গুয়াহাটি, ৫ মে (হি.স.) : গোটা দেশজুড়ে তৃতীয় পৰ্যায়ের লকডাউনের আজ দ্বিতীয় দিন। অসমের উন্নয়নের ভাবনায় রাজ্য সরকার তৃতীয় দফার লকডাউন কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিথিল করেছে। সরকারের নিৰ্দেশিকা মেনেই মহানগরে খোলা হয়েছে দোকানপাট, বাণিজ্যিক প্ৰতিষ্ঠান। জনদুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে রাস্তায় চালানো হয়েছে গাড়িঘোড়া।
কিন্তু গুয়াহাটিতে রাস্তাঘাট, বাজার, সৰ্বত্ৰ মঙ্গলবারের দৃশ্য দেখে সচেতন নাগরিকদের মনে হচ্চে, কোনও দিন মহামারি করোনা বলে কিছুই ঘটেনি। লকডাউনও হয়নি। মহানগরে পূর্ববৎ যান্ত্ৰিক জীবন শুরু হয়েছে, আবার আগের পরিবেশ ফিরে এসেছে। গতকাল সোমবার এবং আজকের পরিবেশ দেখে মনে করা হচ্ছে যেন মহানগরবাসীর মধ্যে মহামারি করোনার কোনও আতঙ্ক নেই। দোকানপাট, সবজি বাজারে মানুষের মধ্যে কোনও ধরনের সামাজিক ব্যবধান নেই। এক মিটার দূরত্ব দূরের কথা, গা ঘেঁষাঘেষি করে প্ৰয়োজনীয় জিনিসপত্ৰ কিনেছে ক্ৰেতারা। লকডাউনের মধ্যেই হাজার হাজার গাড়ি চলাফেরা করেছে আজ।
এদিকে, রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা সাধারণ মানুষকে বারবার সাবধান করে আসছেন, তাঁর কথায়, হাত দুটো সামলে রাখাই আসল কথা। তার পরও মহানগরের বাজারগুলিতে বিক্ৰেতারা কোনও ধরনের সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা না করে মুখে বিনা মাস্কে, হাতে গ্লাভস না পড়ে গ্ৰাহকদের মাছ, শাক-সবজি দিয়েছেন। একবার যদি কোনও ব্যবসায়ী নিজের অজান্তেই করোনা আক্ৰান্ত হয়ে থাকেন, সেই মারাত্মক ভাইরাস যদি তার হাত থেকে মাছ অথবা শাক-সবজির মাধ্যমে গ্ৰাহকদের শরীরে প্ৰবেশ করে তার পরবৰ্তী ভয়াবহতা যে কতটা ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে, সেই পরিস্থিতি সামলানো যে কতটা কঠিন হয়ে যাবে তার কোনও আঁচই করতে পারছেন না একাংশ মহানগরবাসী, অভিমত সচেতন নাগরিকদের।
উল্লেখ্য, লকডাউনের সময় দেশবাসীকে ঘরে থাকতে বারবার পরামৰ্শ দেওয়া হচ্ছে। একান্ত প্ৰয়োজন ছাড়া ঘর থেকে না বেরোনোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী থেকে অসমের মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এদিকে দেশে মহামারি করোনা সংক্ৰমণের সংখ্যা ক্ৰমশ বেড়েই চলেছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে করোনা আক্ৰান্তের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৪৩৩ জন। স্বাস্থ্যমন্ত্ৰকের বুলেটিনে একদিনেই করোনায় আক্ৰান্ত হয়ে ১৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩,৯০০ হয়েছে করোনা আক্ৰান্তের সংখ্যা। করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন প্ৰায় ১৩ হাজার মানুষ।
রাজ্য সরকার লকডাউনে কিছুটা শিথিলতা আনলেও সাধারণ মানুষকে নিজে থেকেই সচেতন হতে হবে। তবেই এই লড়াইয়ে জয় সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।