নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ ডিসেম্বর৷৷ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে নেশামুক্ত এবং প্লাষ্টিকমুক্ত রাজ্য হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এন এস এস স্বেচ্ছাসেবকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ পাশাপাশি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জনগণকে বিশুদ্ধ পানীয় জল পান করার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতেও এন এস এস স্বেচ্ছাসেবীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷ আজ নজরুল কলাক্ষেত্রে পাঁচদিনব্যাপী উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এন এস এস উৎসবের উদ্বোধন করে এই আহ্বান জানান তিনি৷

উদ্বোধকের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি এন ই সি বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগামী ২০২২ সালের মধ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ড্রাগমুক্ত করার সংকল্প নিয়েছেন ৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৮টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও এই সংকল্প বাস্তবায়ণের লক্ষ্যে একযোগে কাজ শুরু করে দিয়েছেন৷ এই কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির এন এস এসের স্বেচ্ছাসেবকদেরও এগিয়ে আসতে অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতকে প্লাষ্টিকমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছেন ৷ এই লক্ষ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে প্লাষ্টিক বর্জন করার উপর সচেতনতা বাড়াতে এন এস এস স্বেচ্ছাসেবীদের সংকল্প নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এন এস এস সবসময় সেবামূলক মানসিকতা নিয়ে কাজ করে থাকে৷ দেশে বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুযর্োগ হলে এন এস এসের স্বেচ্ছাসেবকরা দুর্গতদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসে ৷ দেশের প্রতিটি মানুষের মধ্যেই এই ধরণের সেবামূলক মানসিকতা থাকা প্রয়োজন বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন ৷ তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব সমৃদ্ধ সংসৃকতি রয়েছে ৷ আমাদের রাজ্যেও ১৯টি জনজাতি গোষ্ঠির আলাদা আলাদা সংসৃকতি রয়েছে ৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সংসৃকতিকে আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে এন এস এস স্বেচ্ছাসেবীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য বলেন মুখ্যমন্ত্রী৷
তাঁর কথায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে অষ্টলক্ষী আখ্যা দিয়ে একসূত্রে গাঁথার উদ্যোগ নিয়েছেন ৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সার্বিক উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছেন ৷ প্রধানমন্ত্রীর এই স্বপ্ণকে বাস্তবায়ণের লক্ষ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে সমন্বয় রেখে কাজ করতে হবে ৷ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস দেশের ভবিষ্যত যুব সমাজকে নেশার আসক্তি থেকে মুক্ত করতে এনএসএস স্বেচ্ছাসেবকরা সংকল্পবদ্ধ হয়ে কাজ করবে ৷
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে ক্রীড়ামন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব বলেন, দেশ ও সমাজ গঠনে যুবক-যুবতীদের প্রকৃত নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এন এস এস উৎসব অন্যতম ভূমিকা নেবে ৷ কারণ এই উৎসব হল সংসৃকতি ও সৌভ্রাতত্বের মেলবন্ধন ৷ এই উৎসবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৮টি রাজ্যের সমৃদ্ধ সংসৃকতির আদান প্রদান ঘটবে ৷ তিনি আরও বলেন, ছাত্র যুবকদের ব্যক্তিত্বকে বিকশিত করার লক্ষেও এন এস এস নিরলসভাবে কাজ করে চলছে ৷ রাজ্যে প্রায় ৩২ হাজার এন এস এস স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন ৷ রাজ্যে রক্তের চাহিদা মেটাতেও এন এস এস রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে থাকে ৷ যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় ৷ আগামী দিনেও এন এস এস সমাজসেবামূলক কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে মন্ত্রী দেব আশা প্রকাশ করেন ৷
অনুষ্ঠানে এন এস এসের উত্তর পূর্বাঞ্চলের আঞ্চলিক অধিকর্তা দীপক কুমার বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় যুব উৎসব আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যুবক-যুবতীরা যাতে একে অপরের সংসৃকতি সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারে ৷ কারণ উত্তর-পুর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির নিজস্ব সমৃদ্ধ সংসৃকতি রয়েছে ৷ এবারের ৫ দিনব্যাপী এই উৎসবে যুবক-যুবতীদের ব্যক্তিত্ব বিকাশ, প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা, এইডস রোগ বিষয়ে সচেতনতা, রক্তদান শিবির, সাংসৃকতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি সংঘটিত হবে ৷ এন এস এস উৎসবে ৮টি রাজ্যের যুবক-যুবতী ও এন এস এসের প্রোগ্রাম অফিসার সহ মোট ৩০০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছে৷ এরমধ্যে ত্রিপুরার প্রতিনিধি রয়েছে ৬০ জন৷