নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ নভেম্বর৷৷ রাজ্যে নথিভুক্ত বেকারের সংখ্যা ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯৯৮ জন৷ আজ শ্রম দপ্তরের পর্যালোচনায় কর্মবিনিয়োগ পরিষেবা ও জনশক্তি পরিকল্পনা দপ্তরের অধিকর্তা বলিন দেববর্মা এই তথ্য দিয়েছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ওই সভায় বলেন, রাজ্যে শ্রমিকদের কল্যাণে যে সব প্রকল্প চালু রয়েছে তা শ্রমিকদের কাছে নির্দিষ্টর সময়ের মধ্যে পৌঁছে দিতে হবে৷
এদিন পর্যালোচনা সভায় শ্রম দপ্তরের সর্বশেষ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার বিস্তারিত উপস্থাপন করা হয়৷ পর্যালোচনা সভায় কর্মবিনিয়োগ পরিষেবা ও জনশক্তি পরিকল্পনা দপ্তরের অধিকর্তা বলিন দেববর্মা জানান ২টি জেলা এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জকে মডেল ক্যারিয়ার সেন্টারে রূপান্তর করা হয়েছে৷ আরও তিনটি জেলা এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জকে মডেল ক্যারিয়ার সেন্টারে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ তিনি বলেন, এ বছরের ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত ন্যাশনাল ক্যারিয়ার সার্ভিস পোর্টালে মোট নথিভূক্ত চাকরী প্রত্যাশীর সংখ্যা হচ্ছে ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯৯৮ জন৷ তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আগরতলা, উদয়পুর নিয়ে মোট তিনটি এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২টি জব ফেয়ার এবং ৩টি মিনি জবফেয়ার আয়োজন করা হয়েছে৷ এখন পর্যন্ত এই জব ফেয়ারগুলির মাধ্যমে রাজ্য এবং বহির্রাজ্যে মোট ৬৩১ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে৷
তিনি আরও বলেন, ২০১৯-২০ অর্থ বছরের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে মোট ৪৬টি ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং প্রোগ্রাম আয়োজিত হয়েছে৷ এর মধ্যে ৭ হাজার ৩০৬ জন ছাত্রছাত্রী অংশ নেয়৷ এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকার যেসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করছে বা ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা নিয়েছে সেসব ক্ষেত্রগুলি সম্পর্কে ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিদ্যার্থীদের অবহিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেন৷ এই ক্ষেত্রে তিনি স্নাতক বা স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং কর্মসূচিতে যুক্ত করার উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন৷ এছাড়াও রাজ্যে আগত পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে যানবাহন চালকদেরকে রাজ্যের পর্যটন সম্পর্কিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় সচেতনতা বাড়ানোর বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে সভায় মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন৷
সভায় শ্রম দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা এবং শ্রমিক কল্যাণে গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়৷ সভায় মুখ্যসচিব ইউ ভেঙ্কটেশ্বরলু, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব কুমার অলক, শ্রম দপ্তরের বিশেষ সচিব চৈতন্য মূর্তি, শ্রম দপ্তরের কমিশনার তাপস রায়, কর্ম বিনিয়োগ ও জনশক্তি পরিকল্পনা দপ্তরের অধিকর্তা বলিন দেববর্মা, প্ল্যানিং এণ্ড কো-অর্ডিনেশন দপ্তরের বিশেষ সচিব অপূর্ব রায় আলোচনায় অংশ নেন৷ বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব রাজ্যে শ্রমিকদের কল্যাণে যে সব প্রকল্প চালু রয়েছে তা শ্রমিকদের কাছে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পৌঁছে দিতে শ্রম দপ্তরকে নির্দেশ দেন৷
রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী শ্রমযোগী মানধন প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে রূপায়ণ করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের মিশন মুডে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন৷ এই ক্ষেত্রে দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণে বিশদ পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের শ্রমিকদের কল্যাণে গৃহীত যেসব উন্নয়নমূলক প্রকল্প কর্মসূচি রয়েছে সেইগুলি সম্পর্কে শ্রমিক সংগঠনগুলিকে অবহিত করা প্রয়োজন৷ শ্রম দপ্তরের আধিকারিকদের শ্রমিক সংগঠনগুলির বিভিন্ন সমস্যাবলী শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাদি গ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে৷ প্রয়োজনে তাদের সাথে নিয়মিত ব্যবধানে বৈঠক করার উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি৷ এর ফলে শ্রমিক সংগঠনগুলির মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন৷ শ্রম দপ্তরে রেজিস্ট্রেশন, লাইসেন্স ইত্যাদি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে যে অনলাইন পদ্ধতি চালু হয়েছে সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ক্ষেত্র পর্যায়ের আধিকারিকদেরকেও প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য শ্রম দপ্তরকে পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ফ্যাক্টরীজ এবং বয়লার্স অর্গানাইজেশনের পর্যালোচনা করে ছোট ছোট ফ্যাক্টরিগুলির তদারকি করার ক্ষেত্রে যে সংশোধন বা পরিবর্তন আনা হয়েছে সেইগুলির বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে শ্রম দপ্তরের বিশেষ সচিবকে নির্দেশ দেন৷ ছোট ছোট কারখানা রেজিস্ট্রেশন সহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে যে সরলীকরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কেও সচেতনতা বৃদ্ধির উপর মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন৷ সভায় ফ্যাক্টরিজ এবং বয়লার্স অর্গানাইজেশনের সর্বশেষ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা সভায় উপস্থাপন করেন ফ্যাক্টরীজ এবং বয়লার্স অর্গানাইজেশনের আধিকারিক৷