রাজ্যে সরকারি ব্যয় হ্রাস করতে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত মন্ত্রিসভার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ এপ্রিল৷৷ রাজ্যে সরকারি ব্যয় হ্রাস করার জন্য বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ গতকাল অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্তগুলি গৃহীত হয়েছে৷ আজ শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ তার অফিস কক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই সংবাদ জানিয়েছেন৷ তিনি আরও জানান, কোভিড-১৯-কে ঘিরে কিছু কঠোর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সরকারি খরচ বা ব্যয় হ্রাস করার জন্য৷ এই ব্যবস্থা সমস্ত সরকারি দপ্তর, সরকার অধিকৃত সংস্থা, কো-অপারেটিভ সোসাইটি, শহর ও গ্রামীণ উভয়ই স্থানীয় সংস্থা এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলির উপর প্রযোজ্য হবে৷ এ ব্যাপারে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেগুলি হলো – সমস্ত দপ্তরের অফিস খরচ এবং অন্যান্য কন্টিনজেন্ট বাজেটের নূ্যনতম ১৫ শতাংশ সাশ্রয় করতে হবে৷ কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের অন্তর্গত যে সমস্ত কন্টিজেন্সি ফাণ্ড রয়েছে সেগুলির যথাযথ ব্যবহার করতে হবে যাতে রাজ্যের সরকারি ফাণ্ডের উপর নির্ভরশীল না হতে হয়৷ সমস্ত দপ্তরের নন-ট্যাক্স রেভিনিউ কালেকশনের উপর নূ্যনতম ১০ শতাংশ বৃদ্ধি দেখাতে হবে৷


সমস্ত অফিসগুলিতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ই-মেল ব্যবহার করতে হবে যাতে কাগজের ব্যবহার কমানো যায়৷ সমস্ত সরকারি দপ্তর, সরকার অধিকৃত সংস্থা, কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলি বিদ্যৎ বিল হাসের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে নূ্যনতম ১০ শতাংশ বিদ্যৎ বিল কমানো যায়৷ বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠান, মেলা বা প্রদর্শনী আয়োজন করতে গেলে মুখ্যমীর অনুমোদন নিতে হবে এবং যত কম খরচে করা যেতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে৷ সরকারি বাজেট থেকে টাকা খরচ করে কোনও প্রকারের জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না৷ যদি কোনও জায়গা পাবলিক ডোনেশন বা গিফট ডিড হিসেবে দান করা হবে তখন দপ্তর তার অনুমোদন দেবে৷ তহবিলের টাকা তখনই তোলা যাবে যখন খরচ অত্যন্ত প্রয়োজন হবে৷ সরকারি দপ্তরে টেলিফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় খরচ এড়াতে হবে এবং টেলিফোন বিলের খরচ ১০ শতাংশ কমাতে হবে৷ এক্ষেত্রে সচিব বা এর উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের ক্ষেত্রে টেলিফোন বিলের খরচ ৫০ শতাংশ, বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানদের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ এবং অন্যান্য আধিকারিকদের ক্ষেত্রে টেলিফোন বিলের খরচ ৩০ শতাংশ হাস করতে হবে৷


বিভিন্ন দপ্তরে জিনিস ক্রয় করার ক্ষেত্রে গভর্নমেন্ট ই-মার্কেটের উপর গুরুত্ব দিতে হবে৷ যদি কোনও জিনিস গভর্নমেন্ট ই-মার্কেটের আওতায় না থাকে তাহলে সরাসরি টেণ্ডারের মাধ্যমে ক্রয় করা যাবে৷ সরকারি দপ্তরের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে যে সুুদ আসবে তা রাজ্য সরকারের এক্স-চেকারে জমা দিতে হবে৷ সরকারি দপ্তরের আধিকারিকদের একাধিক গাড়ি দেওয়া হবে না৷ সরকারি দপ্তরের আধিকারিকদের অফিসে যদি এসি ব্যবহার করতে হয় সেক্ষেত্রে স্টেট ইকোনমি বোর্ডের অনুমোদন নিতে হবে৷ পাবলিক সেক্টর ইউনিট (পি এস ইউ)-গুলির যেগুলি লাভজনক তা সংশ্লিষ্ট দপ্তর নিয়মিত মূল্যায়ন করবে এবং লোকসানে চলছে এমন পি এস ইউ-গুলিকে ক্ষতির পরিমাণ হাস করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে৷ কোনও সরকারি দপ্তর আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে লোক নিয়োগ তখনই করতে পারবে যদি প্রয়োজনীয় পদগুলির নিয়োগ স্থগিত রাখা হয়ে থাকে৷ পঞ্চদশ অর্থকমিশন ত্রিপুরা সহ কয়েকটি রাজ্যের বেতন, পেনশন এবং সুুদের হারের মাথাপিছু ব্যয়ের ক্ষেত্রে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ সেইক্ষেত্রে রাজ্যগুলিকে এইসব ব্যয় কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে৷ এরজন্য স্টেট ইকোনমি বোর্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে যেখানে সম্ভব হয় ম্যানপাওয়ার সহ রিডেপ্লয়মেন্ট রেশনালাইজ পদ্ধতিতে করার জন্য৷ এন্টারটেইনমেন্ট চার্জ-এর সর্বোচ্চ সীমা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে৷ সরকারি দপ্তরের আধিকারিকদের অফিসে টিভি, ক্যাবল ইত্যাদি পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে স্টেট ইকোনমি বোর্ডের অনুমোদন লাগবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *