নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ এপ্রিল৷৷ করোনা মোকাবিলায় কীট এবং স্যানিটাইজার ক্রয়ে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনে আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী-কে চিঠি দিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন৷ আজ মুখ্যমন্ত্রী ওই অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন৷ নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য প্রশাসনের দুই পদস্থ আধিকারিক কিরেন গিত্তে এবং তনুশ্রী দেববর্মা-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ শুধু তাই নয়, তদন্ত প্রক্রিয়া প্রভাবিত না হয়, তার জন্য স্বাস্থ্য সচিব এবং জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ত্রিপুরার মিশন অধিকর্তা-কে সাময়িক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দপ্তরে টেস্টিং কিট এবং স্যানিটাইজার ক্রয়ে আধিকারীকদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানিয়েছেন প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন৷ লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ এমন সংস্থাকে বরাত দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার অনিয়ম হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে সুদীপবাবু অভিযোগ করেছেন৷ এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন৷
সুদীপ বর্মন মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে আর্থিক অনিয়ম নিয়ে বেশ কিছু তথ্য উল্লেখ করেছেন৷ চিঠি মোতাবেক জানা গিয়েছে, করোনা মোকাবিলায় স্যানিটাইজার এবং টেস্টিং কিট সরবরাহ করার জন্য যে সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেই সংস্থার ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ চলতি বছরের ৩১ মার্চ শেষ হয়ে গিয়েছে৷ তারপরও মায়াঙ্ক টেকনোক্রেসি নামক এই সংস্থাটি স্যানিটাইজার সহ অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করেছে৷
সুদীপ রায় বর্মন মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে আরও বলেছেন, স্বাস্থ্য দপ্তরের কিছু আধিকারীক কিছু ব্যবসায়ীর সাথে হাত মিলিয়েছে৷ আর্থিক লেনদেনের ভিত্তিতে অধিক মূল্যে সেনিটাইজার ক্রয় করছে ওইসব আধিকারীকরা৷ এছাড়াও আরও কিছু অনিয়মের কথা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করেছেন৷ যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব স্বাস্থ্য দপ্তরেরও দায়িত্বে রয়েছেন তাই তিনি যাতে এইসব বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়ে এই কঠিন পরিস্থিতিতে দুর্নীতিগ্রস্থ আধিকারীকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, এই দাবি করেছিলেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন৷
আজ সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ জানিয়েছেন, অতীতে কখনো অভিযোগের ইটা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি৷ স্বচ্ছ প্রশাসনের দৃষ্টান্ত স্থাপনে স্বাস্থ্য দফতরে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ওই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে দোষীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন৷ শুধু তাই নয়, নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে প্রশাসনের দুই পদস্থ আধিকারিক কিরেন গিত্তে এবং তনুশ্রী দেববর্মা-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ শিক্ষা মন্ত্রী আরও বলেন, তদন্তে কোন ভাবে প্রভাবিত না হয়, তাই স্বাস্থ্য সচিব ড় দেবাশীষ বসু এবং জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ত্রিপুরার মিশন অধিকর্তা অদিতি মজুমদার-কে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে৷ তাঁর কথায়, নতুন দায়িত্ব কে পাবেন তা এখনো স্থির হয়নি৷