নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ এপ্রিল৷৷ রাজ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগীর সন্ধান মিলেছে৷ এরই মধ্যে রাজ্যের প্রধান রেফারেল হাসপাতাল জিবি-তে স্বাস্থ্য কর্মীরা সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য আজ বুধবার বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন৷ তাঁদেরকে মাস্ক দেওয়া হয়নি৷ এমন-কি, হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত জল এবং সাবানেরও ব্যবস্থা নেই৷ তাই তাঁরা বিষয়টি হাসপাতাল সুপারকে জানাতে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু হাসপাতাল সুপারের দেখা না পেয়ে তাঁরা প্রচণ্ড বিরক্তি প্রকাশ করেন৷ তাঁদের বক্তব্য, নিজের সুরক্ষার চিন্তা ছেড়ে রোগীর সেবা করা সম্ভব নয়৷ স্বাস্থ্য কর্মীদের দাবি, সমস্ত রোগীর সেবা করতে তাঁরা প্রস্তুত৷ কিন্ত সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করতে হবে, তবেই তাঁরা পরিষেবা দিতে সক্ষম হবেন৷
এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, রাজ্যে একাংশ করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও অসহযোগিতা করছেন৷ পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করুক সেই সুযোগ খঁুজছেন৷ তাদের সতর্ক করে তিনি বলেন, এই আচরণ বরদাস্ত করা হবে না৷ সাথে তিনি স্বাস্থ্য কর্মীদের অভিযোগ নিয়ে আগামীকালের মধ্যেই সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷
আজ জনৈক স্বাস্থ্য কর্মী বলেন, সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়া আমাদের কাজ করতে হচ্ছে৷ জিবি হাসপাতালে এখন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন৷ এই অবস্থায় সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়া কাজ করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ৷ তিনি বলেন, আমাদের মাস্ক দেওয়া হচ্ছে৷ একটি সার্জিক্যাল মাস্ক আমরা তিনদিন ধরে ব্যবহার করছি৷ অথচ ওই মাস্ক তিন ঘণ্টার বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়৷ তিনি বলেন, আমাদের স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে না৷ এমন-কি, হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত জল ও সাবানের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে না৷ অথচ, ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে নেওয়া সত্ত্বেও কোনও সমাধান হচ্ছে না৷
তাঁদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরে অভিযোগ জানাতে গেলে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে৷ দূরত্ব বজায় রাখা সত্ত্বেও অনেকেও অপমানজনক কথা বলছেন৷ জনৈক স্বাস্থ্য কর্মী বলেন, হাসপাতালের মাঝখানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে৷ এতে যাতায়াতের সময় ভয় নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে৷ ওই স্বাস্থ্য কর্মী বলেন, আমাদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত না হলে পরিষেবা চালু রাখা নিয়েও ভাবতে হবে৷ কারণ, সাফাই থেকে শুরু করে রোগীর শুশ্রূষা সমস্ত ব্যাপারে আমাদের পরিষেবা দিতে হচ্ছে৷ অথচ, সুরক্ষা সামগ্রীর কোনও ব্যবস্থা করা হচ্ছে না৷ তাঁর গুরুতর অভিযোগ, ত্রিপুরায় পিপিই কিটেরও ভীষণ অভাব৷ তবে, স্বাস্থ্য সচিব জানিয়েছেন, ত্রিপুরায় পর্যাপ্ত পিপিই কিট রয়েছে৷
তাঁদের বিক্ষোভে মনে হচ্ছে, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্য কর্মীদের সুরক্ষা সামগ্রী সঠিকভাবে প্রদান না করা হলে, আগামী দিনে রোগীর শুশ্রূষায় কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না৷ অবশ্য এমন বিক্ষোভ আজ প্রথম হয়েছে এমনটা নয়৷ গতকালও জিবি হাসপাতালে অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্বাস্থ্য কর্মীরা দাবি-দাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন৷ এদিন কৈলাসহরে জেলা হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলেন৷ ফলে, স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তার অভাব আগামীদিনে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় জটিলতা বাড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷