রাজ্যপালের ভাষণে ত্রিপুরাকে মডেল রাজ্য করার প্রত্যয়

আগরতলা, ১৭ জানুয়ারি (হি.স.) : ত্রিপুরাকে মডেল রাজ্য করার দৃঢ় প্রত্যয় আজ রাজ্যপালের ভাষণে ফুটে উঠেছে। তাঁর কথায়, নানা প্রচেষ্টায় ত্রিপুরা প্রকৃত অর্থেই মডেল রাজ্যে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ আমাদের শাসন ব্যবস্থার মূল মন্ত্র সব-কা সাথ, সব-কা বিকাশ, সব-কা বিশ্বাস। মূলত, রাজ্যপাল রমেশ বৈস আজ বিধানসভায় নতুন ত্রিপুরা গঠনের দিশা দেখিয়েছেন। সাথে তিনি সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫-ক ধারা বাতিল করে সংসদে জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন পাশের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত রাম জন্মভূমি সমস্যার সমাধানে সুপ্রিমকোর্টের ঐতিহাসিক রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।

প্রথা অনুযায়ী প্রতি ইংরেজি বছরের প্রথম বিধানসভা অধিবেশন রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে শুরু হয়। সে মোতাবেক রাজ্যপাল রমেশ বৈস শুক্রবার বিধানসভায় ভাষণ দিয়েছেন। এদিন তিনি বলেন, ত্রিপুরার আর্থিক ও পরিকাঠামোগত উন্নয়নের সুবিধার্থে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরকে ব্যবহার করে মাল পরিবহণ সংক্রান্ত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিজার তৈরি, সাব্রুম শহরে পানীয়জল সরবরাহের জন্য ফেণী নদী থেকে ভারত সরকার দ্বারা ১.৮২ কিউসেক জল তোলার মউ স্বাক্ষর করা, দু-দেশের উন্নয়নে অংশীদারিত্বের প্রকল্প যেমন বাংলাদেশ থেকে বেশি পরিমাণে এলপিজি আমদানি, প্রস্তাবিত সোনামুড়া-দাউদকান্দি জলপথকে প্রোটোকল রুট-এর স্বীকৃতি ইত্যাদি বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাজ্যপাল।

রাজ্যপাল বৈসের কথায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর গুচ্ছ প্রকল্প চালুর মধ্য দিয়ে বিভিন্ন কল্যাণমূলক পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আয়ুষ্মান ভারত, প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা, স্বচ্ছ ভারত মিশন, প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা, সৌভাগ্য যোজনা, দিনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামজ্যোতি যোজনা, স্কিল ইন্ডিয়া এবং দীনদয়াল উপাধ্যায় অন্ত্যোদয় যোজনায় সমগ্র দেশবাসী উপকৃত হচ্ছেন। তাই আরও নতুন উদ্যমে দেশের সেবা করার জন্য ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে দেশবাসী পুনরায় নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে মত দিয়েছেন।

তাঁর দাবি, ত্রিপুরা সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি ও কর্মসূচিগুলি অদম্য উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে বাস্তবায়নে বিরাট উদ্যোগ নিয়েছে। ত্রিপুরাবাসী ইতিমধ্যেই ওই উদ্যোগের সুফল পেতে শুরু করেছেন। যা তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের মানোন্নয়নে সাহায্য করেছে। তাঁর আরও দাবি, মানুষের আয় ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী এবং সমাজ তার আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছে।

রাজ্যপালের কথায়, বর্তমান সরকার যেদিন থেকে ত্রিপুরার মানুষের সেবার সুযোগ ও গণ-রায় পেয়েছে, সেদিন থেকেই সমস্ত অঙ্গীকার পূরণের জন্য সব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ত্রিপুরা সরকার একের পর এক বহু নতুন উদ্যোগ ও কর্মসূচি হাতে নিয়েছে এবং রাজ্যের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে। এদিন তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, রাজ্য সরকারের নানা পদক্ষেপে প্রকৃত অর্থেই মডেল রাজ্যে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ত্রিপুরা। সব-কা সাথ, সব-কা বিকাশ, সব-কা বিশ্বাস মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে আমাদের শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে। তাঁর দাবি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই ত্রিপুরা উন্নয়নের পথে দ্রুত এগিয়ে যাবে।

আজ তিনি বলেন, ত্রিপুরা সরকারের প্রতি মানুষের উচ্চাশা প্রবল। তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের শক্তিশালী নেতৃত্বে সরকার সাফল্য পাবে এবং বিরাট অংশের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণে সমর্থ হবে, দৃঢ়তার সাথে বলেন রাজ্যপাল। তিনি এদিন আশা প্রকাশ করে বলেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে, জনকল্যাণ নীতি নির্ধারণে এবং প্রকল্প তৈরিতে বিধানসভা অধিবেশনে গঠনমূলক আলোচনা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *