গুয়াহাটি, ৪ এপ্রিল (হি.স.) : কোভিড-১৯ নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে নিভৃতবাসে রয়েছেন এমন ১,৫২৯ জনের প্রয়োজনীয় স্যাম্পল পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১,৩০৮টি নমুনায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া না গেলেও ২৫ জনের শরীরে কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রমাণিত হয়েছে। তবে ১৯৬ জনের ফলাফল এখনও হাতে আসেনি। মোট পাঁচটি প্যাথল্যাবে কোভিড-১৯-এর টেস্ট করা হচ্ছে। শনিবার আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
মন্ত্রী ড. শর্মা জানান, দিল্লির মরকজ নিজামউদ্দিনে তবলিগ-ই জামাতে যোগদানকারী ৮১২ জন ব্যক্তির নমুনা এখন পর্যন্ত টেস্ট করা হয়েছে। ১৪ দিন পর আবার তাদের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হবে।
এদিকে গুয়াহাটি মহানগরের অভিজাত আবাসন স্প্যানিশ গার্ডেনকে ১৪ দিনের জন্য সিল করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। ১৫০টি ফ্যাটের এই আবাসনের জনৈক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত বলে চিহ্নিত করার পর সিল করা হয়েছে। তিনি জানান, আগামী ১৪ দিন স্প্যানিশ গাৰ্ডেনের কোনও আবাসিক বাইরে বের হতে পারবেন না এবং কেউ প্ৰবেশও করতে পারবেন না।
মন্ত্রী ড. শর্মা জানান, কোভিড-১৯-এ আক্ৰান্ত মণীষ তিবড়েওয়ালের সংস্পর্শে এসেছেন এমন ১১১ জনকে শানাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের অধিকাংশকে ইতিমধ্যে গুয়াহাটির কালাপাহাড়ে আইডিএসপি হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, জানান তিনি। কয়েকজনকে নিজেদের বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকতে বলা হয়েছে।
এক জিজ্ঞাসার জবাবে হিমন্তবিশ্ব জানান, মণীষ তিবড়েওয়ালের শরীরে দিল্লি থেকে করোনা ভাইরাস বাসা বাঁধেনি। ১ মাৰ্চ তিনি গুয়াহাটি এসেছেন। এখানে আসার পরও করোনার উপসর্গ ধরা পড়েনি। অন্য কারোর সংস্পর্শে আসার ফলে তিনি আক্রান্ত হতে পারেন বলে স্বাস্থ্য দফতরের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান মন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্ৰীর কাছে জানা গেছে, মহানগরীর প্ৰথম করোনা ভাইরাসে আক্ৰান্ত মণীশ তিবড়েওয়াল গত ২৮ ফেব্ৰুয়ারি দিল্লি গিয়েছিলেন। সেখানে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে বৃন্দাবনেও গিয়েছিলেন তিনি। পরবৰ্তীতে সুস্থ শরীরে ১ মাৰ্চ গুয়াহাটি ফিরে আসেন। তাঁর বাবার শরীরে কোভিড-১৯-এর লক্ষণ পাওয়া গেছে বলে যে খবর প্ৰকাশ হচ্ছে তা অস্বীকার করে জানান, মণীশ তিবড়েওয়ালের বাবা কাশি এবং হাঁপানি রোগী।
শুক্রবার করোনা-আক্ৰান্তদের নাম প্ৰকাশ করেছেন মন্ত্ৰী। জানান, করোনায় আক্ৰান্ত নলবাড়ির মফিজ উদ্দিনও গিয়েছিলেন নিজামউদ্দিনের মরকজে। এছাড়া মরিগাঁয়ের এক মহিলা জমিয়া খাতুনও আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। এর আগে তাঁর স্বামী করোনায় আক্ৰান্ত হয়েছিলেন। এছাড়া দক্ষিণ শালমারার ব্যক্তির নাম আশরফ আলি এবং উত্তর লখিমপুরের করোনা ভাইরাসে আক্ৰান্ত ব্যক্তিকে বাবুল আলি বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, অসমে ২৫ জনের মধ্যে ২৪ জনই দিল্লির মরকজ নিজামউদ্দিনের তবলিগ-ই জামাত-ফেরত। এখনও অনেক ব্যক্তি আত্মগোপন করে থাকায় খেদ ব্যক্ত করে তাঁদের স্বইচ্ছায় বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী ড. শর্মা।