নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ জানুয়ারি৷৷ রাজ্যে অস্বাভাবিক মৃত্যু মিছিল চলছেই৷ পারিবারিক অশান্তি এবং জীবন যাপনে নানাহ সমস্যার কারণে মানসিক অবসাদে অস্বাভাবিক মৃত্যুর হার ক্রমশ বেড়ে চলেছে৷ রাজ্যে আজ পৃথক স্থানে দুইটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে৷ তাদের মৃত্যু অস্বাভাবিক বলে পুলিশ জানিয়েছে৷ এক ব্যক্তি ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেছেন৷ অন্য জনকে বাড়ির পাশেই রাস্তায় মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে৷ উভয় মৃত্যুর ঘটনায় পারিবারিক অশান্তি অন্যতম কারণ বলেই মনে করা হচ্ছে৷ আত্মহত্যা এবং অস্বাভাবিক মৃত্যুর হার যথেষ্ট চিন্তার বিষয় বলেও মনে করা অস্বাভাবিক হবে না৷
পুলিশ জানিয়েছে, আজ আগরতলায় গোর্খাবস্তি স্থিত পিএন কমপ্লেক্সে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ তিনি ফাঁসিতে আত্মঘাতি হয়েছেন৷ এনসিসি থানার পুলিশ জানিয়েছে, গোর্র্খবস্তি নতুন পল্লির বাসিন্দা বাবুল সাহা ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেছেন৷ পুলিশ বলেছে, পেশায় গাড়ি চালক বাবুল সাহা গতকাল রাতে গাড়িতে সিএনজি ভরার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন৷ এরপর আর তিনি বাড়ি ফেরেননি৷ আজ সকালে পিএম কমপ্লেক্সে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয় জনগণ পুলিশে খবর দিয়েছে৷ পুলিশ গিয়ে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জিবি হাসপাতালে পাঠিয়েছে৷
এদিকে তাঁর মৃত্যুতে শোকে বিহ্বল হয়েছে গোটা পরিবার৷ কেন তিনি আত্মহত্যা করলেন তার কারণ খঁুজে পাচ্ছেন না কেউই৷ তবে, স্থানীয় জনগণ মানসিক অবসাদ থেকে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে অনুমান করছে৷
অন্যদিকে, জিরানীয়ায় রাস্তার পাশে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে৷ মৃতের নাম সঞ্জিত দাস৷ তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা দাস জানিয়েছেন, জিরানীয়া ইটভাট্টার পাশে বাড়ির সামনেই রাস্তায় সঞ্জিতের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে৷ খবর পেয়ে তিনি ছঁুটে এসেছেন৷ তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি স্বামীর সাথে থাকছেন না৷ কারণ, প্রায়ই ঘরে অশান্তি লেগে থাকতো৷ অতিষ্ট হয়ে তিনি বাড়ি ছেড়ে আগরতলায় ভাড়া বাড়িতে থাকছেন৷ জিরানীয়াস্থিত বাড়িতে তার স্বামী একাই থাকতেন৷ আজ তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে৷ তাঁর স্বামীর মৃত্যুর কারণ তিনি বলতে পারছেন না৷ তবে জানিয়েছেন, কারোর সাথেই তাঁর স্বামীর শত্রুতা ছিল না৷ ফলে, সঞ্জিত দাসের মৃত্যু অস্বাভাবিক বলেই মনে করা হচ্ছে৷
প্রসঙ্গত, অস্বাভাবিক মৃত্যু ব্যধির রূপ নিয়েছে৷ সরকারি তথ্য অনুযায়ী, পুরুষদের আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি৷ ফলে, এ ধরনের মৃত্যু কারণ অনুসন্ধান করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে৷ মানসিক ব্যধি উপসমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়াও জরুরি হয়ে পড়েছে৷ কারণ, একটি মৃত্যু গোটা পরিবারের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে৷ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি মানসিক অবসাদে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন৷ কিছু দিন আগে ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে দুই সন্তানকে খুন করে স্বামী ও স্ত্রী আত্মঘাতি হয়েছিলেন৷ ফলে, মানসিক চাপ সহ্য করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় চর্চা এবং এর সমাধান খুবই জরুরি বলেও মনে করা হচ্ছে৷