নেতাজীর ইতিহাস দেশের স্বার্থান্বেষী মহলের ইশারায় ইচ্ছাকৃতভাবে চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে, কটাক্ষের সুর ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর

উদয়পুর(ত্রিপুরা), ২৩ জানুয়ারি (হি. স.) : নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মত ব্যক্তিত্বের ইতিহাস দেশের স্বার্থান্বেষী মহলের ইশারায় ইচ্ছাকৃতভাবে চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, যে ভারতের ভৌগোলিক সীমানা ইংরেজ বা মুঘলরা শাসন করেছে বলেই ঠিক হয়েছে, এমন একটি ধারণা তৈরি করার চেষ্টা হয়েছে দীর্ঘদিন। অথচ এর চাইতে বড় সীমারেখার ভারতবর্ষে, হর্ষবর্ধন এবং সম্রাট অশোক শাসন করেছেন। মহাভারতেও উল্লেখ রয়েছে অখণ্ড ভারতের কথা। অথচ তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের দৌলতে আজ মোঘলদের আর ইংরেজদের ইতিহাস পড়তে হচ্ছে। এটাই দুর্ভাগ্যের বিষয়, আক্ষেপ করে বলেন তিনি।মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সঠিক ইতিহাস ছাত্রছাত্রীদের সামনে তুলে ধরে তাদের গর্বিত ভারতীয় হিসাবে গড়ে তোলার আহবান রাখেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি তাঁর আহ্বান, নতুন ত্রিপুরার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করুন।

বৃহস্পতিবার উদয়পুরে নেতাজী সুভাষ মহাবিদ্যালয়ে নেতাজির পূর্ণাবয়ব মূর্তির আবরণ উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এভাবেই এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ট্র ত্রিপুরা গড়ার ডাক দিলেন তিনি।তাঁর দাবি, বর্তমান সরকারের সময়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাজ করার মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন ‘যে কোনো কাজই হোক, সেই কাজের প্রতি আবেগ থাকতে হবে| এদিন তিনি ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও দৃঢ় মানসিকতা তৈরি করে এগিয়ে যেতে পরামর্শ দেন। এ প্রসঙ্গে তিনি শচীন টেন্ডুলকারের বিষয় টেনে এনে বলেন, সাধারণ পরিবারের একটি ছেলে দৃঢ় মানসিকতাকে পুঁজি করেই সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছেছেন।

এই বিষয়ে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অটল বিহারি বাজপেয়ি, লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন।দেশে চিন্তাধারার পরিবর্তন এসেছে বলেও আজ তিনি উল্লেখ করেন। তাঁর বক্তব্য, জাত-পাত, পরিবারতন্ত্র, এসব থেকে দেশ, বর্তমান সরকারের গঠনমূলক চিন্তা ধারার ফলে বেরিয়ে এসেছে। এ-প্রসঙ্গে নাম না করে একটি পরিবার ও এসপিজি নিরাপত্তার বিষয়টিও টেনে আনেন তিনি। বলেন “এখন যোগ্যতাই আসল। কোনো মা চাইলেই কাউকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে দিতে পারেন না। এই রকম ঘটনা রয়েছে দেশে, কটাক্ষের সুরে বলেন তিনি।”নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে আরো বলেন, ভারতবর্ষ হলো এমন একটি দেশ যে কখনো কোনদিন কারো উপর প্রথম আক্রমন করেনি। যতক্ষণ না পর্যন্ত মা ভারতীর উপর কোন অশুভ শক্তি আঘাত হেনেছে। ‘রামায়ণের সময়েও এর উদাহরণ পাওয়া গেছে।’

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সুনির্দিষ্ট কর্মতৎপরতার কর্মততপরতার প্রভাব প্রতিবেশী রাষ্ট্রের উপরেও পড়েছে। তিনি বিদ্রুপ করে বলেন, পাকিস্তানের এখন আর কাশ্মীর নিয়ে চিন্তা নেই| বরং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে তাদের চিন্তা বেড়েছে । এখানেই ভারত সরকারের সাফল্য, দাবি করেন তিনি।এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগেই পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের অন্তর্ভুক্ত হবে বলেও দৃঢ় আশা প্রকাশ করেন তিনি।বৃহস্পতিবার প্রথমেই মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্থাপিত নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর পূর্ণাবয়ব মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব। এদিনের অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, বিপ্লব ঘোষ সহ অন্যান্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *