ভ্রাতৃদ্বিতীয়া, ভাই-বোনের ভালবাসার বন্ধন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ অক্টোবর৷৷ ভাইফেঁটা হিন্দুদের একটি চিরন্তন সম্প্রীতির উৎসব৷ এই উৎসবের নাম ’’ভ্রাতৃদ্বিতীয়া’’৷ ভাই-বোনের ভালবাসার বন্ধন অনন্তকাল অটুট রাখার জন্য বংশপরম্পরায় এই বিশেষ উৎসব পালিত হয়৷


ভাই-বোনের নিঃস্বার্থ ও স্বর্গীয় ভালবাসার প্রতীক এই ভাইফেঁটা আমাদের মনে শান্তি, সৌভাতৃত্ববোধ এবং ঐক্যের এক চমকপ্রদ আবেশ সৃষ্টি করে৷ কার্তিক মাসের শুক্লা পক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে ভাই ফেঁটা হয়ে থাকে৷ দেশের বহু অঞ্চলে এই উৎসব ভাইদুজ নামেও পরিচিত৷ হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় দিন উদযাপিত হয় ভাইফেঁটা৷


তিথি অনুযায়ী কখনও এটি শুক্লপক্ষের প্রথম দিনেও উদযাপিত হয়ে থাকে৷ পশ্চিম ভারতে এই উৎসব ‘ভাই দুজ’ নামেও পরিচিত৷ মূলত পাঁচদিন ব্যাপী দীপাবলি উৎসবের শেষদিন ভ্রাতৃদ্বিতীয়া৷ এই উৎসবের আরও একটি নাম ‘যমদ্বিতীয়া’৷ মহারাষ্ট্রে মেয়েদের ভাইবিজ পালন অবশ্যকর্তব্য৷ এমনকি, যেসব মেয়েদের ভাই নেই, তাঁদেরও চন্দ্র দেবতাকে ভাই মনে করে ভাইবিজ পালন করতে হয়৷ কথিত আছে নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তাঁর বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তাঁর কপালে ফেঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন৷ সেই থেকে ভাইফেঁটা উৎসবের প্রচলন হয়৷


অপর একটি সূত্রে জানা যায় যে একদা প্রবল পরাক্রমশালী বলির হাতে বিষ্ণু পাতালে বন্দি হন৷ শেষ পর্যন্ত এগিয়ে এলেন স্বয়ং লক্ষ্মী৷ তিনি বলিকে ভাই হিসেবে স্বীকার করেন৷ সেই উপলক্ষে তাঁর কপালে তিলক এঁকে দেন৷ ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তখন স্বীকার করে বলি লক্ষ্মীকে উপহার দিতে চাইলে লক্ষ্মী ভগবান বিষ্ণুকে চেয়ে নেন৷ সেই থেকেই ভাইফেঁটা উৎসবের সূচনা৷ এদিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মীয় রীতি মেনে চলে ভাই ফেঁটার পর্ব৷ ভাইয়ের মঙ্গল ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বোনেরা ভাই ফেঁটা দেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *