উৎসাহ উদ্দীপনায় জগদ্ধাত্রী পূজো হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ নভেম্বর৷৷ কথিত রয়েছে মহিষাসুর বধের পর দেবতারা আনন্দ উৎসবে মত্ত ছিলেন৷ দেবী দুর্গা অসুরকে বধ করেছেন ঠিকই, কিন্তু দেবী তো আসলে দেবতাদের সম্মিলিত শক্তিরই প্রকাশ৷ ফলে দেবতারা এমন একটা ভাব করছিলেন, যেন এই কৃতিত্ব তাঁদেরই৷ দেবতাদের এই মূর্খ আস্ফালন দেখে দেবী অলক্ষে থেকে একটা ঘাসের টুকরো ছুড়ে দেন তাঁদের দিকে৷


ইন্দ্র বজ্র নিয়ে এসেও সেই টুকরোকে নষ্ট করতে পারলেন না৷ বায়ু পারলেন না ওড়াতে৷ অগ্ণি পারলেন না পোড়াতে৷ বরুণদেবও পারলেন না ভাসিয়ে দিতে৷ দেবতাদের এই দুরবস্থা দেখে শেষে তাঁদের সামনে আবির্ভূতা হলেন পরমাসুন্দরী চতুর্ভুজা মূর্তি৷ তিনিই জগদ্ধাত্রী৷ দেবতারা ফের একবার বুঝলেন, এই দেবীই এই জগতের ধারিণী শক্তি৷ অন্য একটি মতে, যুদ্ধের সময় মহিষাসুর নানা রূপ ধরে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিল দেবীকে৷ সেই করতে করতে যেই অসুর হাতির রূপ ধরেছে, দেবী তখন ধারণ করলেন এক চতুর্ভুজা মূর্তির রূপ৷ চক্র দিয়ে তিনি উড়িয়ে দিলেন হাতির শুঁড়৷ দেবীর ওই রূপটিই জগদ্ধাত্রীর৷ জগদ্ধাত্রীর মূর্তি সঙ্গে মহিষাসুর নেই৷ দেবী উপবিষ্টা৷ লক্ষ্মী-সরস্বতী, কার্তিক-গণেশ নেই৷ জয়া-বিজয়া আছে৷


পুজোর রীতিও দুর্গাপুজোর মতোই৷ তবে বোধন হয় না৷ নবমী তিথিতে একই দিনে দুর্গাপুজোর রীতি মেনেই সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী পুজো অনুষ্ঠিত হয়৷ দেবীর বাহন সিংহের পায়ের কাছে হস্তিমুণ্ড থাকে৷ সংসৃকতে হাতির নাম করী, তাই সেই অসুর, যাকে দেবী বধ করেছিলেন, তার নাম করীন্দ্রা সুর৷ গোটা রাজ্যের সঙ্গে রাজধানীর প্যালেস কম্পাউন্ড স্থিত শ্রী শ্রী আনন্দময়ী সংঘে হয় জগদ্ধাত্রী পূজা৷ মঙ্গলবার ছিল মহানবমী পূজা৷ কাতর্িক মাসের শুক্ল পক্ষে এই পুজোর আয়োজন৷

সমস্ত জগৎ যিনি ধারন করে আছেন তারই নাম জগদ্ধাত্রী৷ দেবলোক, মর্ত লোকে মায়ের অবস্থান৷ তাই এই মায়ের পুজো আরাধনায় সকলে ব্রতী হয়েছে৷ সমস্ত শক্তির উৎস মায়ের আরাধনার মধ্য দিয়েই মানব জগৎ এর কল্যাণ সাধিত হয়৷ চন্দন নগরে এই পুজো হয় তিন দিন৷ কিন্তু এই অঞ্চলে এই পুজো হয় এক সাথে তিন বার৷ এই পুজোর পৌরাণিক ইতিহাস সম্পর্কে জানান শ্রী শ্রী আনন্দময়ী আশ্রমের পুরোহিত৷ রাজ্যের অন্যান্য স্থানেও ভক্তি ভড়ে চলছে জগদ্ধাত্রী পূজা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *