![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/08/HS-5-1024x613.jpg)
নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/বিলোনীয়া, ২৭ আগস্ট৷৷ সাব্রুম পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা চালু হওয়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে হচ্ছে৷ কারণ, বিলোনিয়া-সাব্রুম লাইনে সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ সেরে আগরতলায় ফিরে রেল লাইন নির্মাণ কাজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন সিসিআরএস শৈলেশ কুমার পাঠক৷ তাঁর দাবি, অন্তত ১০০ কি.মি. প্রতি ঘণ্টা বেগে যাত্রীবাহী ট্রেন ওই লাইনে ছুটতে পারবে৷ ফলে, দুগর্োৎসবের আগেই সাব্রুমও ভারতের রেল মানচিত্রের সাথে জুড়তে চলেছে, তা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে৷
এদিকে, রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের লেভেলক্রসিং বিহীন রেল লাইনের স্বপ্ণ সফল হতে দেখছেন বলে জানিয়েছেন সিসিআরএস৷ কারণ, সাব্রুম পর্যন্ত ১০০ কি.মি. লাইনে কোনও লেভেলক্রসিং নেই৷ উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের এই কাজেরও প্রশংসা করেছেন তিনি৷
আজ সাংবাদিক সম্মেলনে সিসিআরএস শৈলেশ কুমার পাঠক বলেন, বিলোনিয়া-সাব্রুম লাইনে সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে৷ তাতে, রেল লাইনের নির্মাণকাজ প্রায় ত্রুটিহীন বলেই তাঁর মনে হয়েছে৷ তিনি জানান, আজ সাব্রুম থেকে ফেরার পথে ১২০ কি.মি. প্রতি ঘণ্টা বেগে ট্রেন চালানো হয়েছে৷ এতে ৩৮ কি.মি. পথ মাত্র ২২ মিনিটে তিনি অতিক্রম করেছেন৷ তিনি জানান, সাব্রুম-বিলোনিয়া লাইনে আজ ১১৪ কি.মি. প্রতিঘণ্টা বেগে ট্রেন চালানো হয়েছে৷ তাতে, মাত্র দুটি পিক পাওয়া গেছে৷ যা গাইডলাইন মোতাবেক খুবই নগণ্য৷ তাঁর দাবি, সাব্রুম থেকে আগরতলা দেড় ঘণ্টায় পৌঁছানো সম্ভব৷
এদিন তিনি জোর গলায় বলেন, সাব্রুম লাইনে এখনই সবুজ সংকেত দিচ্ছি৷ কারণ, যাত্রী ট্রেন ওই লাইনে ১০০ কি.মি. প্রতি ঘণ্টা বেগে চালানো যাবে৷ তিনি জানান, রেল বোর্ডকে রিপোর্ট জমা দেবেন৷ যাত্রী ট্রেন পরিষেবা সূচনা রেল বোর্ডই চূড়ান্ত করবে৷
এদিকে, ওই লাইনে ১০০ কি.মি. পথে কোনও লেভেলক্রসিং নেই, তার উচ্ছ্বসিত প্রসংশা করলেন সিসিআরএস৷ তাঁর কথায়, রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল স্বপ্ণ দেখছেন আগামী পাঁচ বছরে সারা দেশে লেভেলক্রসিং বিহীন রেলপথ হোক৷ সে-ক্ষেত্রে ত্রিপুরায় দারুণ কাজ হয়েছে৷ সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একমাত্র ত্রিপুরায় লেভেলক্রসিং বিহীন রেলপথ নির্মাণ হয়েছে৷ এই সাফল্য নিঃসন্দেহে প্রশংসর যোগ্য বলে তিনি দৃঢ়তার সাথে জানিয়েছেন৷
প্রসঙ্গত, আজ বিলোনিয়া-সাব্রুম লাইনে দ্বিতীয় দফায় সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে৷ সিসিআরএস শৈলেশ কুমার পাঠক মঙ্গলবার সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ করেছেন৷ সুরক্ষা পর্যবেক্ষণের আগে ১০ বগির একটি ট্রেন ১২০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে বিলোনিয়া-সাব্রুম লাইনে চালানো হয়েছে৷ সকালে বিশেষ ট্রেনে আগরতলা থেকে সপার্ষদ বিলোনিয়া পৌঁছেন সিসিআরএস শৈলেশ কুমার পাঠক৷ সেখানে পুজো দিয়ে সাব্রুম লাইনে সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ শুরু করেন তিনি৷ তাঁর সাথে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে এবং পূর্ব রেলওয়ের আধিকারিকরা সুরক্ষা পর্যবেক্ষণে সঙ্গ দিয়েছেন৷
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রথমে বিলোনিয়া জুলাইবাড়ি পর্যন্ত রেল লাইন পর্যবেক্ষণ করেন সিসিআরএস৷ রেল লাইনের পাশাপাশি জুলাইবাড়ি স্টেশনও পরিদর্শন করেছেন তিনি৷ তারপর পর্যায়ক্রমে জোলাইবাড়ি থেকে মনুবাজার এবং মনুবাজার থেকে সাব্রুম পর্যন্ত রেল লাইন পর্যবেক্ষণ করেন শৈলেশ পাঠক৷ সাথে স্টেশনগুলিও পরিদর্শন করেছেন তিনি৷
এদিকে, সাব্রুম স্টেশনে সিসিআরএস এবং রেলওয়ের অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকদের অভ্যর্থনা জানান স্থানীয় বিধায়ক শংকর রায়৷ শৈলেশ কুমার পাঠক সাব্রুম স্টেশনে বৃক্ষরোপণও করেছেন৷ আজ তিনি উদয়পুরে মা ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরে পূজা দিয়ে আগরতলায় ফিরেছেন৷ তিনি জানিয়েছেন, আজ রাতেই তিনি গুয়াহাটির উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন৷
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই বিলোনিয়া-সাব্রুম লাইনে সুরক্ষা পর্যক্ষেণ হয়েছিল৷ সিআরএস রেল লাইনের সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ করেছিলেন৷ কিন্তু, ওই রেল লাইন সুরক্ষা পর্যবেক্ষণে ১০০ শতাংশ উত্তীর্ণ হতে পারেনি ৷ ফলে, স্থির হয় পুনরায় ওই লাইনে সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ করা হবে৷ দ্বিতীয় দফায় সিসিআরএস সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ করবেন বলেও চূড়ান্ত হয়৷ সে-মোতাবেক আজ সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে৷ ধারণা করা হচ্ছে, এ যাত্রায় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের নির্মাণ শাখা৷