয় সংবাদ অস্বীকার করি। তাঁর দাবি, সংবাদমাধ্যমগুলি যখন চিন্তা না করে সংবাদ প্রকাশ করে তা কেবল জাতীয় স্বার্থকে আহত করে। আসলে, চীন সীমান্তে ভারতীয় সৈন্যদের আটক করার খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠছে, সেনাবাহিনী তা অস্বীকার করেছে।